নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : সোনারগাঁয়ে দুই শিল্পপতির সম্পদের ঠান্ডা লড়াইয়ের বলি প্রথমে আরমান এবং আরমান হত্যাকান্ডের ঘটনা কে ধামাচাপা দিতেই পরে ঘাতকচক্র র্নিমমভাবে খুন করে ছাত্রলীগ নেতা রায়হান কে । আলোচিত এই দুই হত্যাকান্ডের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে ইতিমধ্যে তৎপর হয়ে উঠেছে একাধিক প্রভাবশালী মহল ।
উল্লেখিত দুই হত্যাকান্ডের ঘটনা থেকে বাঁচার জন্য মূল নায়কদের হাতে আরো একাধিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন সোনারগাঁবাসী । রায়হান হত্যাকান্ডের ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ এর এই প্রতিবেদক সরজমিনে গেলে নাম পরিচয় গোপন রাখার প্রতিশ্রুতিতে বিভিন্ন সূত্র থেকে বেরিয়ে আসে উপরুক্ত কথাগুলো ।
গত কয়েকদিন আগে র্যাব-১১ কর্তৃক আরমান হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামী সজীব র্যাবের হাতে আটক হলেও হত্যাকান্ডের নেপথ্যের নায়ক ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে। ঘাতক চক্রটি প্রথমে পুলিশ প্রশাসনসহ একটি বিশেষ পেশার লোকদের ম্যানেজ করার পর এখন ক্ষমতাশীন দলের নেতাদের ম্যানেজ করে প্রশাসন সহ উপর মহলে খুব জোড়ে সোড়ে তৎবির চালিয়ে যাচ্ছে । মাত্র কিছুদিনের ব্যাবধানে সংগঠিত হত্যাকান্ড দুটির মূল কারণ হিসেবে দাবী করছে দুজন শিল্পপতির ঠান্ডা লড়াই ও জমিজমা কাজের টাকার ভাগাভাগির ঘটনাকে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কামারগাঁও এলাকায় ২টি শিল্পকারখানা চৌতি ও ফ্রেশ কম্পানীর বালু ভরাটের টাকা ভাগ ভাটোয়ারার ও অংশিদারের টাকাকে কেন্দ্র করে প্রথমে খুন হয় আরমান এবং নিহত আরমানের রক্ত শুকানোর আগেই র্নিমমভাবে খুন হয় রায়হান ।
সূত্রটি আরো জানায়, সোনারগাঁ উপজেলার কামারগাঁও এলাকায় ২টি শিল্পকারখানা চৌতি ও ফ্রেশ কম্পানীর বালু ভরাটের টাকা ভাগ ভাটোয়ারার নিয়ে প্রথমে ঝগড়া হয় রায়হানের সাথে তার বন্ধুদের । সংগঠিত বিরোধের মিমাংশার কথা বলে ঘাতকরা ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে ধারালো ছুরিকাঘাত করে ছাত্রলীগ নেতা রায়হান প্রধানকে হত্যা করা হয় ।
র্নিমমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার রায়হানের পরিবারের সদস্যরা জানায়, এ ঘটনায় গত ২৮জানুয়ারীতে ঢাকা শাহবাগ থানায় সোহাগ রনি ও ২৯ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় নিহতের ছোট ভাই ইমরান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করছেনা পুলিশ, দাবি পরিবার ও এলকাবাসীর ।
এলাকাবাসী জানায়, সোনারগাঁ পৌরসভার টিপরদী চৈতি কম্পোজিটের সামনে সামছুউদ্দিন মার্কেটে ২য় তলায় জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের অফিসে গত বৃহস্পতিবার দেড়টার দিকে চৈতি ও ফ্রেশ কোম্পানীর বালু ভরাট কাজের টাকার ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে বন্ধুদের মধ্যে তর্ক বিতর্ক হয়। তর্ক বির্তকের এক পর্যায়ে সংঘর্ষের জড়িয়ে পড়েন মামলা আসামী মোহনসহ তার সাথে থাকা ৫-৮ জন বন্ধু ও নিহত রায়হান । রায়হান মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের আব্দুস সোবহান প্রধানের ছেলে। বন্ধুদের ঝগড়া এবং পূর্বের কোন্দলের কারনেই কাল হয়ে দাঁড়ায় সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী রায়হান প্রধানকে নির্মমভাবে চাইনিজ কোড়াল দিয়ে হত্যা করে।
একাদিক সূত্র থেকে জানা যায় মেঘনা গ্রুপের সিমানা র্নিধারিত বাউন্ডারী ঠিকাদার রনি, আলমগীর, আলআমিন, পূর্বে কাজ করতো কিন্তু পরর্বতীতে ঠিকাদারীর কাজ নিহত রায়হান পাওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে মেঘনা গ্রুপের বালুর মাঠে বন্ধুদের মধ্যে মৌখিক র্তকবির্তক হয় । পরবর্তীতে এনিয়ে উভয়ের মধ্যে সমঝতার কথা বলে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন সোনারগাঁ উপজেলা শাখা অফিসে রায়হানকে ডেকে নিয়ে তারই বন্ধুও মামলার আসামী আলাল । এরই মধ্যে আসামী আলালের একটি ফোনা আলাপের রেকডিং সোনারগাঁ থানা পুলিশের হাতে মামলার বাদী জমা দিলেও এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করছেনা পুলিশ। এই অভিযোগ মামলার বাদী ইমরানের।
ওই ফোন আলাপের মধ্যে স্পষ্টভাবে আসামী আলাল ভীতভাবে বলছে রায়হান হত্যা সংঘঠিত মূহুর্তের সময় রনি, আলমগীর, আলআমিন, মোহনসহ ৭-৮ জন মিলে রায়হানের উপর হামলা চালায় । এ পরিস্থিতি দেখে আলাল বলেন , আমি মোহনের উপর ঝাপিয়ে পরি এবং ছোরা দিয়ে মোহনকে আঘাত করার চেষ্টা করি, কিন্তু ঠিক ওই মূহুর্তে মোহনের সাথে থাকা ৭-৮ জন বন্ধু আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে বাহিরে মারধর করতে থাকে । আলাল আরো বলেন, এক পর্যায়ে আমি রায়হানের চিৎকার শুনি । বাচাঁও বাচাঁও আত্বচিৎকার করতে থাকা রায়হান বেশ কিছুক্ষণ চিৎকার করে এক পর্যায়ে সে অচেতন হয়ে পড়ে।
এদিকে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ মো: মঞ্জুর কাদের পিপিএম কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার সময় আলালের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন রায়হান প্রধান। মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হলে সেখানে বিকেল ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রায়হান প্রধান মৃত্যু বরন করেন । এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে নিহতের ছোট ভাই ইমরান হোসেন বাদী হয়ে ২ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন । অপর দিকে মামলার বাদী নিহতের ছোট ভাই ইমরান সাংবাদিকদের জানায়, হত্যাকান্ডের জড়িত ২ জনের বিরুদ্ধে আমি মামলা করলেও, গ্রেফতার বা অগ্রগতি নেই।
নিহতের পরিবার আরো জানায় , মামলা দায়েরের পর হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীরা বীরদর্পে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই সাথে পরিবারটিকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে মামলা থেকে তাদের নাম প্রত্যাহারের জন্য । বিষয়টি নিয়ে পরিবার শংকিত ও আতংকগ্রস্থবস্থায় দিনযাপন করছে এবং প্রশাসনের উর্ধতন পক্ষের কাছে জোড় দাবি জানিয়েছে মামলাটি তদন্ত পূর্বক মূল ঘাতকসহ পরিকল্পনাকারীদের তালিকাভুক্ত করে অভিলম্বে গ্রেফতারের জন্য। তা না হলে আবার ও রক্তে রঞ্জিত হতে পারে সোনারগাঁয়ের পবিত্র মাটি ।