নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বরখাস্কৃত সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) সালাউদ্দিনকে(২৫) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। তার বাসা থেকে দুটি বাসা থেকে ৫ হাজার ৬২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এসময় মাদক বিক্রির ৯ লাখ ৪০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার রাতে শহরের নগরখানপুর ও সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকায় ফ্রেন্ডস টাওয়ার এ দুটি বাসায় অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করে র্যাব।
র্যাব-১১ এর সিনিয়র এএসপি জসিম উদ্দীন চৌধুরী পিপিএম জানান, সাম্প্রতিক সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জের বেশ কয়েকজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়িকে র্যাব গ্রেফতার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সালাউদ্দিন নামক একজন পাইকারি ইয়াবা বিক্রেতার নাম উঠে আসে যে নিজের প্রাইভেট কারে করে
ইয়াবা বিক্রেতাদের কাছে ইয়াবা পৌঁছে দেয়। কয়েকদিন আগে গোপনসূত্রে কদমতলী এলাকায় ফ্রেন্ডস টাওয়ারে সালাউদ্দিনের একটি ভাড়া বাসার সন্ধান পাওয়ার পর র্যাব-১১ ওই বাসার উপর নজরদারী শুরু করে। এক পর্যায়ে সোমবার সন্ধ্যায় ৭ টার দিকে কদমতলীর ফ্রেন্ডস টাওয়ারের ভাড়া বাসায় সালাউদ্দিনের অবস্থান জানতে পেরে র্যাব-১১ অভিযান চালায়।
র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সালাউদ্দিন ও তার ড্রাইভার জাসিম পালিয়ে গেলেও, তার সহকারী সুমন গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারকৃত সুমনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বাসার মালিক আলমাস ও কেয়ার-টেকারকে সঙ্গে নিয়ে সালাউদ্দিনের বাসায় তল্লশী চালিয়ে ৫ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির ৮ লাখ ৫০ হাজার ৪০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে রাত ৯টায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানার নগরখানপুর এলাকায় সালাউদ্দিনের অপর ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে ৪০০ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব আরো জানায়, গ্রেফতারকৃত সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, উদ্ধারকৃত ইয়াবা ও টাকার মালিক সালাউদ্দিন পুলিশের একজন বরখাস্থকৃত এএসআই। মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে প্রায় ৭ মাস পূর্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা থেকে সে বরখাস্থ হয়। সেই থেকে সালাউদ্দিন পলাতক রয়েছে বলে জানা যায়। তবে পলাতক হলেও সে এখনো নারায়ণগঞ্জ ডিবির অফিসার পরিচয় দিয়ে চলে। স্থানীয় লোকজন তাকে সালাউদ্দিন স্যার ও ডিবির স্যার হিসেবে চিনে।
র্যাব জানায়, ইতোমধ্যে সে মাদক ব্যবসা করে অগাধ অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছে। নিজ মালিকানাধীন ৩ টি প্রাইভেটকার রয়েছে, যেগুলো ইয়াবা পরিবহন ও সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত হয়। জাসিম, ওসমান ও বাহাদুর নামের তিনজন ব্যক্তিগত ড্রাইভারও আছে। নারায়ণগঞ্জ শহরে রয়েছে জেন্টস পার্লার নামক বিউটি পার্লার। মাদক ব্যবসার আর্থিক হিসাব দেখাশোনার জন্য রয়েছে ব্যক্তিগত সহকারি। গ্রেফতারকৃত সুমন বেতনভোগী কর্মচারি হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত সালাউদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারির দায়িত্ব পালন করে আসছে। জাসিম, ওসমান ও বাহাদুর প্রাইভেটকারে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন মাদক স্পটে নিয়মিত ইয়াবা পৌঁছে দেয়।
ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে সুমন সালাউদ্দিনের নির্দেশ মতে ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিং ও এসএ পরিবহনের মাধ্যমে কক্সবাজারের ইয়াবা সরবরাহকারীদের কাছে নিয়মিত টাকা পাঠিয়ে থাকে।
র্যাব জানায়, বরখাস্তকৃত এএসআই সালাউদ্দিন পুলিশের ডিউটির ধরণ, মাদক বিরোধী অভিযানের পদ্ধতিসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রনে পুলিশের কর্মকৌশল সম্পর্কে ধারণা থাকায় সে আইন শৃংখলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে সহজেই মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দুইটি মামলা রজু করা হবে বলে র্যাব জানিয়েছে।