নারায়ণগঞ্জে অনেকটাই ভেঙ্গে পড়ছে লকডাউন পরিস্থিতি

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (নিজস্ব প্রতিনিধি) : সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবীকা নির্বাহের তাগিদে অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের লকডাউন পরিস্থিতি। মঙ্গলবার (২১এপ্রিল) শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া সহ বিভন্নস্থানে এমন চিত্রই লক্ষ করা গেছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে যেমনি বৃদ্ধি পাচ্ছে লোকসমাগম তেমনি বেড়েছে ব্যক্তিগত পরিবহনের সংখ্যাও।

এতে শত চেষ্টায় জনসাধারণের মাঝে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে চাষাড়ায় চেকপোস্ট বসিয়ে সল্প পুলিশ সদস্যদের কাজ করতেও হিমশিম খেতে দেখা গেছে। এরআগে পাড়া মহল্লায় এমন জনসমাগমের অভিযোগ পাওয়া গেলেও এবার তা দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে মূল সড়কেও। একপর্যায়ে বিকালে সেনাবাহিনী সদস্যদের কিছু সময়ের তৎপরতায় নিয়ন্ত্রনে রয়েছে পরিস্থিতি।

এসময় কয়েকজন পথচারীর সাথে কথা হলে তারা কেউ কেউ জানায়, নিত্য প্রয়োজনী খাদ্য কিনতে বের হয়েছে। আবার কেউ বলছেন জরুরী প্রয়োজনে আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছেন। তবে লকডাউন ঘোষিত জেলায় এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যাওয়া নিষেধ থাকার পরেও কেন বের হয়েছেন? এমন প্রশ্নে তাদের উত্তর একটাই, দরকার না হলে কি বের হয়েছি? আমাগো খাবার দিবে কে?

সরেজমিনে শহরের অন্যতম পাইকারী ও খুচরা বিক্রয় কেন্দ্র দিগুবাবুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, লকডাউন জেলাটির ভিন্ন চিত্র। সামাজিক দুরত্ব কোনভাবেই মানছেন না বাজারে আসা ওইসব মানুষ। কারো কারো মাস্ক থাকলেও নামিয়ে রেখেছে, কেউ পকেটে রেখে দিয়েছে। আবার একই সবজি বা পণ্য সামগ্রী হাত দিয়ে ধরে যাচ্ছেন  ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই। কারো হাতে গ্লভস রয়েছে তো কারো থাকলে তা নামে মাত্র ব্যবহার হচ্ছে। এতে করে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতা কি হারে বাড়তে পারে, তা তোয়াক্কা করছে না কেউই।

সচেতন মানুষ অভিযোগ তুলেছেন, বাজারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন কোন তৎপরতার বালাই নেই বলেই দিন দিন বাজারের পরিস্থিতি ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে। এরআগে র‌্যাব-১১ অভিযান চালানোর পর বেশ কয়েকদিন অনেকাংশের দোকানও বন্ধ ছিল। পাশাপাশি সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে নানা ব্যবস্থা গ্রহন করেছিল অনেকেই। কিন্তু আজ আর কেউই নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছেনা। মানছেনা করোনা প্রতিরোধে কোন সর্তকতা।

অথচ প্রথমে ক্লাস্টার এবং পরে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত এই জেলা নারায়ণগঞ্জ। যেখানে নানা অযুহাতে মানুষ বের হচ্ছে, কর্মহীনদের আয় নেই, ঘরে খাবার নেই শোনা যাচ্ছে। কিছু নিম্নবিত্তদের ঘরে দেখাও যাচ্ছে। সেখানে সল্পকিছু মানুষের খাদ্যের চাহিদা যেন শেষই হচ্ছে না। মূলত বাহিরে যাওয়াটা একধরণের বেহায়াপনা স্বভাবে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এতে করে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ গ্রহণ না কর হলে এমন চিত্র পাল্টানো সম্ভব নয় বলে জানায় স্থানীয়রা।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাসে সর্বমোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৩ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪২১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে মারা গেছেন ৩ জন ও আক্রান্ত ১০ জন। এই পর্যন্ত জেলায় মোট ১২০৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২৪৬ জনের। জেলায় এই পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত থেকে সুস্থ হযে বাসায় ফিরেছেন ১৬ জন।

add-content

আরও খবর

পঠিত