ধুলোর দাপটে নাসতানাবুদ শহরবাসী

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : ধুলোর দাপটে রীতিমতো নাসতানাবুদ হয়ে পড়েছে শহরবাসী। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে নাসিকের বিভন্ন ওয়ার্ডের শাখা সড়ক, সবজায়গায় একই অবস্থা। এ ধুলো দূষণের শিকার হয়ে নানা ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন নিরাপত্তা ছাড়াই চলাচলকারী অসচেতন নাগরিকরা। আবার এ থেকে নিস্তার পেতে কর্মব্যস্ত সচেতন মানুষ নাকে রুমাল চেপে বা মাস্ক পড়েও চলাচল করছেন। কিন্তু এ নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেনা দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এমন অভিযোগ শহরবাসীর।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের অন্যতম প্রবেশপথ চাষাঢ়া এলাকার প্রধান সড়কের অনেকস্থানেই পিচঢালাই নষ্ট হয়ে উঠে গেছে পাথর ও ইট। কিছুদূর সামনে এগুলে সড়কের মাঝখানে রয়েছে খানাখন্দ। এ কারণে ওই সড়কে প্রচুর ধুলোর সৃষ্টি হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) রুটিনমাফিক সড়ক পরিষ্কারের কাজ করলেও ছিটাচ্ছে না পানি। আবার কোথাও সড়কে নামে মাত্র ঝাড়ু দিলেও সেই আবর্জনা স্তুপ করে রাখা হচ্ছে সেই সড়কের উপরেই।

একই চিত্র নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের। এ সড়কে পানি ছিটানো তো দুরের কথা, সড়কটির আশপাশ অপরিচ্ছন্ন। কোথাও কোথাও ময়লা ফেলে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। ভিন্ন নয় শহরের মেট্রোহল ঘেসে যাওয়া সড়কটিও। সড়কের পাশেই বাসা-বাড়ি সহ বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও বাজারের আবর্জনা ফেলায় সেসব শুকিয়েও ধুলো তৈরি করছে।

ঘুরে আরো দেখা যায়, উন্নয়ন কার্যক্রম ছাড়াও সড়কগুলোর দুই পাশে বিভিন্ন স্থাপনা ও পুরাতন ভবন ভাঙা, নতুন ভবন তৈরির ইট-বালু-পাথর, মেশিনে ইটভাঙা ধুলা দূষণের প্রধান কারণ। ধুলোবালির পাশাপাশি যানবাহনের দূষিত কালো ধোঁয়াও মানুষের জন্য বিরক্তি ও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে পথচারী যুবক ফারুক বলেন, ধুলোবালির জন্য আমরা রাস্তায় হাঁটতে পারি না। বৃষ্টি হওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি পেলেও এরপর রৌদ আসলে সড়কে যে কাদা থাকে সেগুলো শুকিয়ে ধুলোতে পরিণত হয়। কিন্তু বালুগুলো যদি সড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হতো তাহলে এ অবস্থা হতো না। এছাড়াও সড়কে যদি দুই থেকে তিনবার পানি ছিটানো হতো তাহলে ধুলো থেকে কিছুটা হলেও নিস্তার পেতাম। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এর সমাধানে কোন কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছেনা।

সড়কের পাশে বসবাসরত ভবন মালিক, ভাড়াটিয়া ও দোকানদারদের অভিযোগ, মাত্র কয়েক কিলোমিটার যাতায়াতেই পাল্টে যাচ্ছে মানুষের চেহারা, বদলে যাচ্ছে জামা কাপড়ের রং। তাদের মতে বৃষ্টিতে  কাদা ও পানি আর শুকনো মৌসুমে ধুলোময় রাস্তাাঘাটের চিত্র দুর্ভোগের পরিবর্তিত রুপমাত্র। সড়কে চলমান যানবাহনের যাত্রীসাধারণের চেয়ে রাস্তার পাশে বসবাসরত জনগণ সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বালির কারণে তাদের বসতঘর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ঘরবাড়ির চিত্র পরিবর্তন হয়ে লাল হয়ে গেছে। ক্ষতবিক্ষত কার্পেটিং  বিহীন সড়কে যানবাহন চলাচল করায় দুপাশে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বার বার পরিষ্কার করতে দেখা যায়। অনেকেই ধুলো থেকে বাঁচতে রাস্তায় পানি ঢালতে দেখা যায়। তারপরও রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা সিটি করপোরেশনকে রীতিমত ট্যাক্স পরিশোধ করে থাকি। কিন্তু এসকল সেবার দিকে কর্তৃপক্ষের কিছুটা সুদৃষ্টি থাকলে আমরা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাই।

এ প্রসঙ্গে চিকিৎসকরা জানায়, ধুলা দূষণের কারণে জীবাণু মিশ্রিত ধুলায় শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, এলার্জি, চর্মরোগসহ নানা রোগব্যাধি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে হাঁপানি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের ট্রাফিক ইনচার্য মো. শরফুদ্দিন জানান, সারাদিন এই ধুলোর মধ্যে ডিউটি করে আমাদের নানা সমস্যায় ভোগতে হয়। একবেলায় পোশাকের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তাছাড়া সর্দি কাশিতো লেগেই থাকে। ধুলাবালির কারণে চোখে সমস্যা হয়, লাল হয়ে যায়।

add-content

আরও খবর

পঠিত