আফ্রিদির পরেই ৫০ এর উপরে উইকেট আর হাজার রান সংগ্রহকারী সাকিব

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (রিফাত) : ১৬ মার্চ কোলকাতার ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেনে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাশরাফি বিন মর্তুজার টসের ভাগ্যটা ভালো ছিলো না । টানা ৬ ম্যাচের টস হারলেন মাশরাফি । পাকিস্তানের অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি টস জিতে বেছে নেন ব্যাটিং করার সিন্ধান্ত । ব্যাটিংয়ে নেমে আহমেদ শেহজাদ, মোহাম্মদ হাফিজ আর শহীদ আফ্রিদির দৃঢ়তায় ৫ উইকেট হারিয়ে ২০২ রান তোলে পাকিস্তান। জবাবে, নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১৪৬ রানে। পাকিস্তানের হয়ে ব্যাটিং নামেন আহমেদ শেহজাদ ও শারজিল খান । টাইগারদের হয়ে বোলিং শুরু করেন তাসকিন আহমেদ। তবে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। প্রথম দুই ওভারে দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও আল-আমিন হোসেন দিয়েছেন ২৫ রান। তৃতীয় ওভারে বোলিং আক্রমণে আসেন আরাফাত সানি। ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় ওভারেই আরাফাত সানি ফিরিয়ে দেন ১০ বলে ১৮ রান করা শারজিল খানকে। বোল্ড হয়ে ফেরেন পাকিস্তানের এই ওপেনার। দলীয় ২৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারানো পাকিস্তানের রানের চাকা ঘোরান মোহাম্মদ হাফিজ ও আহমেদ শেহজাদ। এই জুটি থেকে পাকিস্তান আরও ৯৫ রান যোগ করে। তবে, ইনিংসের ১৪তম ওভারে সাব্বির রহমান ফিরিয়ে দেন অর্ধশতক হাঁকানো আহমেদ শেহজাদকে। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের হাতে ধরা পড়ার আগে ৩৯ বলে ৮টি চারের সাহাযে শেহজাদ করেন ৫২ রান। শেহজাদকে ফিরিয়েও খুব বেশিক্ষণ স্বস্তিতে থাকতে পারেনি বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেটে আবার ১৭ বলে ৪২ রানের ঝড়ো জুটি গড়েছিলেন হাফিজ ও পাকিস্তানের অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। ১৭তম ওভারে সানির বলে বাউন্ডারি লাইনে অসাধারণ একটি ক্যাচ ধরে হাফিজকে সাজঘরমুখী করেছিলেন সৌম্য সরকার। ৪২ বলে ৬৪ রানের ইনিংস এসেছে হাফিজের ব্যাট থেকে। তবে আফ্রিদি শেষ পর্যন্ত ভুগিয়েছেন বাংলাদেশকে। ইনিংসের শেষ ওভারে তাসকিনের বলে স্কয়ার লেগে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের হাতে ধরা পড়েন আফ্রিদি। চার বছর পর আফ্রিদি অর্ধশতকের দেখা পেতে গিয়েও বঞ্চিত হন। ২০১২ সালে টি-টোয়েন্টিতে সবশেষ অর্ধশতক হাঁকানো আফ্রিদি ১৯ বলে চারটি চার আর চারটি ছক্কায় করেন ৪৯ রান। শোয়েব মালিক ১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানি। একটি উইকেট তুলে নেন সাব্বির। ২০২ রানের টার্গেটে টাইগারদের হয়ে ব্যাটিং করতে নামেন ওপেনার ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই মোহাম্মদ আমির বোল্ড করেন সৌম্য সরকারকে। ওপেনার সৌম্য সরকার দ্রুত বিদায় নিলেও উইকেটে থেকে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন বিশ্ব মঞ্চের শুরু থেকে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা তামিম ও সাব্বির। তবে, ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে আফ্রিদির বলে বোল্ড হন সাব্বির। ১৯ বলে পাঁচটি বাউন্ডারি হাঁকানো সাব্বির করেন ২৫ রান। বিদায় নেওয়ার আগে তামিমের সঙ্গে ৪৩ রানের জুটি গড়েন সাব্বির। এরপর ফেরেন তামিম ইকবাল । ইনিংসের অষ্টম ওভারে আফ্রিদির করা শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বিদায় নেন ২০ বলে দুটি ছক্কায় ২৪ রান করা তামিম। ১১তম ওভারে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ইমাদ ওয়াসিমের বলে শারজিল খানের তালুবন্দি হন ৪ রান করা রিয়াদ। রিয়াদের বিদায়ের পর জুটি গড়েন সাকিব-মুশফিক। ইনিংসের ১৭তম ওভারে মোহাম্মদ আমিরের দ্বিতীয় শিকারে বিদায় নেন মুশফিক। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে ২১ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে আসে ১৮ রান। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুশফিক। ১৮তম মোহাম্মদ ইরফানের বলে আমিরের তালুবন্দি হন ২ রান করা মিঠুন। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এক হাজারি রানের ক্লাবে প্রবেশ করে সাকিব অপরাজিত থাকেন। ৪০ বলে ৫টি চার আর একটি ছক্কায় সাকিব করেন ৫০ রান। ক্রিকেট বিশ্বে আফ্রিদির পরেই ৫০’র উপরে উইকেট আর হাজার রান সংগ্রহকারী ক্রিকেটার হিসেবে নাম লেখান সাকিব। শেষের দিকে, বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি ৯ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন । বাংলাদেশকে ৫৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি ১৯ বলে ৪৯ রান ও দুই উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হন ।

add-content

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর

পঠিত