নারায়ণগঞ্জে টাকায় মিলে তিতাস গ্যাস সংযোগ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত লিংকন ) : ২০১১ সাল থেকে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ রেখেছে সরকার। এর মধ্যে বিশেষ বিবেচনায় কিছু সংযোগ দেওয়া হলেও ২০২০ সাল থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ আছে। অভিযোগ রয়েছে কাগজে কলেম নিষেধ থাকলেও নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের কতিপয়দের যোগসাজোসে ঠিকাদারের লোকজনকে টাকা দিলেই মিলছে গ্যাস সংযোগ। বুধবার (২রা নভেম্বর) ভূঁইগড় কাজি পাড়া স্ট্যান্ড এলাকার সোনালী সংসদ খেলার মাঠে গেলে এমনি চিত্রের দেখা মিলে।

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সাথেই এ টু জেড স্কুলের ঠিক পাশেই দাড়িয়ে আছে ৫তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবন। ভবনটিতে বড় অক্ষরেই নাম লিখা রয়েছে সায়েম ভবন। যে ভবনে দেখা গেছে একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ের বিশাল ব্যানারও। তবে সে ভবনেই নতুন করে গ্যাস সংযোগ স্থাপনের জন্য দিনে-দুপুরে রাস্তা কেটে যেন এলাকার হয়ে আছে।

এদিকে, আবাসিক বাড়িতে গ্যাসের সংযোগ থাকলেও দিনের অধিকাংশ সময়েই গ্যাস থাকছে না। নিত্যপণ্যের খরচের পাশপাশি বেড়েছে বাসা-বাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাসের খরচ। সব মিলিয়ে বহুমুখী লোকসান ঠেকাতে এবং বৈধ গ্যাস সরবরাহে যেখানে হিমশিম খাচ্ছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। সেখানে টাকা দিলেই গ্যাসের সংযোগ স্থাপনে থেমে নেই একটি অসাধু চক্র।

সরেজমিনে গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত হলে সেখানে বেশ কয়েকজন ঠিকাদারের লোকজনের উপস্থিতি দেখা যায়। শুধু তাই নয়, উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাস অফিসের দুই জন কর্মচারী। যাদের নাম ও তথ্যসহ সংরক্ষিত আছে ভিডিও ক্লিপও। আগামী পর্বে প্রতিবেদনে আসবে তার বিস্তারিত। ওইসময় তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও তারা তৎক্ষনাত তিতাসের বরাদ্ধ করা গাড়ি নিয়েই দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। এরপরও একাধিকবার তাদের ব্যবহৃত নাম্বারে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। তাই জানা যায় নি কোন বক্তব্য।

তবে স্থানীয়দের কাছে জানা গেছে অসংখ্য অভিযোগ, ওই এলকায় বেশ কয়েকটি অবৈধ গ্যাস সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে ঠিকাদার সিন্ডিকেটের দালালদের মাধ্যমে। এর সাথে জড়িত রয়েছে তিতাস অফিসের কিছু অসাধু চক্র। যাদের মাধ্যমে এসব কাজ সম্পাদন হয়ে থাকে। ওইসময় পাওয়া যায় বেশ কয়েকজনের নামও।
এদিকে সংযোগ নেয়া সায়েম ভবনের মালিক আলমগীর জানান, তিনি অবৈধ কোন সংযোগ নিচ্ছেন না। তার সংযোগটি ২০০৭ সালে নেয়া হয়েছিল। এখন রিপায়ারিং করে আরেকটি সংযোগ নিচ্ছেন। তবে এজন্য তিতাস অফিসে আবেদন করেছেন তিনি।

কিন্তু এ কথার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা আবেদনের কাগজ অথবা আবেদন দেয়ার পর অনুমোদন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেনি। এমনকি গ্যাস সংযোগে পূণ:সংস্কারের জন্য তিতাস কর্তৃপক্ষের দেয়া কোন অনুমোতি পত্র দেখাতে পারেনি।

অন্যদিকে, জানা গেল কারা কত টাকা দিচ্ছেন। আর দিয়েছেন। কে নিয়েছে এ কাজের চুক্তি। কোন কোন ঠিকাদার এসব কাজে সম্পৃক্ত। আশে পাশে এলাকায় কারা সংযোগ দিযেছিলেন। রয়েছে এর সম্পূর্ণ অভিযোগের ভিডিও। ওইসময় বেশ কয়েকজন ম্যানেজের জন্য চালায় তদবীরও। পরে আরো খবর নিয়ে জানা গেছে, সাংবাদিকরা চলে গেলেই সন্ধ্যা নেমে এলেই রাতের আধাঁরে সেই সংযোগ স্থাপনে কাজ চালিয়ে যায় সেই চক্রটি।

এসব নানা অভিযোগ এবং গ্যাস সংযোগ স্থাপনের বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ তিতাস অফিসের ম্যানেজারসহ ফতুল্লা এরিয়া ম্যানেজার অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি। তাই তাদের পক্ষেও কোন বক্তব্যো জানা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, প্রতি সপ্তাহে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরন অভিযান চললেও কোন সুফল মিলছে না। একদিকে কিছু সৎ কর্মকর্তা নিরালশ কাজ করে যাচ্ছে। অন্যদিকে অসাধুরা তাদরে বদনাম করতে দালাল চক্রের অনৈতিক কাজের সাথে সহযোগী হচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার ও তার লোকজন গ্যাস অফিসের নানা পরিচয়ে অনেক বৈধ সংযোগ ব্যবহারকারী অতিরিক্ত চুলা ব্যবহার করছে তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি জরিমানা এবং মামলার ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলেও অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত