নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ) : সন্ত্রাসের জনপদ নারায়ণগঞ্জ হলেও মাদক আর অস্ত্রধারী অপরাধীদের অভয়ারন্যে পরিণত হয়েছে পুরো নারায়ণগঞ্জ। বিভিন্ন মামলার আসামী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং ভূমিদস্যু মাদক ব্যবসায়ী শাহজাহানের আলাপকৃত একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। যে রেকর্ডটিতে শাহজাহানের সরল স্বীকারোক্তিতে তার কাছে অস্ত্রের মজুদের কথা রয়েছে। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসন দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বড় কোন দূর্ঘটনার আশংকা করছে আইলপাড়া পাঠানটুলী হাজীগঞ্জ এলাকাবাসী।
অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও বিভিন্ন মামলার আসামী শাহজাহানের অডিও রেকর্ডে যে কথা ফাঁস হয়েছে তা হুবহু তুলে ধরা হলো। ( আমার যে ভালটা ভালোর ভিতরে পিছনে একটা মামলার ছাপ আছিল। একটা সময় নারায়ণগঞ্জের যেইটানি টপটেরর ছিল গোলাম সারোয়ার। যে মারা গেল কিছুদিন আগে। শামীম ওসমানের প্রধান দুই সেনাপতি গোলাম সারোয়ার ও মাকসুদ। এগো দুইজনের মেশিন (অস্ত্র) থাকতো আমার কাছে। এগো দুইজনের লগে আমার রাজনৈতিক ডিল আছিল। আমার চাইতে চার ব্যাচ সিনিয়র আসিল। ডেভিট মিয়ার সেভেন পয়েন্ট সিক্স পয়েন্ট ফাইভ দিয়া আমার হেলাল গুলি খায়। ডেভিট মিয়া অপারেশন করাইয়া এপেন্টিসাইটিক্স লেখাইয়া হেরপর শেষ করে। অথচ বিএনপি করি আমি। ) উক্ত অডিও ভয়েজ রেকর্ডটি প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে রয়েছে বলে সূত্রে প্রকাশ।
শাহজাহানের কাছে অস্ত্রের মজুদ আলাপের অডিও :
জানা যায়, পুরাতন আইলপাড়া এলাকার মৃত: আজিজুর রহমানের কুখ্যাত ছেলে শাহজাহান পাঠানটুলী মোড়ে সড়ক ও জনপদের প্রায় ১৩ শতাংশ এবং জব্বার গংয়ের ১৩ শতাংশ জায়গা জবর দখলে নিয়ে অবৈধ ভাবে তিন তলা বিল্ডিং নির্মাণ করে। এছাড়া আরও কয়েকটি জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে রেখেছে। শাহজাহানের প্রধান সেনাপতি মাদক সম্রাট শহিদুল্লাহ ওরফে কালা মানিক জেলেপাড়া পুলে মকবুল কেরানীর মেয়ে অনুর প্রায় ৪ শতাংশ জায়গা দখল করে ক্লাব ঘর করেছে। এছাড়া পুরাতন আইলপাড়ায় পেশী শক্তি ব্যবহার করে সরকারি জায়গায় একটি বিশাল গোডাউন তৈরী করেছে। শাহজাহান, শহিদুল্লাহর অন্যতম সহযোগি ডিএইচ বাবুল এলাকায় সন্ত্রাস ও মাদকের পক্ষ নিয়ে সাধারণ নিরীহ মানুষদের ঝামেলায় ফেলে ভুমিদস্যুতা করছে। আব্দুর রহমান সেন্টু বিভিন্ন জায়গায় নারীদের নিয়ে ফুর্তি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়লেও শাহজাহানের কারনে পার পেয়ে যাচ্ছে। অস্ত্রধারী সাইদুল ফেনসিডিল পৌছে দিচ্ছে বিভিন্ন ডিলারের কাছে।
অন্যদিকে শাহজাহান শহিদুল্লাহর পক্ষে ভাড়াটিয়া হিসাবে মাষ্টার দেলু এলাকার মধ্যে অরাজকতা সৃষ্টি করে যাকেতাকেই পরিকল্পিত ভাবে মারধর করছে। মাষ্টার দেলু প্রশাসনের কাছে মোষ্ট ওয়ান্ডেট ক্রিমিনাল হলেও উল্লেখিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের আশ্রয়ে এবং প্রশ্রয়ে এলাকায় দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না। শাহজাহানের বাড়িতে, শহিদুল্লাহর গোডাউনে ও সেন্টুর বাড়িতে সহ তাদের বাহিনীর সদস্যদের বাসায় মাষ্টার দেলু বিভিন্ন অপকর্ম করে আশ্রয় নিচ্ছে। ডিএইচ বাবুল বিএনপির সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। শাহজাহান এক সময় বিএনপি করলেও বর্তমানে তার কোন রাজিৈনতক পরিচয় না থাকলেও যুবলীগের পরিচয় দিচ্ছে। অথচ বেশ কিছুদিন পূর্বে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় শাহজাহান এলাকার সমাজ ও দল থেকে পদত্যাগ করেছে বলে বিবৃতি দিয়েছিল। শাহজাহানের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একাধিক অভিযোগ ও মামলা থাকলেও পুলিশের আন্তরিকতায় তিনি বার বার বেচে যান। শহিদুল্লাহ ও সাইদুলের কোন দলীয় পরিচয় নেই। তারপরও বঙ্গবন্ধুর ছবির নিচে নিজেদের নাম বসিয়ে ফেস্টুন লাগিয়েছে এলাকায়।
উক্ত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বাহিনীর মধ্যে চাঁদাবাজ হিমেল, রাশেদ, মাদক বিক্রেতা জিতু, রিতু, রাজু, উজ্জল, মনির, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক সন্ত্রাস কেটু সুমন, শফিউল্লাহ, নুরনবী, জসিম, মিলন, সোহাগ, রাসেল, রহমত উল্লাহ, ইমরান, রাজিব, সজিব, সাজাপ্রাপ্ত আসামী চঞ্চল, সেরু, আসমা, রুমা, টুম্পা, বাপ্পি, ফয়সাল, ইস্তি সহ আরও কয়েকজনের কারনে বর্তমানে আইলপাড়া পাঠানটুলী ও হাজীগঞ্জ এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করছে। শাহজাহানের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অন্যতম স্বাক্ষী যে হেলাল গুলি খেয়েছিল। তার বাড়ি পুরাতন আইলপাড়া এলাকায়। শাহজাহানের কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে এবং তার সহযোগিদের র্যাব, ডিবি সহ জেলা প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে যে কোন সময় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দ্বারা এলাকার সাধারণ মানুষ ক্ষতির আশংকা করছে। এ ব্যপারে নারায়ণগঞ্জের ৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমানের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।