নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরেই দেখা গেছে নানা চমক। ইতোমধ্যেই নারায়ণগঞ্জের দুইটি আসনে কেন্দ্রীয় গ্রিণ সিগন্যাল পেয়ে জাপার প্রার্থী নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) এমপি সেলিম ওসমান এবং নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের লিয়াকত হোসেন খোকা শিবিরে স্বস্তি রয়েছে। তবে বিগত নির্বাচনে জাতীয় পার্টি পৃথকভাবে নির্বাচন করলেও এবারের সমীকরণ ভিন্ন। জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে থাকছেন বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দলটি (বিএনপি) জোটবদ্ধ নির্বাচনে আসায় নারায়ণগঞ্জে আসন বিন্যাসে পাল্টে গেছে মেরুকরণ।
এদিকে নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের অংশগ্রহনের ঘোষনার পর থেকে বসে নেই ক্ষমতাসীন মহাজোট। তবে নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টিকে কোনভাবেই ছাড় দিতে নারাজ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তাই জাতীয় পার্টির লাঙ্গল ঠেকাতে সকল আসনেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। যেখানে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী কোন কোন আসনে ডজনও ছাড়িয়েছে।
এরআগে নারায়ণগঞ্জে দুইটি আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ। কিন্তু এবারে শুধু জাতীয় পার্টি থেকে ইতোমধ্যেই চারটি আসনেই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন প্রত্যাশীরা। এরা হলেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) আসনে এ.কে.এম সেলিম ওসমান, চারবারের নিবার্চিত প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমান পতœী পারভিন ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে খোকা মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে লিয়াকত হোসেন খোকা ও এরশাদের পালিত কন্যা হিসেবে পরিচিত অনন্যা হেুসেইন মৌসুমী, এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনটিতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ক্ষুদ দলটির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরাশদ। আর এ নিয়েই এখন নানা আলোচনা সমালোচনা। এতো আসন থাকতে কেনই বা নারায়ণগঞ্জের এই আসনটি তিনি বেছে নিলেন এ নিয়েও উঠছে নানা প্রশ্ন।
অন্যদিকে দুই জোটের নির্বাচনী তৎপরতায় ভোটের মাঠে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। আর জটিল সমীকরণের মধ্যে পড়েছেন নারায়ণগঞ্জের জাতীয় পার্টি। সবদলের অংশগ্রহনের ফলে এবার জাতীয় পার্টিকে অন্তত একটি আসন হলেও ছাড় দিতে হবে! আর সেক্ষত্রে মূল্যবান এই আসনগুলোর মধ্যে ছাড় দিবে কোনটি? এটাই এখন প্রশ্ন জনমনে। আবার শুনা যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনটি যেহেতু দলটির চেয়ারম্যান চেয়েছে তাই এটিতেই ছাড় দিতে পারে। কারণ একটি আসনে হলেও নিশ্চিত করতে হবে জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রর্থী। কিন্তু যদি এমনই হয় তাহলে কপাল নিশ্চিত পুড়বে জাতীয় পার্টির হ্যাভিওয়েট প্রার্থী দুই সাংসদ সেলিম ওসমান, লিয়াকত হোসেন খোকা সহ অন্যান্য সম্ভাব্য প্রত্যাশীদের।
প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১১টায় এরশাদের যুব বিষয়ক উপদেষ্টা এডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া এ মনোনয়নপত্রটি সংগ্রহ করেন। এছাড়াও সাবেক এ রাষ্ট্রপতি এর আগে ঢাকা-১৭ এবং রংপুর-১ আসনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এদিকে গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের মনোনয়ন ঠেকাতে এরশাদকে প্রার্থী করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে খোদ স্থানীয় আওয়ামীলীগের একটি অংশের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে ২টি মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির বাকি ৩টি আওয়ামী লীগের। দুই একদিনের মধ্যে জানা যাবে মহাজোটে কারা পাচ্ছেন মনোনয়ন।