#হার্ডলাইনে জেলা প্রশাসন ও ভ্রাম্যমান আদালত
#মেজিস্ট্রেট না থাকায় অপারগ সিভিল সার্জন
নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত লিংকন ) : নারায়ণগঞ্জে একের পর এক ভুয়া ডাক্তার গ্রেপ্তারের ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। এছাড়াও ভুল রিপোর্ট করা, রক্ত পরীক্ষায় ভুল নির্নয়, আলট্রাসনোগ্রামে ভুল রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগও কম নেই কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এসব নিয়ে বেশ কয়েকবার রোগীর স্বজনদের সাথে হাতাহাতির ঘটনায় জড়াতেও দেখা গেছে।
এদিকে, বিগতসময়গুলোতে ঠুনকো সতর্কতা কিংবা সল্প পরিমানের জরিমানায় ছাড় দেয়া হলেও ভুয়া ডাক্তারের বেলায় এবার হার্ডলাইনে নেমেছেন জেলা প্রশাসন। ইতমধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থ্যা এনএসআইয়ের তথ্যানুযায়ী গ্রেপ্তার হয়েছে বেশ কয়েকজন ভুয়া ডাক্তার। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এক বছরের সাজা দিয়ে পাঠানো হয়েছে জেলা কারাগারেও। তবে আড়ালে থেকে সেবার নামে অনৈতিক উপায়ে রমরমা বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে নামে-বেনামে গড়ে উঠা কতিপয় ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যদিও ভুয়া ডাক্তার নিয়োগ দেয়ায় সেসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তৃপক্ষককেও গুনতে হয়েছে জরিমানা।
কিন্তু ভুক্তভোগী এবং সচেতন মহলের দাবী- শুধু জরিমানা নয়, ভুয়া ডাক্তারকে নিয়োগ দিয়ে প্রতারণার অপরাধে যেন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তৃপক্ষকেও কারাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা রাখা হয়। কারণ ওই ভুয়া ডাক্তারের চেয়ে কোন অংশেই কম অপরাধী নয় ডায়াগনস্টিক কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও বিভিন্নসময়ই ভুল রিপোর্ট দিয়ে ভোগান্তিসহ রোগী সাধারণকে মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে তারা। তাই জেলা ও শহরের কয়েকশ গজের মধ্যে গড়ে উঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সঠিক তদারকি করে অনুমোদনহীন এবং অনিয়মে চলা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সিলগালা করে দেয়ার মত কঠোরতার নজির সৃষ্টি করা বঞ্চনীয় বলে মনে করছেন তারা। তাহলেই হয়তো বন্ধ হতে পারে এসব ভুয়া ডাক্তারের কারখানাসহ অদক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী ও কর্মচারী দিয়ে পরিচালনা করা কতিপয় ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো।
জানা গেছে, নগরীর খানপুর হাসপাতালের কয়েক গজের মধ্যে (বার একাডেমী স্কুলের উল্টো পাশে) রয়েছে ইমন ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যার বিরুদ্ধে বিভিন্নসময়ই অভিযোগ থাকলেও অনিয়ম আর অপতৎরতায় বহাল রয়েছে সে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি। আর সে অদৃশ্য কারণেই সম্প্রতি যেকোন অভিযানের আওতায় বাহিরে থাকায় মুক্ত হাওয়ায় ভাসছে ইমন ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ। যদিও সঠিক কাজপত্র না থাকায় এরআগেও কর্তৃপক্ষকে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু অনুমোদনের জন্য কাগজ জমা দেয়া হয়েছে এমন কৌশলী বার্তায় এখনও বহাল। তাছাড়া ভেতরে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে এমন ছোট ছোট কক্ষে কোনভাবেই কি সম্ভব কিনা একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা করার। এরমধ্যেই চলে চিকিৎসাসেবা, ল্যাব কার্যক্রমসহ নানা কিছু। গেল মাসেই এক গর্ভবতীর রক্ত পরীক্ষায় ভুল নির্ণয় করে আবারো আলোচনায় আসে ইমন ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
অন্যদিকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল রিপোর্টের কারণে বেসরকারী হাসপাতালে রোগীদের অবহেলার অভিযোগও কম নেই। আর ভুল রিপোর্টে মৃত্যুঝুঁকির পাশাপাশি বিশাল ব্যয় যেন গরীবের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মত। এমনি এক ভুল রিপোর্টে মৃত্যুপথ যাত্রী হয়েছিল এক গর্ভবতী নারী। ফতুল্লায় অবস্থিত কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দেয়া ভুল রিপোর্টে পাওয়া ভুক্তভোগীর নাম আয়েশা বেগম। যার গর্ভে থাকা মৃত সন্তানকে জীবিত উল্লেখ করে আল্টাসনোগ্রামের রিপোর্ট দেন ডায়াগনস্টিকে দায়িত্বরত চিকিৎসক তানিয়া তাজনীন তৃষা। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করায় তখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন ওই গর্ভবতী। তার পরিবারের অভিযোগ, এমন ভুল রিপোর্টের পরে নগরীর কেয়ার হাসপাতালে নিলেও চিকিৎসা প্রদানে অবহেলা করছেন। ফলে হতাশার পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রোগীর স্বজনরা।
সূত্রে জানা গেছে, আয়েশা বেগম (৩০) ফতুল্লার চাঁদনী হাউজিং এলাকার বাসিন্দা। তার ২টি পুত্র সন্তান রয়েছে। ওইসময় তিনি প্রায় ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ভুক্তভোগী আয়েশা বেগমের বড় বোন মুন্নি বেগম গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকাবস্থায় আয়েশা শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করেন এবং তার পেটে সন্তানের নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। গত মার্চ মাসের ১৬ তারিখে তিনি ফতুল্লার জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডক্টরস্ ডায়াগনস্টিক ল্যাবে (মোস্তাফিজ সেন্টার) প্রথম আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। সেখানকার রিপোর্টে চিকিৎসক মামুন উর রশীদ উল্লেখ করেন, আয়েশার গর্ভে থাকা সন্তান বেঁচে নেই। দ্রুতই তার গর্ভপাত করানোর পরামর্শও দেন তিনি।
পরবর্তীতে বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য গত ১৪ এপ্রিল ফতুল্লায় অবস্থিত কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে (ইউনিট-২) আল্ট্রাসনোগ্রাম করান আয়েশা। সেখানকার চিকিৎসক তানিয়া তাজনীন তৃষা আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্টে উল্লেখ করেন, আয়েশার গর্ভে থাকা সন্তান জীবিত! সন্তানের হার্টবিট সক্রিয় রয়েছে বলে উল্লেখ করার পাশাপাশি আগামী ৫ই নভেম্বর আয়েশার সন্তান প্রসবের তারিখও নির্ধারণ করে দেয়া হয় রিপোর্টে!
স্বজনরা বলছেন, কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সেলিনার কাছ থেকে চিকিৎসা পরামর্শ গ্রহণ করেন আয়েশা। তবে, দিন দিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এদিকে, গর্ভে থাকা সন্তানেরও কোন নড়াচড়া অনুভব করছিলেন না তিনি। পরে অধিক নিশ্চিত হওয়ার জন্য গত ২ মে নারায়ণগঞ্জের পপুলার হাসপাতালে পূনরায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করান আয়েশা। ফতুল্লা জেনারেল হাসাপাতাল এন্ড ডক্টরস্ ডায়াগনস্টিক ল্যাব (মোস্তাফিজ সেন্টার) এর মত পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্টেও বলা হয়, আরো প্রায় ২ মাস আগেই আয়েশার গর্ভে থাকা সন্তান মারা গেছে। এতে ফতুল্লার কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দেয়া আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্ট ভুল বলে প্রমাণিত হয়।
ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে আয়েশা বেগমের বড় বোন মুন্নি বেগম বলেছেন, ফতুল্লা কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দেয়া আল্ট্রাসনোগ্রামের ভুল রিপোর্টের কারণে আমার বোনের জীবন এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। ওইসময় তাদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে তাদের ভুল রিপোর্টের কথা বলা হলে তারা তাদের হাসপাতালের একজন দারোয়ানকে দিয়ে আমাদেরকে চাষাঢ়ায় অবস্থিত তাদের কেয়ার জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। আমরা দুপুর ১টার দিকে সেখানে রোগি নিয়ে আসি। কিন্তু বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা ৪ ঘন্টা আমাদের রোগীকে ওয়ার্ড রুমের পাশে ফেলে রাখে। এই ৪ ঘন্টা কোন চিকিৎসাই দেয়া হয়নি। এতে আমাদের রোগীর অবস্থা আরো আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। এ নিয়ে হট্টগোলের পর একজন নার্স এসে আমাদের রোগিকে একটি স্যালাইন দিয়ে চলে যায়।
ঘটে যাওয়া এমন অভিযোগ যেন লিখে শেষ হওয়ার নয়। এরআগে শহরে অবস্থিত মেডিনোভায় আলট্রাসনোগ্রাম করেও ভুল রিপোর্ট দিয়েছে। অন্য প্রতিষ্ঠানে দুটি সন্তান চিহ্নিত করলেও, তাদের রিপোর্টে এসেছে একটি! পরবর্তিতে মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে তারা পূণরায় পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়, বাচ্চা দুটিই রয়েছে। পরে ভুক্তভোগীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে এবং কর্মরত স্টাফদের দমকিয়ে বিষয়টি সমঝোতা করে কর্তৃপক্ষ। তবে এমন ঘটনায় প্রতিনিয়তই শিকার হচ্ছে রোগী সাধারণ। কিছু ঘটনা গোপনেই কবর পর্যন্ত গড়াচ্ছে। আবার এসব বিষয়কে মালিক পক্ষ স্বাভাবিকভাবেই নিতে দেখা গেছে। তারা বলছে, ভুল হওয়াটাই স্বাভাবিক। ভুল হতেই পারে। এই অজুহাতে বছরের পর বছর চলছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
এসব বিষয়ে কথা হলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমান জানিয়েছিলেন, আমাদের পক্ষ থেকে আমরা শতভাগ চেষ্টা করি। আর বিভিন্ন সংস্থ্যার কাছে আমরা অনুমোদনহীন সাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকাও দিয়েছি। এজন্য সকলকে সচেতন হেতে হবে। তবে আমাদের নিজস্ব কোন মেজিস্ট্র্যোট নেই। যে কারণে আমরা চাইলেই স্বাধীনভাবে অভিযানে বের হতে পারি না। আমাদের অভিযানের জন্য মেজিস্ট্র্যোটের প্রয়োজন হলে আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগীতা নেই। তবে যেকোন সময়ই তো পাওয়া সম্ভব নয়। যদি কোন মেজিস্ট্র্যোট এর জন্য আবেদন করি তাহলে আমরা অভিযান চালাতে পারি। আর তা না হলে পারি না। তাছাড়া ভোক্তা অধিকারে যিনি আছেন উনাকে নিয়ে করতে হয়। অথবা উনারা করেন। তবে আমাদের অভিযান চালিয়ে যদি জরিমানা বা আইনের আওতায় আনতে হয় সেক্ষেত্রে মেজিস্ট্র্যোট না পাওয়ায় সম্ভব হয় না।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, আমরা কিন্তু শাস্তি দেয়া শুরু করেছি। আর ডায়াগনস্টিকের মালিক, ম্যানেজারকেও ছাড় দেয়া হবে না। সকলকে ডাক্তার নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে তালিকায় সবকিছু রাখতে হবে। খুব শিঘ্রই তাদেরকে চিঠি দিবো। এবং তাদের নিয়ে বসবো। সাধারণ রোগীদের বিষয়ে কাউকে বিন্দু মাত্র ছাড়ের কোন অবকাশ নাই। আর সিভিল সার্জন যখন চাইবে আমরা মেজিস্ট্র্যোট দিতে পারবো। এতে কোন সমস্যা নাই। মোবাইল কোর্ট করতে চাইলে যেকোন সময় মেজিস্ট্র্যোট প্রস্তুত আছে।
উল্লেখ্য, গতকাল শহরের গ্রীন লাইফ ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে এক ভুয়া ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করে এক বছর কারাদন্ড প্রদান করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। এ সময় ডায়াগনস্টিক প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার জরিমানা করা হয়। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এর তথ্যের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাহান খানম অভিযান পরিচালনা করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন এনএসআই এর উর্ধতন কর্মকর্তারা। এসময় রোগীদের ভুল চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় সেখানকার চর্ম ও যৌন বিষয়ক ভুয়া ডাক্তার সাইদুল ইসলামকে।
এরআগে গত ২১ মে দুপুরে শহরের ডিআইটি মার্কেটে সুপার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ অভিযান পরিচালিত হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুশরাত আরা খানমের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযানে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসারসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।অভিযান চলাকালে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভুয়া এমবিবিএস ডিগ্রিধারী সনোলোজিস্ট কনসালট্যান্ট ডাক্তার মোস্তফা মিজানুর রহমানের কাছে তার সনদপত্র দেখতে চান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। পরে তিনি বৈধ কোনো সনদপত্র দেখাতে না পারাসহ নিজের অপরাধ স্বীকার করলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়ে এক বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন।
এছাড়াও সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যৌথ অভিযানে এক ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (২৯ মে) বিকেলে সোনারগাঁও উপজেলার কদমতলী গ্রাম থেকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) এর তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইব্রাহিম ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতিনিধি ডা. মো. মোশারফ হোসেনের যৌথ তত্ত্বাবধানে ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযুক্ত ভূয়া ডাক্তারের নাম মো. জানে আলম নয়ন (৩৩)। সে সোনারাগাঁও উপজেলার কদমতলী গ্রাম থেকে নুরুল আমিনের ছেলে।
এদিকে, অভিযুক্ত নয়ন বৈধ কোন সনদপত্র দেখাতে না পারাসহ নিজের অপরাধ স্বীকার করলে নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট তাকে গ্রেপ্তারে নির্দেশ দিয়ে এক বছরের কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করেন।
জানাগেছে, গ্রেপ্তারকৃত নয়ন ভুয়া পদবী ব্যবহার করে দীর্ঘদিন যাবৎ কদমতলী ধন্ধীবাজার এলাকায় মেডিকেল প্র্যাকটিস করে আসছিলেন। বন্দর উপজেলায় তার চাচার ফার্মেসিতে সহকারী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করার পর নিজের এলাকায় গিয়ে নিজেকে মা ও শিশু বিশেষজ্ঞ বলে প্রচার করেন এবং রোগী দেখা শুরু করেন। তিনি এমবিবিএস (এএম), এমডি (অল্টা মেডিসিন), ইন্টিগ্রেটেড ফিজিশিয়ান, এমপিএইচ (আরসিএইচ), আরটিএসএস (ডিইউ), আইসিইউএইচসি (আইসিডিডিআরবি), পিজিসিসি (ইসিডি-সি) ভুয়া ডিগ্রী/পদবী ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন রকম অনুমোদন ব্যাতিরেকেই মা ও শিশু, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, মেডিসিন, চর্ম-যৌন (সেক্স) ও ব্যথা রোগে অভিজ্ঞ পরিচয় দিয়ে নিজ বাড়িতে ‘আম্বিয়া মেডিকেল হল’ নামে একটি চেম্বার খুলে নিয়মিত রোগী দেখছেন।
এরআগে দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে অভিযান পরিচালনা করে সোলায়মান মোল্লা নামে এক ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছিল সেসময় র্যাব-১১। গেল বছরের ৩ জুন রাত ৮টায় সিদ্ধিরগঞ্জের মা হাসপাতাল ও ল্যাব থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গ্রেপ্তারকৃত মো. সোলায়মান মোল্লা রাজবাড়ী জেলার গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা। এর আগেও একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন সোলায়মান মোল্লা। র্যাব অধিনায়ক লে. কর্ণেল ইমরান উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানান।