নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব সংবাদ দাতা ) : পৃথক দুই মামলায় মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি, করোনা হিরো ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) এর ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এবং ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
১৫ জুন বুধবার জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমানের আদালতে বন্দর থানার একটি মামলায় আবুল কাউসার আশাকে কারাগারে পাঠান। অপরদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে আরেকটি মামলায় খোরশেদকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। তারা দুইজনই দুটি পৃথক মামলায় আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, দুই জন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
কারাগারে নেওয়ার সময় কাউন্সিলর খোরশেদ জানান, এসব মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাগারে নিয়ে রাজপথের আন্দোলন থেকে আমাকে দূরে রাখা যাবে না। দ্রুতই আপনাদের মাঝে ফিরে আসবো। আবার দেখা হবে রাজপথে।
এছাড়া এসময় কাউন্সিলর আশা জানান, পুরোটাই ষড়যন্ত্র। আমাকে জড়ানো হয়েছে রাজনৈতিক কার্যক্রম ও নাগরিক সেবা থেকে দূরে রাখতে। ষড়যন্ত্র করে আমাকে আটকে রাখা যাবে না।
এদিকে মামলা সূত্রে জানা যায়, মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট সাঈদা আক্তার শিউলি নামে এক নারী বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে ধর্ষণ মামলা করেন। সেই মামলায় খোরশেদ হাইকোর্ট থেকে জামিন প্রাপ্ত ছিলেন।
জামিনের মেয়াদ শেষে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে শুনানি শেষে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু বলেন, কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে এক নারী ধর্ষণ মামলা করেন। যে মামলার কোনো ভিত্তি নেই। ভিত্তিহীন একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে হাইকোর্ট থেকে আমরা চার সপ্তাহের জামিন পাই। জামিনের মেয়াদ শেষে আত্মসমর্পণ করলে শুনানি শেষে আদালত কারাগারে পাঠান।
এদিকে, আবুল কাউসার আশা সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নিলয় আহমেদ বাবু হত্যার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বন্দর থানায় মামলা হয়। সেই মামলায় হাইকোর্ট থেকে তিনি জামিনে ছিলেন। জামিন শেষে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সি মো. মশিয়ার রহমান তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশন দেন।
আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নূর বাধন বলেন, এটা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা। মূলত ওই ভুক্তভোগী পুলিশের ধাওয়ায় মারা গিয়েছিল। সে মামলায় হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের জামিন পাই। জামিনের মেয়াদ শেষে আত্মসমর্পণ করলে শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
এ সময় তাদের পক্ষে আদালতে উপস্থিত হন নাসিক কাউন্সিলর শারমিন হাবিব বিন্নি, আফসানা আফরোজ বিভা, শওয়ন অঙ্কন, কামরুল হাসান মুন্না, আব্দুল করিম বাবু, মনিরুজ্জামান মনির, অসিত বরণ বিশ্বাস, মো. শাহীন মিয়া, সুলতান আহম্মেদ ভুইয়া, আনোয়ার ইসলাম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খোরশেদ এর সহধর্মীনি আফরোজা খন্দকার লুনা, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ও কর্মীরা। উপস্থিত নেতৃবৃন্দরা দুই কাউন্সিলরের মুক্তির দাবিতে এসময় আদালত চত্ত্বরে শ্লোগান দিতে থাকেন ।