জামাতাকে বাঁচিয়ে ধর্ষণের দায়ে কারাগারে শ্বশুর !

ডাক্তারের প্রতিবেদনে জানা যাবে গৃহপরিচারিকার ধর্ষকের পরিচয়

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪  ( বিশেষ প্রতিবেদক ) : শহরের আল্লামা ইকবাল রোডে গৃহ পরিচারিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে গৃহকর্তা এসএম সালাউদ্দিনকে (৬৮) গ্রেফতারের ঘটনায় এলাকায় চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ১৩ বছর বয়সী কিশোরী বর্তমানে ৭ মাসের অন্ত:সত্বা বলে জানা গেছে। এ ঘটনার খবর ফতুল্লা থানা পুলিশের কাছে পৌছালে সোমবার বিকালে সালাউদ্দিনের মেয়ের জামাতা সজিবকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

জানা গেছে, ওইসময়ই গণমাধ্যমকর্মীদের সামনেই জামাতা সজিব ভুক্তভোগীকে কয়েকবার হুমকিও দেয়। পরে তাকে ছুটিয়ে আনতে বিভিন্ন তদবিরে ব্যর্থ হলে জামাতাকে বাঁচাতে নিজেকে বলি দেন শ্বশুর। বিকালেই মেয়ের সাথে থানায় হাজির হন সালাহ উদ্দিন। এরপর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বৃদ্ধ সালাউদ্দিনকে সোমবার রাতে আটক করে পুলিশ। আর তাই নাটকীয় এই গ্রেফতারে জনমনে প্রশ্ন উঠে। এছাড়াও সূষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করতে পরীক্ষা নিরীক্ষার দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী। এদিকে গতকাল গৃহ পরিচারিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে গৃহকর্তা এসএম সালাউদ্দিনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ ব্যপারে স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃদ্ধ গৃহকর্তা সালাহ উদ্দিন কয়েকমাস আগেও গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীণ ছিল। তাঁর পরিবারে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।  যারা আল্লামা ইকবাল রোডের চারতলা ভবনের বিভিন্ন ফ্লাটে বসবাস করত। এছাড়াও প্রায়শই এ ভবনেই তার মেয়ে শুভ’র জামাতা সজিব সহ ছেলে সোহেলের স্ত্রী ও বসবাস করত। তবে এরআগে কখনও গৃহকর্তা সালাহ উদ্দিনের আচরণে এ ধরণের কোন অভিযোগ উঠেনি। অনেকরই ধারণা পারিবারিক কোলহ ও সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে একটি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন সালাহ উদ্দিন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাশের বাড়ির একজন জানায়, সালাহ উদ্দিন পরিবারে একসাথে বসবাস করলেও তাদের মধ্যে অমিল ছিল। তার স্ত্রী ফরিদা বেগম সানরাইজ কিন্ডার গার্টেন নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালাতেন। তার মেয়ে শুভ এ নিয়ে দুইটি বিবাহ করেছে। এর আগের স্বামীও পরিবারের অমিল ও নানা ঝামেলা দেখে স্ত্রী শুভ’র সাথে বিচ্ছেদ করেছে। পরে সজিবের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু জামাতা সজিব বেশীর ভাগ সময়ই স্ত্রীর সাথে শ্বশুর বাড়িতে থাকতো। তার চলাফেরাও তেমন ভালো ছিলনা, আচরণও ছিল অসভ্য।

এদিকে এঘটনার পর তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। ৮ মাস আগে কিশোরী ঐ বাড়িতে কাজে যোগদান করে। এরই মধ্যে কিশোরী ৭ মাসের অন্ত:স্বত্বা হয়ে পড়ে! বিষয়টি প্রতিবেশীদের কানে চলে যায়। তবে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে অপরাধী ভয়ভীতি দেখানোর কারণে এতদিন জানাজানি হয়নি।

কিশোরী জানায়, নিজ বাড়িতেই একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। সোমবার রাতেই এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করার প্রস্তুতী নিয়েছে পুলিশ।

আল্লামা ইকবাল রোডের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানায়, ঘটনাটি ভিন্ন রকম মনে হয়েছে। তবে কিশোরীর জবানবন্দী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে যাওয়াতে বিষয়টি নিয়ে কেউ কোন কথা বলা বলছে না। ঘটনাটি ভিন্নখাতে হয়তো তার পরিবারের লোকজনই প্রবাহিত করেছে।

এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) হাসানুজ্জামান জানায়, আমরা আলট্রাসনোগ্রাম করেছিলাম মেয়েটি সাত মাসের অন্ত:সত্বা। অভিযুক্ত সালাহ উদ্দিন নিজে স্বিকারোক্তি দিয়েছে। সেক্ষেত্রে কিছু করার থাকেনা। তাছাড়া ২২ ও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী নিয়েছি। মেয়ে নিজেই এই মামলার বাদী। ভুক্তভোগীও জবানবন্দী দিয়েছে।

পারিবারিক কোলহ ও স্থানীয়দের ধারণার বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত সাপেক্ষে কোন পরীক্ষা নিরাক্ষার রির্পোট আপনারা যাচাই বাছাই করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, ডাক্তারী বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। এখনো হাতে পাইনি।

add-content

আরও খবর

পঠিত