নারায়ণগ‌ঞ্জে মু‌ক্তি‌যোদ্ধাদের ঠিকানাহীন কর‌তে চায় কারা ?

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (নিজস্ব প্রতিবেদক) : ফ্রেমে থাকা ছবির ১১ জনই মুক্তিযোদ্ধা। এদের ম‌ধ্যে ৬ জনই ইহকাল ত‌্যাগ ক‌রে‌ছেন। অ‌নে‌কেই আবার শয্যাশায়ী। জীবিতদের মধ্যে যারা কিছুটা সুস্থ্য আছেন, বাকিটা জীবন এক সাথেই থাকতে চাইছেন। ত‌বে সে চাওয়াটাও এখন ছি‌নি‌য়ে নি‌তে চাই‌ছে স্বাধীণতা বি‌প‌ক্ষের শ‌ক্তি। শেষ বয়‌সে ঠিকানাহীণ দাবী ক‌রে বৃহস্প‌তিবার (২৯ সে‌প্টেম্বর ) বিকা‌লে ‌তল্লা এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন ফতুল্লা থানাধীণ ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

সংবাদ স‌ম্মেল‌নে আক্ষেপ করে তারা জানান, শেষ বয়‌সে এক সাথে থাকতে চেয়ে স্বাধীণতা বি‌রোধীচ‌ক্রের অপ্রচার ও লাঞ্ছনার শিকার হ‌তে হ‌চ্ছে। এমন‌কি ভয়ভী‌তি দে‌খি‌য়ে হুমকীও দি‌চ্ছে বর্তমান তল্লা এলাকায় পাঠাগারের সভাপতি মইন, সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, শাহীন, স্বপন, জুয়েল। আমাদের বিভিন্ন সময় র‌্যাব দিয়ে আবার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) দিয়ে গ্রেপ্তার করাবে। প‌ত্রিকায় নিউজ ক‌রে সমা‌জে নিচু করা‌বে। যারা ‌কিনা স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি, মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষের শক্তি। একটু খোঁজ নি‌লেই জান‌বেন। তাদের প‌রিবা‌রের সদস‌্যরা কোন দ‌লের রাজনী‌তি‌তে জ‌ড়িত র‌য়ে‌ছে। আমাদের বিরুদ্ধে তারা নানা ষড়যন্ত্র করছে। এখন লিজের নামে সরকারী জায়গা দখল করে মুক্তিযোদ্ধাদের উচ্ছেদ করার পায়তারা করছেন মইন আহসান ও তার সহযোগীরা। আমরা শুধু এই খালি স্থা‌নে মুক্তিযোদ্ধাদের বসার জন‌্য চে‌য়ে‌ছিলাম।

ওইসময় ৭,৮,৯ ফতুল্লা ইউনিয়ন ও নাসিক ১১নং ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আলী নূর বলেন, ১৭ বছর আগেই আমাদের এখানে একটি কার্যালয়ের জন্য ভিত্তি সাইনবোর্ড সাটানো হয়েছিলো তৎকালিন আমলে জেলা কমান্ডার সামিউল্লাহ মিলন উদ্বোধন করেন। যা আমা‌দের তা‌ছে থাকা পুর‌নো ছ‌বির ফ্রেমে ব‌ন্দি র‌য়ে‌ছে। ওইসময় পুকুর থাকার কারনে কোন কার্যালয় স্থাপন করতে পারিনি। ১৯৮২ সালে মাছ চাষের জন্য রেলওয়ে থেকে জায়গায় লিজ নিয়েছিলো কিন্তু পরবর্তীতে তারা পাঠাগার নির্মাণ করে ফে‌লেন। যেখা‌নে আমা‌দের কোন বাধা নেই। কারণ আমরা যে স্থান‌টি চা‌চ্ছি, তা পাঠাগার তো নয়। তারপ‌রেও তারা পাঠাগার‌কে উপস্থাপনে এ‌নে ঢাল হি‌সে‌বে ব‌্যবহার ক‌রে মানু‌ষের বি‌বেক নি‌য়ে খেল‌ছেন।

আমরা কারো জায়গা দখল করি নাই, এটি একটি সরকারি জায়গা। শেষ বয়‌সে মুক্তিযোদ্ধাদের বসার কোন জায়গা নেই। আমরা চাচ্ছি ওই জায়গায় আমাদের একটি বসার স্থান করবো, একটি কার্যালয়ের মাধ‌্যমে আমাদ‌রে ঠিকানা করবো। যেহেতু সরকার আমাদের, আমরাও সরকারের। তাই আমরা একটি দাবী রাখতেই পারি। মুক্তিযোদ্ধাদের বসার জন্যই এই জায়গাটি চাচ্ছি। কিন্তু তারা এতটাই দূরন্ত ও দুষ্টু প্রকৃ‌তি‌র যে আমাদের জেলা কমান্ডার মোহাম্মদ আলীকেও ছলচাতুরী ক‌রে ভুল বুঝানোর চেষ্টা কর‌তে চ‌লে গে‌ছে।

তবে স্থানীয়রা চাইছে এটার একটা সুষ্ঠু সমাধান। আর যারা এই ঘটনাটিকে নিয়ে শুরুতে গণমাধ্যমকে দিয়ে তথ্য বিভ্রাট করে অপপ্রচার করেছিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। যেন ভবিষ্যতে অন্তত বয়স্ক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সমাজে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করতে না পারে। এছাড়াও চিহ্নিত করা হোক ওইসকল অপশক্তিকে, এরা কারা ছিল, যারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে শেষ বয়সে বসার স্থানকে ছিনিয়ে নিয়ে ঠিকানাহীন করার পায়তারা করছিল।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বীরমুক্তিযোদ্ধা জামাল হোসেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, বীরমক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ হোসেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন মোল্লা, বীরমুক্তিযোদ্ধা বকুল মিয়া, বীরমুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন, বীরমুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মহি সহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা।

add-content

আরও খবর

পঠিত