নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিবেদক ) : সড়ক-মহাসড়ক কিংবা ঘনবসতি এলাকার অলি-গলিতে থাকা শাখা সড়ক। কোথাও নিয়মের তোয়াক্কা করছে না বিভিন্ন যানবাহনের চলকেরা। এরমধ্যে এই শহরে বৃদ্ধি পেয়েছে অসংখ্য অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিক্সা। এসব পরিবহনের অধিকাংশ চালকেই জানে না সড়কে চলাচলের নিয়ম কিংবা অনেকেই আবার অপ্রাপ্ত বয়স্ক। এসব চালকরা শুধু নির্ধারিত গতিসীমাই লঙ্ঘন করছেন না। ট্রাফিক আইন অমান্য সহ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক, মোড় ও গতিরোধক (স্পীডব্রেকার) স্থানেও তারা বেপরোয়া। আর নিয়ন্ত্রনহীন গতীসীমার কারণে প্রতিনিয়তই ঘটছে প্রাণহানীসহ নানা দুর্ঘটনা।
ভুক্তভোগী নলুয়াপাড়া এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, সড়কের পাশে আমার বাড়ি হওয়ায় যেন খুব বিপদে আছি। বাসা থেকে বের হতেও এখন ভয় হয়। কারণ বিভিন্ন সময়ই এ রাস্তা দিয়ে কাভার ভ্যান, সিএনজি, প্রাইভেট কার সহ ট্রাক চলাচল করে। তারা এতোটা বেপরোয়াভাবে এটুকু শাখা সড়কে গাড়ি চালায়, যেকোন মূহুর্তেই আমার মত অনেককে পৃষ্ট করে দিতে পারে। বিশেষ করে রাতে এর সংখ্যাটা সবচেয়ে বেশী। যানবাহনের গতি কমাতে স্পীড ব্রেকার দিলেও তাতে কোন কাজ হচ্ছে না। আর এতে করে অনেক সময়ই অসাবধানতাবসত বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় বৃদ্ধ, শিশু, স্কুল বা কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।
জানা গেছে, সড়ক নির্মাণের সময়ই ঠিক করা হয় সেখানে চলাচলকারী যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি কত হবে। ছোট-বড় একমুখী বাঁক, দ্বিমুখী বাঁক, মোড় এবং একটানা সোজা রাস্তার দৈর্ঘ্য, এসব বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সড়কের নানা অংশের গতিসীমা নির্ধারণ করেন প্রকৌশলীরা। নকশা অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ জেলার সবকয়টি মহাসড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। স্থানভেদে গতিসীমা আরো কম। অথচ ওইসব সড়কে ঘণ্টায় সিমা অতিক্রম করে দ্রুত বেগে অহরহ চলছে যানবাহন।
সচেতন নাগরিক মনে করেন, যানবাহন চলাচলের সময় চালকদের সেই মনোভাবই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। পরিণামে ঘটছে প্রাণহানি, ক্ষয়ক্ষতি পঙ্গুত্ব বরণ করছে মানুষ। দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে পুলিশের দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, জেলার মহাসড়কে যত দুর্ঘটনা ঘটে, তার অধিকাংশর জন্য দায়ী নিয়ন্ত্রণহীন গতি। একইভাবে চালকের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে ঘটে দুর্ঘটনা।
অতিরিক্ত গতির যানবাহন নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলার ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ মো. আব্দুল করিম শেখ বলেন, আমরা যতটুকু পারছি চালকদের কাউন্সিলিং করে বুঝানোর চেষ্টাও করি। তাছাড়া কোনো যানবাহন গতিসীমা লঙ্ঘন করলে তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এরপরেও শুধুমাত্র ট্রাফিক পুলিশ, জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন নয়। সকল সংস্থা ও সামাজিক সংগঠনকেও এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে।