নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্পকলা সদ্য বিদায়ী কালচারাল অফিসার সৈয়দা শাহিদা বেগম তার বক্তব্যে মিথ্যাচার করেছেন বলে দাবি করেছেন কন্ঠ শিল্পী জি.এম রহমান রনি। সৈয়দা শাহিদা বেগম এর ওই সব বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জি.এম রহমান রনি বলেছেন, শাহিদা বেগম এর অশালীন আচরণের জন্য আমরা শিল্পীরা খুবই কষ্টে ছিলাম।
একটা কী-বোর্ড বাজানোর দায়িত্বে আমি ছিলাম সেটা আমি স্বীকার করি। আর সেটা ছিল লক্ষ টাকার মূল্যবান কী-বোর্ড। যা কিনা সংরক্ষন করে রাখাও আমার দায়িত্ব। তাই আমি লক করে রেখেছিলাম। কিন্তু একটি অনুষ্ঠানে আমার অনুপস্থিতে কালচারাল অফিসার শাহিদা বেগম জনৈক সহ-শিল্পীকে দিয়ে সে লকটি খুলে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে স্বার্থপরতা কোথায় হলো ? তিনি তো ষড়যন্ত্রের প্রক্রিয়া হিসেবে উদ্দেশ্যেমূলকভাবে এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেছেন আমি শুধু আমার পছন্দ শিল্পীদের দিয়ে গান করাতাম, যা বিস্মিত হাসকর বক্তব্য। কারন কালচারাল অফিসার আমি নই, অনার নিদের্শেই করা হয়। এতে একজন কালচারাল অফিসার হিসেবে তার অনাভিজ্ঞতা, অপেশাদারিত্ব মনোভাবে প্রকাশ পায়।
আমার চুক্তি বাতিলের বিষয় তিনি যা বললেন, যা নাকি এর আগে শেষ হয়েছিল। তারপরেও যে কয়েক মাস কাজ করেছি তার পারিশ্রামিক আজও পাইনি। বিগত ১৭ থেকে ১৮ বছর যা ঘটেনি তিনি সেগুলো করেছেন। বরং তিনি অবৈধভাবে আমার নিয়োগ চুক্তি বাতিল প্রক্রিয়া করেন। জেলা প্রশাসকের নাম ভাঙ্গিয়ে, পুলিশের ভয় দেখিয়ে প্রতিনিয়ত আমার সাথে র্দুব্যবহার করতো। নিয়ম অনুযায়ী আমার কোন অপরাধ থাকলে কারন দর্শানোর নোটিশ দিতে পারতেন। এবিষয়ে আমি তৎকালিন জেলা প্রশাসক, এডিসি (শিক্ষা), বাংলাদেশ শিল্পকলার তৎকালিন মহাপরিচালকে অবহিত করেছেন।
তৎকালিন সময়ে কালচারাল অফিসার সৈয়দা শাহিদা বেগমের র্দুব্যবহারে শিল্পীরা অতিষ্ট হয়েছেন। আমি তাকে অনুরোধ করেছিলাম শিল্পীদের সাথে এমন ব্যবহার করলে আমরা কষ্ট পাই। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। তার অনিয়ম ও অর্থ কেলেংকারী আছে বলে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অথচ তিনি কিভাবে প্রমান ছাড়া আমার বিষয়ে এধরনের বক্তব্য প্রদান করেন, তা আমার বোধগ্রাম্য হয় না। তাই আমি এর একটি সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
পরিশেষে বলতে চাই শিল্পকলাকে আমি ভালোবাসি বলেই এতো কথা বলা। নিরবে দু:খে দীর্ঘ ৪ বছর নিজেকে দূরে রেখেছিলাম। তবে শিল্পীদের নিয়ে কাজ করি তাই তাদের সম্মান আমার কাছে বড়। প্রত্যাশা রইবে নব-নিযুক্ত শিল্পকলা কালচারাল অফিসার আমাদের সার্বিক সহাযোগিতায় পাশে থাকবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই শুক্রবার বেলা ১২টায় নগরীর আমলাপাড়া গার্লস স্কুলের হল রুমে শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষকদের উদ্যোগে আয়োজিত বিদায়ী অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ খুবই ভাল। তার অনেক আন্তরিক। আমার সঙ্গে শুধুমাত্র একজন শিল্পী ব্যাতিত সবার সঙ্গেই সুসম্পর্ক ছিল আর সেই একজনই হলে জি.এম রহমান রনি। এই রনি একজন শিল্পী দাবি করলেও তার কাছ থেকে শিল্পী সূলভ কোন আচরণই আমি পাইনি। তিনি যখন শিল্পকলা একাডেমির গানের শিক্ষক হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন তখন তার কথা মতো কাজ করতে হতো নইলে কোন না কোন সমস্যা করে রাখতো। একবার একটি জাতীয় প্রোগ্রামে তার সাউন্ড ভাড়া না নেয়ায় সে আমাদের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করেন।
কী-বোর্ড লক করে রেখেছিলেন। ১ ঘন্টা সময় পার হওয়ার পরও প্রোগ্রাম শুরু করতে পারিনি। উপায়ন্তর না পেয়ে আমজাদ ভাইকে কল দিয়ে তাকে এনে কী-বোর্ডের লক ছুটিয়ে তারপর গান শুরু হয়। আর সব সময় তার লোকজনদেরকেই গান গাওয়াতো অন্য শিল্পীদের কোন সুযোগই সে দিতে চাইতো না। আর রনি থাকাকালে প্রতিদিনই আমাদের শিল্পকলায় ঝগড়া হতো। বিষয়টি এক পর্যায়ে ডিসি স্যার এবং ডিজি স্যারের নলেজে গেলে তারা মুহুর্তের মধ্যে রনির চুক্তি বাতিল করে দেন। তাকে বাদ দেয়ার পর কই এখনতো একদিনও ঝগড়া কিংবা মনোমালিন্যতা হয় না। তাছাড়া আমিতো এখন আর নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্পকলার অধীনে নেই, ঢাকা শিল্পকলায় আছি সুতরাং অতো হিসেব করে লাভ নেই। যা সত্যি তা বলতেই হবে। রনি একজন খুবই স্বার্থপর।