খাদ্য সহায়তা চেয়ে উল্টো শাস্তি, তদন্তে সময় চাইলো কমিটি

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪  : জাতীয় হটলাইন ৩৩৩ নম্বরে খাদ্য সহযোগিতা চেয়ে কল করে শাস্তির মুখে পড়া ফরিদ আহমেদ এর ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি আরও দিনের সময় চেয়েছে। আজ ২৬ই মে বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও সাতদিনের সময় চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করে কমিটি।

ফরিদ আহমদের ঘটনায় প্রকৃত সত্য কী এবং কারও দায়িত্বে গাফিলতি ছিল কিনা তা জানতে গত ২৩ই মে দুপুরে রবিবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শামীম বেপারীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, জেলা ত্রাণ পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম সহকারী কমিশনার মো.কামরুল হাসান মারুফ।

জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, তদন্ত কমিটিকে তিনদিনের সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে কমিটি আরও সাতদিনের সময় চেয়ে মেইল করেছে। সরকারি ছুটির দিন হওয়াতে আগামীকাল অফিসিয়ালি তাদের সময় দেওয়া হবে। তবে কতদিন সময় দেওয়া হবে তা সরাসরি কমিটির সঙ্গে কথা বলে বিবেচনা করা হবে।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের নম্বর ওয়ার্ডের নাগবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ ফরিদ আহমদ। ঘরে তার ১৬ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলে, স্নাতক পড়ুয়া মেয়ে স্ত্রী রয়েছে। এক সময়ে স্থানীয় এক হোসিয়ারি কারখানায় কাটিং মাস্টার হিসেবে কাজ করতেন। তিনবার ব্রেন স্ট্রোক করার পর ক্ষীণ দৃষ্টি শক্তিসম্পন্ন ফরিদ এখন কাজ করতে পারেন না। ওই কারখানাতেই শ্রমিকদের উপর নজরদারি রাখা মালামাল ওঠানো নামানো কাজের জন্য মাসে হাজার টাকা পান তিনি। তাতে কষ্টে চলছিল তার সংসার। তবে করোনাকালীন সময়ে পড়েছেন মহাসংকটে। একরকম নিরুপায় হয়েই জাতীয় কল সেন্টারের ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্য সহায়তা চান ফরিদ। কিন্তু সহায়তা তো পাননি, উল্টো তিনি চারতলা ভবনের মালিক এমন মিথ্যা তথ্যের কারণে জরিমানা গুণতে হয়েছে তাকে। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরার নির্দেশে তাকে ১০০ জনের মাঝে চাল, আলু, ডাল, লবণ ইত্যাদি খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করতে হয়েছে। নিজের স্ত্রী ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর গয়না বন্ধক দিয়ে ধারদেনা করে বিতরণের জন্য এসব খাদ্যসামগ্রী কিনেছেন বলেও জানান। এমনকি স্থানীয় ইউপি সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা আইয়ুব আলীর থেকেও ধার নিয়েছিলেন ১০ হাজার টাকা।

ফরিদ আহমদের করুণ অবস্থার কথা স্থানীয় জাতীয় গণমাধ্যমে প্রচার হলে নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত ফরিদ আহমদের পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে উপজেলা প্রশাসন বা স্থানীয় ইউপি সদস্য নয় ফরিদ আহমদের পরিবারকে ৬০ হাজার টাকা প্রদান করেন শাহীনূর আলম নামে স্থানীয় এক ধনাঢ্য ব্যক্তি। তিনি ওই এলাকার পঞ্চায়েত কমিটির উপদেষ্টা। প্রশাসনের অনুরোধে নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এই টাকা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

add-content

আরও খবর

পঠিত