নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪: বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মক্তির দাবীতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি, যতোদিন পর্যন্ত তাকে মুক্তি দেওয়া না হবে ততোদিন পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবো।
তিনি আরো বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দিয়ে গেছেন। সে অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছি। তাকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ চলবে।
এসময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে প্রচুর নেতাকর্মী উপস্থিত থাকলেও মহানগর বিএনপির ৭জন নেতাকে ডিসির কক্ষে প্রবেশ করার অনুমতি দেয় পুলিশ।
রোববার বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়ার কাছে এ স্মারক রিপি দেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ভাষানী, অ্যাড. রাকিবুল হাসান শিমুল।
স্মারক লিপিতে যা উল্লেখ করা হয়
জেলা প্রশাসক বরাবরে জমা দেয়া স্মারকলিপিতে বিএনপি উল্লেখ করে, জাল নথির ওপর ভিত্তি করে সাজানো মামলায় প্রতিহিংসামূলক বিচারে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দী করা হয়েছে। বানোয়াট মামলায় বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে সাজা প্রদান সম্পূর্নরুপে রাজনৈতিক উদ্দেম্যপ্রণোদি। জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন, তাই তাঁর বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়টি প্রহসনমূলক ও বিস্ময়কর। কারন জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্টের টাকা তসরুপের কোন ঘটনাই ঘটেনি, বেগম জিয়ার কোথাও কোন স্বাক্ষর নেই এবং কোথাও তাঁর কোন সংশ্লিষ্টতাও নেই।
বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় ঘোষনাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন আগে থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড় ও জুলুম অব্যাহত আছে। বিএনপি’র শান্তিপূর্ন প্রতিবাদ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সরকারের আচরণই বলে দেয়-তারা তাদের কাঙ্খিত দুরভীসন্ধিমূলক রায়টি পেয়ে গেছে।
কথিত বিচারের নামে সাজা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো সরকারের হীন সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনারই অংশ। বহুদলীয় গণতন্ত্রকে চিরদিনের জন্য বিদায় করে আগামী নির্বাচন পুনরায় একতরফাভাবে করতে একদলীয় দুঃশাসনকে চিরস্থায়ী করাই এদের মূল লক্ষ্য। এই ফরমায়েসী রায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার এক হিংসাশ্রয়ী পরিকল্পনা।
যে নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য, নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য অবিরাম সংগ্রামে অবিচল নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁকে কখনোই তাঁর জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।
দেশে এক দুঃসহ অবস্থা বিরাজ করছে বলেই ন্যায়বিচার, ইনসাফ অদৃশ্য হয়ে গেছে। বেগম জিয়াকে কারাগারে বন্দী করেও তাঁর ওপর চালানো হচ্ছে অমানবিক নির্যাতন। দুই শতাব্দী প্রাচীন জনমানবহীন জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবনে তাঁকে অন্তরীন করে রাখা হয়েছে। তিনি সেখানে কী অবস্থায় আছেন সেটি নিয়েও পরস্পরবিরোধী কথা বলছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা। এক অমানবিক আদিম নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছেন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
বেগম জিয়ার ওপর সকল প্রকার হয়রানী ও হেনস্তার অবসান ও নিঃশর্ত মুক্তির জন্য প্রহর গুনছে দেশবাসী। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তবাদী দল-বিএনপি নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি এবং তাঁর ওপর সব ধরনের নির্যাতনমূলক কর্মকান্ড থেকে সরকারকে বিরত থাকার জন্য আপনার মাধ্যমে আহ্বান জানাচ্ছি