নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিনিধি ) : ডিস ব্যবসাকে কেন্দ্র করে মাত্র ৮ মাসের ব্যাবধানে ফতুল্লায় মীরু বাহিনীর ক্যাডারদের হামলায় খুন হয়েছে ২টি । প্রথম ঘটনাটি ঘটে ২০১৬ সনের ১০ ফেব্রুয়ারী। ঐদিন ডিস ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী মীরু বাহিনীর সদস্যদের হামলায় আহত হয় ক্যাবল ব্যবসায়ী শাহজাহান। গুরুত্বর আহতবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৬দিন পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শাহজাহান মারা যায়। এই হত্যাকান্ডের ঘটনা সম্পর্কে
ফতুল্লা মডেল থানার এসআই সাদেক জানান , গত ১০ ফেব্রুয়ারী ডিশ ব্যবসাকে কেন্দ্র পাগলা চিতাশালে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিলো তাতে শাহজাহান আহত হয়েছিলো । এরপর চিকিৎসা নিয়ে সে প্রায় সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলো। সোমবার রাতে আঘাতের ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করাতে গিয়েছিলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মীরু বহুদিন পলাতক ছিলো। এরপর শাহজাহান হত্যাকান্ডের মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জাবিন নিয়ে মীরু বীরদর্পে এলাকায় ফিরে আসে। এতেকরে মীরুর পালিত ক্যাডাররা আরোও বেপরোয়া হয়ে উঠে শুরু করে ত্রাসের রামরাজত্ব ।এরপর সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী ও হত্যাকান্ডের ঘটনা সহ বিভিন্ন অভিযোগে মাত্র কিছুদিন আগে ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ গ্রেফতার হয় মীরু । শুধু মাত্র মীরু গ্রেফতার হলেও তার বাহিনীর সদস্যরা থাকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে । মীরু গ্রেফতার হলেও এলাকায় তার বাহিনীর সদস্যরা র্নিভিগ্নে অপরাধ মূলক কর্মকান্ড চালাতে থাকে ।
তাদের অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতার শিকার হয় এবার স্বাধীন। এহত্যা কান্ডের ঘটনাটিও ডিস ব্যাবসাকে কেন্দ্র করেই। ঘটনা সম্পর্কে জানা গেছে.১৮ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে স্বাধীন ও তার স্ত্রী পারভীন এবং পারভীনের বড় বোন রেখা ঢাকায় আত্মীয়ের বাড়ী থেকে অনুষ্ঠান শেষে নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লা নিজেদের বাড়ীতে ফিরছিলেন। এসময় আগে থেকেই পাগলার রাস্তায় উৎপেতে থাকা সন্ত্রাসী মীরুর লোকজন আমাদের উপর হামলা চালায় এবং স্বাধীনকে ধারলো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এসময় স্বাধীনকে বাঁচাতে গেলে স্ত্রী ও তার বড়বোন আহত হন। এরপর তিন জনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । তখন স্বাধীনের অবস্থা খুব খারাপ থাকাতে তাকে দ্রুত চিকিৎসা দেয়া হয় এবং আইসিইউতে অভজারবেশনে রাখা হয় । এরপরদিন বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বাধীনের মৃত্যু হয়। নিহত শেখ মনির হোসেন ফতুল্লা থানার রসুলপুর এলাকার মোসলেম শেখের ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, সম্প্রতি ডিশ লাইনের দখল নিয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সন্ত্রাসী মীর হোসেন ওরফে মীরু বাহিনীর সঙ্গে মনির হোসেনের ঝগড়া হয় । এরপর মীর বাহিনী সংর্ঘষের ঘটনায় স্বাধীনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলাও করে।
বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন ফতুল্লা মডেল থানার সার্কেল এএসপি শরফুদ্দীন জানান, লাশের ময়নাতদন্ত শেষে এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ৮ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলের অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণকর্তা মীর হোসেন মীরু ওরফে ল্যাংড়া মীরুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরআগে শুক্রবার রাতে পাগলা রেলস্টেশন এলাকায় চার যুবককে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত ও গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় মীরুকে গ্রেফতার করা হয়। সরকারি দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের ছত্রছায়ায় গত কয়েক বছর ধরে ফতুল্লার পাগলা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে এই মীরু ও তার বাহিনী। এতদিন অপরাধে জড়িত থাকলেও ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। অবশেষে ফতুল্লা থানারওসি কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী মীরুকে তার ফতুল্লা পাগলা এলাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। মীরু ওই এলাকার মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে এবং স্থানীয় কুতুবপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক।