না.গঞ্জে ডিসি সহ কোয়রেন্টাইনে শীর্ষ কর্মকর্তাগণ, শংকিত জেলাবাসী !

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : করোনা প্রাদুর্ভাব ব্যপক ছড়িয়ে পড়ায় নারায়ণগঞ্জকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইইডিসিআর। এটিকে প্রতিরোধে আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর জেলাটিকে লকডাউনেরও ঘোষনা দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতে  জেলার করোনা ভাইরাসের মোকাবেলা করতে নিরলশ পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন জেলা প্রশাসনের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাগণ ।

এদের মধ্যে করোনা প্রতিরোধ কমিটি নারায়ণগঞ্জের সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন, কমিটির সদস্য সচিব জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এছাড়াও জেলা করোনা সংক্রান্ত ফোকাল পার্সন ও সদর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম আইসোলেশনে রয়েছেন। ইতমধ্যে নিশ্চিত হতে জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিনের  নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃতের ঘটনা থেকে শুরু করে জনসমাগম রোধে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ। দফায় দফায় বৈঠক নানা কার্যক্রমের মধ্যে বেশ তৎপর ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  (ইউএনও) নাহিদা বারিক, তবে তিনি সুস্থ আছেন, শুধূমাত্র সর্তকতা অবলম্বন করছেন। তিনজন এসিল্যান্ডও বাসায় থেকেই সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন তথ্য জানিয়েছেন ইউএনও) নাহিদা বারিক। একই সতর্কতায় সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার  (আরএমও) ডা. মো. আসাদুজ্জামান অন্যান্যরা। কিন্তু কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে সকলেরই।

এ প্রসঙ্গে জেলা সিভিল সার্জন দপ্তরের কন্ট্রোল কক্ষ থেকে লুৎফর রহমান বলেন,  জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ  এবং আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার  (আরএমও) ডা. আসাদুজ্জামান করোনা ভাইরাসের কারনে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ।

অন্যদিকে জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অধিকর্তা হলেন পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম। এদিকে ওই চারজন জেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হলেও তারা বুধবার অফিস করেননি কেউ। এমন পরিস্থিতিতে ওই চারজন অফিস কেন করছেন না, কি হয়েছে, এমন খবর এক কান দু কান করে রটে যায় সর্বত্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন মঙ্গলবার রাত থেকে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে বুধবার তিনি তার বাংলোয় বিশ্রামে চলে যান। সেখান থেকেই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন দুপুরে তার নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠায়। এদিকে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজও বুধবার থেকে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। জেলা করোনা ফোকাল পার্সন ডা. জাহিদুল ইসলাম করোনা সন্দেহে বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন এবং জেলা করোনা ফোকাল পার্সন এদিন কেউই অফিস করেননি।

তবে তাদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া গেলেও জেলা প্রশাসকের মুঠোফোন রিসিভ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা। এ ছাড়া জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমও অফিসে আসেননি। তার কোয়ারেন্টাইনে থাকার বিষয়টি পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

তবে, এসপি জায়েদুল আলম বলেন, আমি সুস্থ আছি। আমি কোয়ারেন্টাইনে নেই। তবে ডিসি ও সিভিল সার্জন একটু অসুস্থ। এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের করোনা সন্দেহ হওয়ায় যেহেতু তার সংস্পর্শে ছিলাম, তাই বাড়িতেই অফিস করছি। আর এই মুহূর্তে আমাদের সবার সামাজিক দূরত্ব মেনে পরিস্থিতি মোকাবিলা প্রয়োজন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক বাড়িতে আছেন। জনসমাগম যাতে কম হয় এ কারণে অফিসে কম সময় দেওয়া হচ্ছে। তবে আমাদের সব কাজ চলছে। করোনার নমুনা পরীক্ষার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তিনি (ডিসি) কাশিসহ অসুস্থ অনুভব করেছিলেন। এ কারণে ভাবির পরামর্শে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে তিনি এখন সুস্থ আছেন। চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।

এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, আমি আসলে কোয়ারেন্টাইনে আছি। বাসায় বসে অফিস করছি। টেলিফোনে নির্দেশ দিচ্ছি। করোনা বিষয়ক জেলা ফোকাল পার্সন ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি আইসোলেশনে আছি। শরীর ভালো না, অসুস্থ। মুঠোফোনে সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়ে কাজ করছি।

এমন অবস্থায় জেলাবাসীর মধ্যে ভীত সৃষ্ট হয়েছে। কি করে এমন সংকটময় পরিস্খিতি সামাল দিবে প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ। সামনের দিনগুলি কি আরো ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে কিনা শংকিত সকলেই।

add-content

আরও খবর

পঠিত