অপপ্রচার করে আমাকে আইনজীবী পরিবার হতে বিছিন্ন করতে চাইছে- এড.লক্ষণ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সমগ্র বাংলাদেশের আইনজীবীদের অবিভাবক। আমি বিশ্বাস করি নারাায়নগঞ্জ আইনজীবী সমিতি বার কাউন্সিলের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবেন এবং ঘটনার আড়ালে ষড়যন্ত্রের প্রকৃত রহস্য উৎঘাটন করবেন। সত্য দিবালোকের মতো। সত্যের জয় চিরদিন। তবে শত প্রতিকুলতার মধ্যেও ধৈর্য ধারণ করতে হয়। অপেক্ষা করতে হয় সততার সাথে। মিথ্যের বেসাতি দিয়ে যা গড়া, তা সময়ের ব্যবধানে চুর্ণ হবেই। আর সেটাই প্রমাণ হলো। র্দীঘ ১০ মাস পরে ন্যায় বিচার পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এমনই মতব্যাক্ত করলেন আইনজীবী আর সি মোদক লক্ষণ।

লক্ষণ বলেন, আমার প্রতি মিথ্যা ষড়যন্ত্র চলছে এবং বানোয়াট কাগজপত্র সৃজনের অপচেষ্টা করছে। কিছু ব্যক্তি মিথ্যা অপপ্রচার করে আমাকে আমার আইনজীবী পরিবার হতে বিছিন্ন করতে চাইছে এবং ব্যবধান সৃষ্টি করে আমার ক্ষতি করাসহ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে। এ ষড়যন্ত্র থেকে আমাকে রক্ষা করার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির মাননীয় কর্মকর্তাগনসহ সকল বিজ্ঞ আইনজীবীর কাছেই অনুরোধ রাখছি।

প্রসঙ্গত, তার বিরুদ্ধে জেলা আইনজীবী সমিতি অভিযোগ তুলেছিল, তিনি বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষে ওকালত নামা দাখিল করেন! এমন অভিযোগ এনে তৎকালীন আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরর্ষদ ১০ মাস আগে লক্ষণকে সময়িক বহিস্কার করেন। কিন্তু, জেলা আইনজীবী সমিতির অভিযোগটি মিথ্যে, সম্প্রতি তেমনটিই প্রমাণিত হয়েছে।

সূত্রমতে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতি ১০ মাস আগে আর সি মোদকের সদস্য পদ পরবর্তী নিদেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেন। এতে তিনি ন্যায় বিচারের আশায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আপীল দায়ের করেন। বার কাউন্সিল আর সি মোদকের আপলি আমলে নিয়ে তার সমস্ত কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে করে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সতত্য না পেয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির আদেশ বাতিল করেন।

তবে, আর সি মোদকের আপীল আদেশের বিরুদ্ধে পুনরায় রিভিউ দরখাস্ত দাখিল করে জেলা আইনজীবী। এতে বার কাউন্সিলের সম্মানিত ৫ বিচারক সমস্ত কাগজপত্র ফের পর্যালোচনা করেন। এতেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রামাণিত না হওয়ায় জেলা আইনজীবী সমিতির রিভিউ খারিজ করে পুনরায় আরসি মোদকের পক্ষে রায় প্রদান করে। একই সাথে তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে নিয়মিত প্র্যাক্টিস করারও অনুমতি প্রদান করেন।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এর আদেশের প্রেক্ষিতে আরসি মোদকের নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে আইন পেশা পরিচালনায় কোনো রকম বাধা নেই বলেও জানানো হয় ওই রায়ে।
এদিকে আরসি মোদক সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সদস্য পদের জন্য হাইকোর্ট অনুমতির লিখিত পারিক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ন হয়। পরবর্তীতে একই বিভাগের লিখিত পরিক্ষায়ও উত্তীর্ন হন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতিগন ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এনরোমেন্ট কমিটির কাছে মৌখিক পরিক্ষায়ও কৃতকার্য হয়েছেন।
আরসি মোদক বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতসহ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগেও আইনজীবী হিসেবে কর্মরত।

জানা যায়, কোন আইনজীবী যদি বাংলাদেশের মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সদস্য পদপ্রাপ্ত হন তিনি বাংলাদেশের যে কোন জেলার আদালতে আইন পেশা পরিচালনা করতে পারেন।
উল্লেখ্য, আরসি মোদক (লক্ষণ) ২০০৪ সালের ৩০ জুলাইয়ে আইনজীবী সনদ পাওয়ার পর থেকে এই পেশায় নিয়োজিত আছেন। ১৯৯৭ সালে দায়েরকৃত একটি বণ্টন মামলার (নম্বার ৯৪/৯৭) আইনজীবী ছিলেন সুরুজ আলী। এ মামলায় বিবাদী সংখ্যা ছিল ১৬৭। এত সংখ্যক বিবাদীর জন্য বহু আইনজীবী মামলা পরিচালনা করেন। এ মামলার ৬৮-৭৬ নং বিবাদী পক্ষ বাদীকে সমর্থন করে মামলা থেকে অব্যহতি প্রাথনা করেন। এর আইনজীবী ছিলেন নেপাল চন্দ্র দাস। তারা জানিয়েছিলেন, বাদী পক্ষের সাথে মালিকানা সক্রান্ত তাদের কোনো বিরোধ নেই। বাদী পক্ষের দাবীকৃত জায়গা ভিন্ন এবং উক্ত বিবাদী পক্ষের মালিকানার জায়গা ভিন্ন। শুধুমাত্র নিয়ম অনুযায়ী ক্রুটি মুক্তির জন্য ৬৮-৭৬ নং বিবাদীকে ওই মামলায় পক্ষভুক্ত করা হয়।

এদিকে  প্রায় ১০ থেকে ১১ বছর আগে ৬৮-৭৬ নং বিবাদীর পক্ষের আইনজীবী মৃত্যুবরণ করলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আইনজীবী তাদের পক্ষে মামলা লড়েন। তখন আরসি মোদক (লক্ষণ) সবেমাত্র উকালতি পেশায় আসেন। কিন্তু ওই মামলায় অন্যান্য আইনজীবীদের সাথে তিনি ওকালত নামায় স্বাক্ষর করেছেন কিনা, তা তিনি মনে করতে পারেন নি।

তবে জানা যায়, দেওয়ানী ৯৬/২০০১ নং বাটোয়ারা মামলাটি আরসি মোদকের নিজস্ব সেরেস্তার নয়। তাছাড়া উক্ত বিবাদী পক্ষও তার কাছে মামলা সক্রান্ত কোনো কাগজপত্র প্রদান করে নাই। তাছাড়া ওই মামলায় মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধ না থাকায় বিবাদী পক্ষ বহুবছর যাবৎ মামলায় হাজিরাও দেন নি। এসমস্ত ঘটনাবলি পর্যালোচনা করে জানা গেছে আরসি মোদক ষড়যন্ত্রের শিকার।

আইনজীবী আরসি মোদকে বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়, তিনি ১০/১১ বছর আগে বিবাদী পক্ষে ওকালতনামা দাখিল করেছেন এবং বেশ কিছু বছর পর বাদী পক্ষেও ওকালতনামা প্রদান করেছন! যা ভিত্তিহীন বলেই বার কাউন্সিলে প্রমাণিত হয়।

তবে মজার বিষয় হল, ওকালতনামায় মামলার নম্বর লেখা ৯৬/২০০১ এবং বাদীর ওকালতনামা মোকদ্দমার নম্বর উল্লেখ্য ৯৬/২০১২ অর্থাৎ মামলার নম্বর এক না। তাছাড়া ওকালতনামায় বাদী কোনো স্বাক্ষরও নেই। যা বানোয়াট বলেই প্রমাণিত হয়েছে।

সূত্র বলেছে, ওকালতনামা হচ্ছে ক্ষমতা পত্র আর উক্ত ক্ষমতা পত্রে যদি বাদী নিজেই স্বাক্ষর না করে তাহলে উক্ত ক্ষমতাপত্র বা ওকালতনামা গ্রহনযোগ্য হয় না। ৯৬/২০০১ নং মামলায় কোনো তর্কিত ওকালতনামা মূলে অ্যাড. লক্ষনকে ক্ষমতা প্রদান করে নাই এবং তার দ্বারা কোনো পক্ষেরই কোনো ক্ষতি হয় নাই। এমনকি লক্ষণ বাদী পক্ষের উকিলও নন দাবী করে ওই মামলার বাদী পক্ষ বার কাউন্সিলে উপস্থিত হয়ে হলফনামা দাখিলও করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাড. লক্ষণ এই প্রতিবেদককে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি আমার অবিভাবক আমি নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির আদেশ নির্দেশ পালনে বাধ্য। আমি আগেও সমিতির সিদ্ধান্ত মেনে চলেছি, আগামীতেও আমার অবস্থান একই থাকবে। আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগটি অসত্য, অপপ্রচার মাত্র। আমি নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ আইনজীবীদের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করি এবং মনে প্রানে বিশ্বাস করি এবং বিনীত ভাবে প্রার্থনা করি আইনজীবী পরিবারের একজন সদস্য আমার সার্বিক ক্ষতির কথা বিবেচনা করে আমার প্রতি সদয় হবেন। তবে, আমার যদি অনিচ্ছাকৃত কোনো ভুল ক্রুটি হয়ে থাকে, তারা আমার অভিভাবক হিসেবে তা ক্ষমা করবেন বলেও আমি আশা করি।

প্রসঙ্গত, বাদী পক্ষ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের কাছে তাদের হলফনামায় আরও উল্লেখ করেন, দেওয়ানী কার্য: বিধি আইনের ৩ আদেশের ৪ নিয়মের বিধান মোতাবেক ওকালতনামায় আবশ্যই পক্ষের স্বাক্ষর থাকতে হবে অর্থাৎ পক্ষদ্বারা সম্পাদিত হতে হবে। পক্ষের স্বাক্ষর বিহীন ওকালত নামা একটি অকার্যকর কাগজ মাত্র। অ্যাড. লক্ষন মূলত কোনো পক্ষেই ওই মামলা পরিচালনা করে নাই। তাছাড়া বন্টনের মোকদ্দমায় বাদী ও বিবাদী পক্ষের অবস্থান একই (২৬ ডি.এল.আর, পৃষ্ঠা নং ৯৬)। ওই মামলা এখনও চলমান। মামলা দ্বারা কোনো পক্ষেরই কোনো ক্ষতি হয়নি। তার পেশাগত মান সম্মান খুন্ন করিবার জন্য এবং যড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে তার বিাংদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ইতিপূর্বে অ্যাড. লক্ষণকে  আত্মপক্ষ  সমর্থনের কোনো সুযোগ দেওয়া হয় নাই এবং কোনো কাগজপত্র দেখার সুযোগ দেওয়া হয় নাই।

add-content

আরও খবর

পঠিত