নারায়ণগঞ্জে লাশ নিয়ে খু‌নির ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (নিজস্ব প্রতিবেদক) : অবশেষে নিথর দেহ হয়ে ফিরলো রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার কাজল। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসা নেয়ার একদিন পর গতকাল বিকাল ৫টায় ময়না তদন্ত শেষে শহরের চাষাঢ়ায় সুলতান ভাই কাচ্চি রেস্টুরেন্টের সামনে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছে।

এসময় আঙ্গুরা প্লাজার মালিক অভিযুক্ত আজাহার তালুকদার ও তার ছেলে আরিফ তালুকদার মোহনের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন রেস্টুরেন্টের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ স্বজনরা। এদিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ পৌছাতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে রেস্টুরেন্টের স্টাফ, সহপাঠিসহ স্বজনরা। এরপর জানাযা শেষে বন্দর উপজেলায় তার দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়।

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারী রবিবার রাত সাড়ে ৯টায় শহরের চাষাঢ়ায় আঙ্গুরা প্লাজায় সুলতান ভাই রেস্টুরেন্টে বিল চাওয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে গিয়ে আজাহার তালুকদারের গুলি বর্ষণে গুলিবিদ্ধ হয় ম্যানেজার কাজল। এসময় আরো ৩ জন আহত হয়েছে বলে জানা যায়। তারা হলেন রেস্টুরেন্টের কর্মচারী ইউনুস, আউয়াল ও জনি।

এরপর এই ঘটনায় রেস্টুরেন্টের মালিক শুক্কুর আলী বাদী হয়ে মো. আজাহার তালুকদার ও আরিফ তালুকদার মোহনকে আসামী করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার বিকালে অভিযুক্তদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত সাহারা বীথির আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।

স্থানীয়দের কাছে জানা যায়, আজাহার তালুকদার ও তার চার ভাই আঙ্গুর প্লাজার ওই ভবনটির ছয়তালা বাড়ির মালিক। বাড়ির নিচতালায় থাকা বেশ কয়েকটি দোকান একেক ভাইয়ের নামে বরাদ্দ। রেস্টুরেন্টের মালিক শুক্কুর আলী আজাহারের ছোট ভাই আজিজুল হাওলাদারের কাছ থেকে ভাড়া নেয়। রোববার রাত সাড়ে ৮ টায় আজাহার রেস্টুরেন্ট প্রবেশ করে পানির জন্য ১০ লাখ টাকা এককালীন বিল চায়। এসময় রেস্টুরেন্টের মালিক জানায়, ভাড়ার বিষয়ে আজিজুলের সাথে কথা বলবো। বিল আপনার কাছে দিবো না। এ নিয়ে আজাহারের সাথে রেস্টুরেন্টের লোকদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে উপরে গিয়ে বাসা থেকে পিস্তল ও শর্টগান নিয়ে আসে। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার শফিকুর রহমান কাজলের পেটে গুলি লেগে গুরুতর আহত হন। একই সময়ে আহত হন রাসেল নামে এক পথচারী। আজাহারকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে তার মেয়ে লাকিও পায়ে আহত হন। পরে আশেপাশের লোকজন তাকে মারধর শুরু করলে সে দৌড়ে ঘরে গিয়ে আশ্রয় নেয়।

রেস্টুরেন্টের মালিক শুক্কুর আলী বলেন, পানির বিল বাবদ ১০ লাখ টাকা চেয়ে আমাদের গালমন্দ করতে থাকে আজাহার। আমরা প্রতিবাদ করে বলি এই বিষয়ে তার ভাইয়ের সাথে কথা বলবো। কিন্তু সে কথা না শুনে দৌড়ে পিস্তল আর বন্দুক এনে গুলি চালায়। আমাদের ম্যানেজার কাজল সহ বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ম্যানেজারকে ঢামেকে পাঠানো হয়েছে এবং তার অবস্থা গুরুতর।

ওইসময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে একজন আহত হবার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। রাগের বশেই এই কান্ড ঘটিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। তাকে আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে অধিকতর তথ্য বেরিয়ে আসবে।

add-content

আরও খবর

পঠিত