নারায়নগঞ্জ বার্তা ২৪ : শহরের ২নং বাবুরাইল এলাকায় তালাবদ্ধ ঘরে পাচঁজনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার ১৬ জানুয়ারী ২নং বাবুরাইল এলাকার ১৩২/১১ নং ইসমাঈল হোসেনর ছয় তলা ভবনের নিচতলায় এই দূর্ঘটনাটি ঘটে। নিহতরা হলেন ভাড়াটিয়া শফিকের স্ত্রী তাসলীমা বেগম (৩৫), তার ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), তাসলীমা বেগমের ছোট ভাই মোরশেদুল আলম (২৫), তাসলীমা বেগমের জা লামিয়া বেগম (২২)। বাড়ির মালিক এর চাচাতো ভাই হাজ্বী মোহম্মদ হোসেন নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ কে জানায়, গত এক মাস আগে ঢাকায় একটি কোম্পানির প্রাইভেট গাড়ি চালক শফিক তার পরিবার নিয়ে থাকবে বলে এই বাসাটি ভাড়া নেয়। শফিক প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন এই বাসায় আসতো। কিন্তু এই সপ্তাহে তাকে আর দেখা যায়নি। তবে ভাড়াটিয়া শফিক না থাকলেও এই বাসায় তার পরিবার বসবাস করে আসছিল। আজকে সকাল থেকেই বাড়িটি বাহির থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়।
পরে তাসলীমা বেগমের ননদ হাজেরা বেগম ও শফিকের শ্যালক সারফুল ইসলাম সাবলু নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ কে জানায়, আমরা সন্ধ্যা ৬টায় এই বাসায় আসলে তালাবদ্ধ দেখতে পাই। প্রায় এক ঘন্টা দরজায় দাড়িযে ডাক দেওয়া হলে ও ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কোন সাড়া পায়নি। এক পর্যায় সন্দেহ জাগলে দরজার তালা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে দেখতে পাই নির্মমভাবে মাথায় আঘাত করা পড়ে আছে রক্তাক্ত দেহ। সঙ্গে সঙ্গে আমরা বের হয়ে কান্নাকাটি করতে থাকলে পাশের বাড়াটিয়া ও এলাকার মানুষ জরো হয়। শফিকের শ্যালক সারফুল ইসলাম সাবলু জানায় গতকাল থেকেই আমরা তাদের সাথে ফোন করছি যোগাযোগ করার জন্য কিন্তু কেউই ফোন ধরছিলনা।
পরে রাত ৯:৩০ মিনিটে ঘটনাস্থলে নারায়ণগঞ্জ থানার তদন্ত পরিদর্শক শাহাজালাল এই মৃতদেহগুলোর ঘটনাস্থল পর্যাবেক্ষন করেন। র্পযবেক্ষনের একপর্যায় র্যাব কর্মকর্তা গুলজার হোসেন বলেন আগামিকাল সকাল ১০ টায় র্যাবের মহাপরিচালক এই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসবেন। এছাড়াও আরো উপস্থিত হন ফতুল্লা থানার ওসি আসাদুজ্জামান, ডিবি, পুলিশের কর্মকর্তা ও ১১টায় ঘটনাস্থলে আসেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন মো: আনিসুর রহমান মিঞা। তারপর রাত ১১:৩০ মিনিটে আসেন বাংলাদেশ পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ আলী। পরে রাত ১২টায় ঘটনাস্থলে ৭সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম এসে ক্রেইম সিনের মাধ্যমে আলামত সংগ্রহে ও ঘটনার নেপথ্যে কারণ অনুসন্ধান করছেন।
প্রাথমিক তদন্ত শেষে বাংলাদেশ পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ আলী ও জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের জানায় আটক ছিল ২ রাত। ২ শিশুসহ একই পরিবারের ৫ জনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তারা জানান, পারিবারিক কারণে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিক ভাবে আমাদের ধারণা। বিভিন্ন ইসুতে তদন্ত করে গ্রেফতার পূর্বক আসামীদের বিচারের আওয়তায় আনা হবে। এ ঘটনায় ২জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে জানান তারা।আটককৃত একজন মোরশেদুলের খালাতো ভাই দেলোয়ার হোসেন আর একজনের নাম পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। ঘটনাস্থলে আসার পরপর পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন নিহতের স্বামী শফিককে মুঠোফোনে খবর দেন বলেও সাংবাদিকদের জানায়। পরে ঘটনাস্থলের আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মৃতদেহগুলো মর্গে প্রেরণ করে। এদিকে পাঁচ জনকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় শহর জুরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই সংবাদটি লিখা র্পযন্ত পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং বাড়ির ভাড়াটিয়া শফিক এখনো অনুপস্থিত।