বেড়েছে অজুহাত রোগী

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিনিধি ) : করোনা সংক্রমণ রোধে ফের ১৪ দিনের লকডাউনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা পুলিশ। শহরের মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশ চেকপোস্ট। তারপরেও এসব চেকপোস্ট অতিক্রম করতে অসচেতন মানুষের হাতে মূল্যায়ন পাচ্ছে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন !

এদিকে দিন দিন বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। কিন্তু তাতে কি, যে করেই হোক নানা অজুহাতে সড়কে বের হওয়া যেন কিছু মানুষের জন্য এক ধরণের অসুস্থ্য স্বভাবে পরিণত হয়েছে। তাই চিকিৎসা সেবা গ্রহনকারীদের চেয়েও যেন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অজুহাত রোগী। গত কয়েকদিন ধরে সড়কে জনসাধারণের চলাচলে এমনই চিত্র দেখা গেছে জেলা জুড়ে।

সময়টা ছিল চলমান কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিন। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। চাষাঢ়া মোড় থেকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসা একটি প্রাইভেট গাড়ি থামালেন, চেকপোস্টে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য। সামনে এগিয়ে তিনি ইশারায় গ্লাস নামানোর অনুরোধ জানালেন। গ্লাস নামাতেই গাড়ির চালক দেখালেন একটি প্রেসক্রিপন ফাইল। ওইসময় গাড়ির ভেতরে বসেছিলেন এক শিশু, বৃদ্ধ ও মধ্য বয়সের মোট তিনজন। দুই জনের মুখে মাস্কও নেই। মাস্ক লাগাতে বলে দিয়ে আর দেরী না করে জরুরী চিকিৎসা সেবা হওয়ায় যেতে দিলেন পুলিশ সদস্যরা।

এরআগেও এক ভদ্রলোক রিক্সায় করে আসছে। চেকপোস্টে আসা মাত্রই, থামিয়ে দায়িত্বরতরা জিজ্ঞাসা করলো কোথায় যাচ্ছেন। তিনিও হাতে থাকা বড় এক্স-রে কভারটা দেখিয়ে দিলেন। একইভাবে তাকেও দেরী না করে যেতে দিলেন পুলিশ সদস্যরা।

আরো একটু সামনে আগাতেই শহীদ মিনার। লক্ষ্য করা গেলা তার পাশেই ঘেঁষা সড়ক দিয়ে হেটে যাচ্ছেন একটি যুগল। একজনের মাস্ক হাতে, আরেকজনের থুতনির নীচে। হেলেদুলে পথ চলছেন। এরইমধ্যে সেখানে দায়িত্বরত একজন নির্বাহী মেজিস্ট্র্যোট জিজ্ঞাসা করলেন মাস্ক কোথায় ? কেন বের হয়েছেন ? প্রশ্ন করতেই মাস্ক লাগিয়ে একটি প্রেসক্রিপশন ফাইল দেখিয়ে উত্তর দিলো- পপুলারে গিয়েছিলাম ডাক্তার দেখাতে !

এদিকে গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, দিনব্যাপী ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড, ঢাকা-সিলেট ও চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। এ সময় কিছু স্থানে টহল এবং অবস্থান নিতে দেখা গেছে, সেনা সদস্য, বিজিবি, র‌্যাব সদস্য সহ জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ।

এতে অনেক মানুষই জেরার মুখে পড়েছেন। তবে তাদের অজুহাতের শেষ ছিল না। জিজ্ঞাসা করলেই কেউ বলছেন ঔষধ আনতে যাচ্ছি। কেউ বা আবার হাতে থাকা প্রেসক্রিপশন ফাইল দেখিয়ে বলছে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি। ব্যাটারী চালিত রিক্সায় বসে থাকা এমন অনেকের সাথেই আবার ছিল পরিবারের ৫-৬ জন সদস্য। আর তা দেখেই মানবিকতায় ছেড়ে দিচ্ছে দায়িত্বরতরা। আবার এদের মধ্যে অনেকেই প্রেসক্রিপশন নিয়ে ঘুরতেও বের হয়েছেন। কারণ সেসব অসচেতন মানুষের উদ্দেশ্য হলো প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে চেকপোস্ট পার হওয়া। ফলশ্রুতিতে নিজের ক্ষতিই ডেকে আনছেন তারা। হয়তো সময় পেরিয়ে গেলে তা আর বুঝে কোন কাজে আসবে না। তাই প্রশাসনকে ফাকি দেয়া সেসব মানুষদের জন্য আরো সতর্ক অবলম্বন করার দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল।

add-content

আরও খবর

পঠিত