সিদ্ধিরগঞ্জে অপহরণের পর নগ্ন ছবি তুলে মুক্তিপণ দাবি, আটক-২

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ) : সিদ্ধিরগঞ্জে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে মুক্তিপণের দেড়লাখ টাকাসহ অপহৃত ব্যবসায়ীকে।  বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানী ঢাকার ফকিরাপুল এলাকার একটি ভবন থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ব্যবসায়ী মনির হোসেন ব্যাপারীকে ঢাকার রামপুরার মেরাদিয়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া মনির হোসেন ব্যাপারী কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার গাংকান্দা এলাকার নোয়াব আলী ব্যাপারীর ছেলে। তিনি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শস্য (সরিষা, মরিচ, ডাল, ভুটা ইত্যাদী) বেচাকেনা করেন।

ব্যবসায়ীর বরাত দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মীর শাহীন শাহ পারভেজ জানান, মঙ্গলবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকা থেকে মৌচাক এলাকায় ছোট ভাইয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী মনির হোসেন ব্যাপারী। ওই সময় অপহরণকারীরা স্প্রে (অজ্ঞান করার ওষুধ) করে মনির হোসেনকে অজ্ঞান করে ফেলে। পরে সেখান থেকে ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় নিয়ে অপহরণকারীরা অজ্ঞান অবস্থায় মনির হোসেনকে নগ্ন করে নারীর সঙ্গে ছবি তোলে।

এসময় মারধর করে পিঠে ও শারীরের বিভিন্ন জায়গায় আগুনের ছ্যাকা দিয়ে জ্বলসে দেয়া হয়। পরে জ্ঞান ফিরলে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন অপহরণকারীরা। অন্যথায় হত্যাসহ নগ্ন অবস্থায় তোলা ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। পরে মনির হোসেন দেড় লাখ টাকা দেয়ার কথা বললে অপহরণকারীরা তাকে ছেড়ে দেয়ার আশ্বাস দেয়।

এর প্রেক্ষিতে মনির হোসেন ওই রাতে নিজ মোবাইল থেকে ছেলেকে ফোন দিয়ে বলে, অহরণকারীদের টাকা না দিলে মেরে ফেলবে। তাই টাকা ব্যবস্থা করে তাদের কথা অনুযায়ী পৌঁছে দিতে। পরে তার ছেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এসে মনির হোসেন অপহরণের কথা জানায়।

তিনি আরো জানান, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার সকালে ওসি মীর শাহীন শাহ পারভেজ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ব্যবসায়ী মনির হোসেনের অবস্থান নিশ্চিত করে। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালায়।

এসময় অপহরণকারীরা ফোনে দেড় লাখ টাকা ফকিরাপুর এলাকার একটি ফার্মেসিতে জমা দেয়ার জন্য বলে। এসময় সাদা পোশাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ও ব্যবসায়ী মনির হোসেনের ম্যানেজারকে নিয়ে একটি ফার্মেসিতে গেলে দোকান বন্ধ পাওয়া যায়। পরে অপহরণকারীরা জানায়, ফার্মেসির ভবনের তিনতলায় একটি ডাক্তারের চেম্বার আছে সেখানে ইসমাইলের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য। তাদের কথা অনুযায়ী মনিরের ম্যানেজার দেড় লাখ টাকা ইসমাইলের কাছে দেয়।

অন্যদিকে অপহরণকারীদের দেয়া তথ্যানুযায়ী রামপুরার মেরাদিয়া এলাকা থেকে মনির হোসেনকে উদ্ধার করা হয়। পরে ডাক্তারের চেম্বারে টাকা নিতে আসলে সামসুল হক মিলনকেসহ ইসমাইলকে আটক করে পুলিশ।

তারা হলেন, ইসমাইল ময়মনসিংহ ফুলবাড়িয়া তামার বাজার এলাকার বাসিন্দা ও ওই ফার্মেসির বিক্রেতা। আরেকজন পাবনার মঈনুল হকের ছেলে সামসুল হক মিলন।

ওসি বলেন, অপহরণের ঘটনায় আটক দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ চক্রের বাকি সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত