নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর হাতে যৌনহেনস্থার শিকার হওয়ার ঘটনা ফেসবুকে প্রকাশ করে গতবছর তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি৷ বিষয়টি এখন ইন্টারপোল তদন্ত করছে। গতবছর ফেসবুক লাইভে এক গুরুতর অভিযোগ তোলেন সাবেক মিস আয়ারল্যান্ড মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি৷ বাংলাদেশ বিংশোদ্ভূত এই মডেল দাবি করেন, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে এক ব্যবসায়ী তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল৷
সেই ঘটনা নিয়ে এমন একসময় মুখ খোলেন প্রিয়তি যখন গোটা বিশ্বেই ইংরেজিতে মিটু হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে অনেক নারীই যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা জানাচ্ছিলেন৷ সেসময় বাংলাদেশের অল্প কয়েকজন নারী অবশ্য এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন৷ প্রিয়তি তাদের একজন৷
টন্টনে বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলা দেখা শেষে এক সাক্ষাৎকারে প্রিয়তি জানান, যৌন হয়রানির বিষয়ে আয়ারল্যান্ডের পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি৷ বিষয়টি তদন্ত করছে ইন্টারপোল৷ তবে, বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম তাঁর অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ থেকে দূরে থেকেছে বলেও দাবি করেন তিনি৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে
তবে এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম রফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তখন তিনি সাফ জানিয়েছিলেন, ঘটনাটি ১০০ ভাগ মিথ্যে। সে সাড়ে ৩ বছর আগের ঘটনা নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। যদি সত্য হতো তাহলে সাড়ে ৩ বছর আগে বললো না কেন? এখন কেন বলছে? আমি মনে করি এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
উল্লেখ্য, রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়ণের চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম তার উপর যৌন নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রিয়তি। এমনকি তাকে রেপ করতে চেয়েছিলেন। যা প্রিয়তি ভিডিও বার্তায় প্রকাশ করেছেন।
গতবছর ৩০ অক্টোবর (মঙ্গলবার) প্রিয়তি তার ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেন, তা হুবহু তোলে ধরা হলো-এই লোকটি তার অফিসে হঠাৎ করে টেবিল থেকে উঠে এসে আমার জামার ভিতর হাত ঢুকিয়ে আমার বক্ষে চাপ দেয়, ২০১৫ সালের মে মাসে তাদের প্রোডাক্ট প্রমেক্স-এর বিজ্ঞাপনের পেমেন্ট আনতে গিয়ে (এই পেমেন্ট যদিও আমি পাইনি)। সাঈদা যেমিরান জামান লোপা আপু, আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, আপনাকে রুম থেকে বের করে দিয়েছিল আমার সাথে প্রাইভেট কথা আছে এই কথা বলে। আর রুম থেকে বের হয়ে আমি আপনার কাছে কান্না করেছিলাম এই পিশাচের এই কর্মকান্ডে, মনে আছে আপু , নাকি অস্বীকার করবেন? খালেদ হোসাইন সুজন, তোমার কি মনে আছে এ ঘটনার পর আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কান্না করেছিলাম এই অপমান সহ্য করতে না পেরে কিন্তু আমরা নিরুপায় ছিলাম তাদের ক্ষমতার কাছে। আমি কিন্তু তখন কারেন্ট মিস আয়ারল্যান্ড ছিলাম।
প্রিয়তি তার ওই পোস্টে আরও লিখেন, বাংলাদেশে #মিটু এর মুভমেন্ট কীভাবে হবে? এই লোককে নিয়ে কেউ কোনো নিউজ করবে না, কারণ গণমাধ্যম তাদের ভয় পায়, সাংবাদিকদের চাকরি চলে যাবে। কারণ বেশিরভাগ টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা তাদের হাতের মুঠোয়। কীভাবে খুলবে মেয়েরা মুখ? যেখানে জানবে তাদের কিছুই হবে না। এই লোকটির নাম রফিকুল ইসলাম, রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং বসুন্ধরা গ্রুপের ডান হাত। এই পোস্টের পর হয়তো আমার নামে মানহানির মামলা হবে , না হয় বলবে অসৎ উদ্দেশ্য আছে আমার ইত্যাদি ইত্যাদি। বাংলাদেশের মেয়েরা ততদিন মুখ খুলবে না, #মিটু ও হবে না, ভারতের মতো যতদিন ওরা অনুভব করবে তাদের জন্য বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্বাধীন এবং তাদের পাশে থাকবে সে যত উপরের মানুষই হোক না কেন। আমি শুধু এতটুকু বলতে চাই, পুরো ঘটনাটি লজ্জায় লিখতে পারিনি কারণ ঘটনা এর চেয়ে ভয়াবহ ছিল।