নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি নারায়ণগঞ্জের ভোটার হতেন তাহলে তাঁর কাছে ভোট চাইতেন এবং তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস তিনিও (প্রধানমন্ত্রী) তাকে ভোট দিতেন বলে বিশ্বাস করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। ৮ই জানুয়ারি দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে নির্বাচনী প্রচারণার সময় সাংবাদিক বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। সবার কাছে আমি ভোট চাইছি। ওসমান পরিবার বংশ পরম্পরায় তিন স্তরে সাংসদ হয়ে আসছে। আমি তাদের কাছে সমর্থন চাইতেই পারি।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যদি নারায়ণগঞ্জের ভোটার হতেন তাহলে আমি তাঁর কাছে ভোট চাইতাম এবং আমার দৃঢ় বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও আমাকে ভোট দিতেন।
তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, তাকে (আইভী) নাকি কেউ সাপোর্ট দেয় না, এখানে আমি কী করবো ? তাদের এমপি, দলের নেতাকর্মীরা যদি তাকে সাপোর্ট না দেয় তাতে আমার করার কিছু নেই। সিটি করপোরেশনে অতিরিক্ত তিন চারগুণ ট্যাক্স দিতে গিয়ে তো তারাও ভুক্তভোগী।
তিনি আরও বলেন, আমি জনগণের প্রার্থী। জনগণের চাহিদার কারণেই আমাকে প্রার্থী হতে হয়েছে। পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জ গত ১৮ বছর ধরে এক ব্যক্তির হাতে। এতে ঠিকাদারদের সিন্ডিকেট শক্ত হয়েছে কিন্তু নগরবাসীর সেবা বৃদ্ধি পায়নি। ফলে নগরবাসী এখন ঐক্যবদ্ধ। এখানে একেকজন একেক দল করে। কিন্তু ডান বাম সবাই আমার পাশে।
তৈমূর বলেন, নারায়ণগঞ্জের নাগরিকদের জিম্মাদারি কার কাছে হেফাজতে থাকবে এটা দেখার দায়িত্বও তাদের। সে হিসেবে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। আমি বিএনপি কী বিএনপি না এটা নারায়ণগঞ্জের বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞেস করেন। আমাকে বিএনপি বহিষ্কার করেনি। তারা আমাকে সুযোগ করে দিয়েছে সব দলের সমর্থন যেন আমি পাই।
এর আগে ৭ই জানুিয়ারি শুক্রবার তৈমূর আলম খন্দকার আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের লিখিত অভিযোগ করেন। সেই রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তৈমূরের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এ টি এম কামাল আটটি পয়েন্টে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এ টি এম কামাল নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তৈমূর প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেয় বিএনপি।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আইভীর নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডেই সারা দিন মাইকিং করা হচ্ছে। অথচ বেলা ২টার পর থেকে মাইকিং করার বিধান রয়েছে। স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারের হাতি প্রতীকের পোস্টার আইভীর নৌকা প্রতীকের পক্ষের লোকজন ছিঁড়ে ফেলছে। লক্ষ্মী-নারায়ণ আখড়া, বন্দর খেয়াঘাট, নিতাইগঞ্জসহ প্রায় ২০টি স্থানে রাস্তার ওপর নৌকা প্রতীকের বড় বড় তোরণ আলোকসজ্জাসহ নির্মাণ করা হচ্ছে। পাইকপাড়া শাহ সুজা রোডে নৌকা প্রতীকের তিনটি ক্যাম্প নির্মাণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিয়মবহির্ভূত মাপে নৌকার ফেস্টুন তৈরি করে শহরের বিভিন্ন স্থানে লাগানো হয়েছে। আইভী মেয়র না হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ প্রটোকলে বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। ৭ই জানুয়ারি নবীগঞ্জের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাবিলের মোড়ে জনসভা করার জন্য বড় করে স্টেজ নির্মাণ করেছেন এবং সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের নির্বাচনী প্রচার কাজে লাগাচ্ছেন, যা আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।