নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিনিধি ) : করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় চলছে কঠোর লকডাউন। যে কারণে নির্বাচন নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দর উপজেলার ইউনিয়নগুলো সম্ভাব্য প্রার্থীদের সরগরম দেখা গেলেও আপাতত স্থগিত। ঘোষণা করা হয়নি তফসিলও।
যদিও ইতমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি একেএম সেলিম ওসমান তার পছন্দের ব্যক্তিদের নিজের সমর্থন ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এমপি সেলিম ওসমানের সমর্থন নিয়েও জনগনের সর্মথনে পিছিয়ে তারা। এরমধ্যে দুটি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান তারা। একজন বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার প্রধান অপরজন আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি। তবে এমপি ভ্রাতৃদ্বয়ের সর্মথন ছাড়া তারা যেন একেবারেই জিরো।
এরআগে নারায়ণগঞ্জের দানবীর খ্যাত এমপি একেএম সেলিম ওসমান তার নিজস্ব সমর্থন ঘোষণা নিয়ে প্রার্থীদের বলেছিলেন আপনারা জনগণের কাছে যান এবং জনগণের সেবা করে জনগণের ভালবাসা নিয়ে আপনারা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন।
কিন্তু স্থানীয়রা বলেছেন, সেলিম ওসমানের এমন নির্দেশনা মানেননি তার সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। উল্টো করোনার দ্বিতীয় ধাপে অসহায় মানুষগুলো যখন আরো অসহায় পড়ে তখন তারা জনগণের মাঝে দাঁড়াননি। করোনাকালে ঈদ উল ফিতরেও তাদের দেখা যায়নি জনগণের মাঝে জোরালোভাবে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করতে। এমনকি নির্বাচনী প্রস্ততি নিয়ে জনগণকে নিয়ে নির্বাচনী সভা সমাবেশ কিংবা গণসংযোগও করেননি তেমনভাবে।
কিন্তু তাদের বিকল্প প্রার্থীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তারা সুযোগে সুযোগে জনগণের কাছে যাচ্ছেন। মানুষকে সহায়তা করছেন, বিপদে আপদে এগিয়ে যাচ্ছেন। আবার কোন কোন সম্ভাব্য প্রার্থী আওয়ামীলীগের ব্যানারকে কাজে লাগিয়ে নিচ্ছেন এমপি শামীম ওসমানের সর্মথন। বিভিন্ন স্থানে সাটিয়েছেন ফেস্টুনও। অন্যদিকে যারা এমপি ভ্রাতৃদ্বয়ের গ্রিন সিগনাল পেয়েছেন তারা মনে করছেন তারা চেয়ারম্যান হয়েও গেছেন। যে কারনে জনগণের মাঝেও যাচ্ছেন না। জনগণও তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন, বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধানকে কয়েক মাস পূর্বে একটি অনুষ্ঠানে এসে এমপি সেলিম ওসমান তাকে সামনের নির্বাচনেও সমর্থন ঘোষণা করেছেন। এমপি সেলিম ওসমানের সমর্থন ঘোষণার পুর্বে তিন চার মাসে দু’একবার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের মানুষের সামনে দেখা যেতো দেলোয়ার প্রধানকে। কিন্তু এমপির ঘোষণার পর দেলোয়রি প্রধান এখন জনগণ তো দুরের কথা নেতাকর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন না। কিন্তু সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজিম উদ্দীন ভুঁইয়া নিয়মিত নানা অজুহাতে ছোট ছোট কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন। বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি হলেও তিনি তার সকল কর্মকান্ড কলাগাছিয়া ইউনিয়নেই চালিয়ে আসছেন। শক্ত অবস্থানও তৈরি করেছেন তিনি। আওয়ামীলীগের নেতা হিসেবে তিনি শামীম ওসমানের আর্শিবাদপুষ্ট বললেই চলে। তাই বলে সম্পর্ক খারাপ ন্ইে সেলিম ওসামানের সাথেও। সেক্ষেত্রে দাবার চাল উর্ঠিয়ে দিতে তিনিও পারেন।
একইভাবে সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতিকেও সমর্থন ঘোষণা করেছেন এমপি সেলিম মতিউর রহমানের পক্ষে এমপি সেলিম ওসমানের ঘোষণার পর আলীরটেক ইউনিয়নবাসী নির্বাচন ও সুষ্ঠ ভোটের দাবিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহাম্মেদকে নিয়ে আন্দোলনে নামেন। তবে কোনভাবেই পিছিয়ে নেই জাকির হোসেন। পাশে নির্বাচনী প্রচারণায় ডাক দিয়েই কাজ করছে আওয়ামীলীগ নেতা জসিম উদ্দিন।
কয়েক মাস পূর্বে গোগনগরে এক অনুষ্ঠানে এমপি সেলিম ওসমান তার নিজের সমর্থন ঘোষণা করেন আওয়ামীলীগ নেতা জসিম উদ্দীনকে। গত নির্বাচনে জসিম নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে পরাজিত হোন। ওই নির্বাচনে নওশেদ আলীর পক্ষে এমপি সেলিম ওসমানের সমর্থন ছিল। তবে এখানে নওশেদ আলীর ভাই ব্যবসায়ী ফজর আলী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেলিম ওসমানের সমর্থনের পর নানা প্রচারণা চালিয়ে আসছেন ফজর আলী। তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণার কর্মকান্ডে এমপি শামীম ওসমানের ছবি ব্যবহার করছেন। যেখানে সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানকে মুখোমুখী দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ ওঠেছে ফজর আলীর বিরুদ্ধে।