নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ভবনে গ্যাস সিলিণ্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক। এ সময় তিনি দগ্ধদের দেখে মর্মাহত হন। পরিবারের নিহতদের জন্য তিনি ৪০ হাজার টাকা, লাশ আনার ব্যাবস্থা ও দাফন-কাফনের ব্যবস্থা গ্রহর করেন তিনি। এছাড়াও সার্বিক সহযোগীতার আশ্বাস দেন ইউএনও নাহিদা বারিক। ১১ই মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন দগ্ধদের দেখতে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে যান সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক। সেখানে গিয়ে তিনি বিস্ফোরণে দগ্ধদের সান্তনা দেন এবং পরিবারের নিহতদের জন্য তিনি ৪০ হাজার টাকা সহ লাশ আনার ব্যবস্থা ও দাফন-কাফনের ব্যবস্থা গ্রহন করেন।
এদিকে ফতুল্লায় ভবনে গ্যাস সিলিণ্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ একই পরিবারের ৬ সদস্যের মধ্যে ১১ই মার্চ বৃহস্পতিবার আরো ১ জনের মৃত্যু হয়। তার নাম মাহফুজ। বয়স ১২ বছর । এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাড়ায় দুই জন। এর আগে ৯ই মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবস্থায় গৃহকর্তা মিশাল মারা যান।
তাছাড়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক দগ্ধ পরিবারের সদস্যদের দেখতে গিয়ে যখন ছোট্ট শিশুটিকে ব্যাথায় কাতরাতে দেখেন তখন তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এসময় তিনি বলেন, সমাজের মানুষদের গ্যাস ব্যাবহারে আরও অনেক সচেতন হতে হবে। রান্না শেষ হওয়ার পর চুলার চাবি ঠিকমতো বন্ধ হয়েছে কিনা সেটা ভালো ভাবে খেয়াল করতে হবে। অযথা চুলা জ্বালিয়ে রাখা যাবে না এবং চুলা জ্বালিয়ে কোন প্রকার কাপড় শুকানো যাবে না।
তিনি আরো বলেন , আমি এই পরিবারের পাশে আছি। তাদের জন্য আমি সদর উপজেলার পক্ষ থেকে এবং আমি ব্যাক্তিগত ভাবে প্রয়োজনীয় যা আছে করবো। আমি তাদের পাশে আছি।
এর আগে ৮ই মার্চ সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় মাসদাইর পতেঙ্গার মোড় এলাকায় নাসরিন আক্তারের মালিকানাধিন ছয় তলা ভবনের হাজী ভিলার ষষ্ঠ তলায় ভাড়াটিয়ার একটি ফ্ল্যাটে এ অগ্নিকান্ড ঘটে। এতে দগ্ধদের প্রথমে শহরের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে মেডিক্যাল অফিসার গেলাম মোস্তফা তাদের শেখ হাসিনা বার্ণ ইনস্টিটিউটে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে আশংকাজনক অবস্থায় দগ্ধ সকলকে বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
আগুনের দগ্ধরা হলো : গার্মেন্টস শ্রমিক মিশাল, তার স্ত্রী মিতা, তাদের দেড় বছর বয়সের শিশু সন্তান মিনহাজ এবং মিশালের দুই শ্যালক হোসিয়ারি শ্রমিক মাহফুজ ও সজীব। এদিকে আগুনের খবর পেয়ে মন্ডলপাড়া ফায়ার স্টেশনের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। তবে তার আগেই আগুন নিভিয়ে ফেলেন স্থানীয়রা। আগুনে ওই ফ্ল্যাটের অধিকাংশ আসবাবপত্র পুঁড়ে যায়। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা।
দগ্ধ মিতার মা রাহেলা বেগম বলেন, রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরেন মিশাল। অন্যরা বাড়িতেই ছিল। কিছুক্ষণ পরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়।
নারায়ণগঞ্জ শহরের মন্ডলপাড়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার বেলাল হোসেন জানান, গ্যাসের চূলার লিকেজ থেকে গ্যাস নির্গত হয়ে ওই ফ্ল্যাটের বিভিন্ন রুমে তা জমাট বেঁধে থাকে। রাতে খাওয়ার পর পরিবারের কেউ গ্যাসের চুুুলা অথবা সিগারেট জ্বালানোর উদ্দেশ্যে আগুন জ্বালালে মূহুর্তের মধ্যে ঘরে আগুন ধরে যায় এবং অন্যান্য রুমে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পরিবারের ৬ জন দগ্ধ হন। তাদের ডাক চিৎকারে বাড়ির অন্যান্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা এসে আগুন নেভিয়ে ফেলে।