নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের বন্দরে মদনপুরে চলন্ত বাসে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে বাসের চালক, কন্টাকটার ও হেলপারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২০ই ডিসেম্বর সোমবার ভোর রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এরআগে ১৯ই ডিসেম্বর রবিবার রাতে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলার মদনপুর এলাকার জাহিন গার্মেন্টের সামনে মধ্যরাতে এ গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন : কিশোরগঞ্জজেলার মিঠামইন থানার মশুরিয়া গ্রামের হাছেন আলীর ছেলে ও বাস চালক নূরুল হক (২১), বরগুনার আমতলী থানার চরখালি গ্রামের আল আমিনের ছেলে ও বাস কন্ডাক্টর শান্ত (১৬) এবং রূপগঞ্জের চনপাড়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে ও বাসের হেলপার বুলেট (১৪)। এ ব্যাপারে ধর্ষণের শিকার তরুণী নিজেই বাদী হয়ে বন্দর থানায় গ্রেফতার ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ওই তরুণীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয় পুলিশ জানায়, রবিবার রাত দশটার দিকে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল থেকে যাত্রাবাড়ি টু গাউছিয়া সড়কে চলাচলরত মুক্তিযুদ্ধা পরিবহন নামের একটি পরিবহনে উঠেন ওই নারী। বাসের অন্যান্য যাত্রীরা কাচপুরে নেমে পড়ে। বাসটি মদনপুরে যাওয়ার আগেই বাসের গেট লাগিয়ে দেন হেলপার। এরপর চালক, কন্টাকটার ও হেলপার পালাক্রমে ওই নারীকে গণধর্ষণ করে। পরে বাসটি মদনপুরে থামিয়ে ওই নারীকে রেখে চলে যায়। তিনি ৯৯৯ ফোন করে ঘটনা জানালে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে তাকে উদ্ধার করে। রাত তিনটার দিকে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত বাসটির চালক, হেলপার ও কন্টাকটারকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে বাসটিকেও। সকালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই নারী। তাদেরকে আদালত পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগে ভুক্তভোগী জানায়, রাতে যাত্রাবাড়ী থেকে গাউছিয়া যাবার জন্য মুক্তিযোদ্ধা পরিবহণের একটি বাসে উঠি। বাসটি চিটাগাং রোড আসার পর যাত্রীশূন্য হয়ে যায়। তখন আমাকে একা পেয়ে আসামীরা উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে আমাকে আমাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে বাস থেকে নেমে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে সহায়তা চাইলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আসামীদের আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মহসীন বলেন, তরুনীর অভিযোগ পেয়ে আজ সকালেই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার নারী জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করে অভিযোগ জানালে তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ৩ আসামীকে এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বাস চালক ছিলেন কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের নূরুল হক (২১)। গ্রেফতার বাকি দুই জন ছিলেন চালকের সহযোগী। তাদের উভয়ের বয়স অনুর্ধ্ব ১৮।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা ভুক্তভোগী তরুণীর বরাতে তিনি জানান, সায়েদাবাদ-গাউছিয়া রুটে চলাচল করা মুক্তিযোদ্ধা পরিবহনে ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী। রাত ১০টার দিকে যাত্রাবাড়ি থেকে রূপগঞ্জের গাউছিয়া যাবার উদ্দেশ্যে বাসটিতে ওঠেন তিনি। বাসটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিটাগাং রোডে আসতেই সকল যাত্রী নেমে যায়। পরে ফাঁকা বাসে তরুণীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে বাস চালক ও তার দুই সহযোগী। ঘটনার পর তরুণীকে বন্দরের মদনপুর এলাকায় নামিয়ে দেয়া হয়। পরে নির্যাতনের শিকার তরুণী ৯৯৯ নম্বরে কল করে অভিযোগ করেন। তৎক্ষণাৎ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। রাতেই মদনপুর এলাকার একটি গাড়ি মেরামতের দোকান থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।