নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিনিধি ) : এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে বেশ সরগরম হয়ে উঠেছে দুইটি ইউনিয়নের এলাকা। খুব আগেভাগেই দেখা যাচ্ছে তাদের প্রস্তুতী। নির্বাচনের দিন-তারিখ ঠিক না হলেও প্রার্থীরা যেন নির্ধারিত। সকলেই চায় চেয়ারম্যান হতে। আর এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটাতেও মরিয়া সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
ইতমধ্যে জেলা ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী সহ জাপা’র সাংসদও নিজ পছন্দের প্রার্থী’র ঘোষণা দিয়েছেন। তারপরেও প্রভাবশালী ও ক্ষতাধররা বাতিল তালিকায় রাখলেও থেমে নেই কেউই। তবে স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, চেয়ারম্যান হয় এলাকার উন্নয়ন করতে। নিজের টাকা দিয়ে জনগনের সেবা করতে। কিন্তু এখানকার বিষয় ভিন্ন। তাই নির্বাচনের আগে অনেকেরই দেখা গেলেও ভোটের পরে এবং বিপদে কাউকে খোঁজে পাওয়া যায়না। এ দুটি ইউনিয়নে সকলেই নিতে আসে শুধু – গুপ্ত ধন !
কারণ হিসেবে তারা জানায়, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার এপারে গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদ। আর বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদী বেষ্টিত ইউনিয়নটি মূলত আলীরটেক। এসব এলাকার অধিকাংশই এখন শিল্প প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। ইট খোলা, সিমেন্ট কারখানা সহ নদীমহলের বালু-জাহাজ সবকিছু ব্যবসা বানিজ্যে ভরপুর এ ইউনিয়নগুলো। যে কারণে টাকা উপার্জনের এক অন্যতম স্থান হিসেবেই অনেকেই টার্গেট করে এ দুটি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকাকে।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত ২ টি ইউনিয়নের জন্য ডজন প্রার্থী তাদের জানান দিয়েছেন। যাদের মধ্যে অন্যতম আলীরটেক ইউনিয়নে রয়েছে, বর্তমান চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি ও সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন। বরাবরের মত এবারো তারা আলোচনায় শীর্ষে রয়েছেন। তবে এখানে জাপা সাংসদ সেলিম ওসমান চেয়ারম্যান মতিকে সর্মথন দিয়েছেন। তবে গতবারের মত এবার জাকির হোসেন বসে না গেলে গনেশ উল্টিয়ে যেতে পারে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে তরুণদের মধ্যে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সায়েম আহম্মেদ। গতবারও নির্বাচনে অংশ নিতে তোরজোড় চালালেও শেষপর্যন্ত মাঠে থাকেনি তিনি। তবে শোনা যাচ্ছে ওইসময় মতিউর রহমান মতির অনুরোধে তিনি মাঠ ছেড়েছিল। কিন্তু চেয়ারম্যান মতি তার কথা রাখেনি বিধায় এবার আর মাঠ ছাড়ছেন না সায়েম। পাশাপাশি আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব স্থানীয়দের কাছেও চাচ্ছেন সর্মথন।
অন্যদিকে গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে বর্তমানে মাঠে ময়দানে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী। বাকিরা থাকলেও তারা আলোচনায় তেমন একটি নেই। ইতমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমানের মনোনীত প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন আহমেদ ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রচার করে আসছেন আসা ফজর আলী। এতে করে এই ইউনিয়নে তারাই সবচেয়ে বেশী আলেঅচনায় রয়েছেন। এছাড়াও রয়েছেন উকি দিয়েছিলেন ইব্রাহীম মোল্লা যা ডামী প্রার্থী হিসেবেই রয়েছে। তবে গুঞ্জন রয়েছে চেয়ারম্যান নওশেদ আলী না ফিরার দেশে চলে যাওয়ার পর বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নূর হোসেন সওদারও চেয়ারম্যান পদটিতে নজর দিয়েছেন।
অন্যদিকে ফজর আলীকে আদৌ শামীম ওসমান মনোনীত করেছেন কি না, এ বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের সর্মথণ রয়েছে বলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে। এদিকে সাংসদ সেলিম ওসমানের মনোনয়ন পেয়ে অনেকটা ফুরফুরে জসিম উদ্দিন। তবে শেষ মহুর্তে তিনিও টিকে থাকবেন কি না, এ নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। কেননা, আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিনের সাথে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়রের রয়েছে সখ্যতা। মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর হকার বিরোধী আন্দোলনের সময় জসিম উদ্দিনকে তার পাশে দেখা গেছে। ফলে মেরুকরণের বিবেচনায় জসিম উদ্দিন এর উপর তেমন একটা আস্থা নেই বলেও সূত্রে জানাগেছে।
স্থানীয় ভোটারদের মাঝে কার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। নতুন মুখ আসবে নাকি পুরাতন কেউ আসবে তা নিয়েও বেশ জোড়ালো আলোচনা। তবে বেশির ভাগ মানুষ নতুন মুখ দেখতে চায়। কিন্তু ইতমধ্যে এ দুইটি ইউনয়নে নির্বাচনের আগেই ব্যপক কাদা ছুড়াছুড়িতে অনেকের যোগ্যতা ও জনগনের প্রত্যাশাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে জানা গেছে।