নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ জেলায় কঠোর লকডাউন (কঠোর বিধিনিষেধ) এর প্রথম দিনে কঠোর অবস্থানে রয়েছিলেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তাছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে রয়েছিলো পুলিশের চেকপোস্ট। এছাড়াও মাঠে বিজিবি ও সেনাবাহিনী ছিল কঠোর তৎপর । ১লা জুলাই বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার সময় শহরের চাষাড়া এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহানের নেতৃত্বে সেনা বাহিনীর একটি দল অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন যানবাহন তল্লাশি করে। ওই সময় তারা যানবাহনের কাগজ পত্র পরীক্ষা করেন এবং বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চান। তারা জরুরি প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হওয়া মানুষের মুখে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করেন। এ সময় সেনা বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন মেজর মাশকুর রহমান ও ক্যাপ্টেন আরেফিন সিদ্দিকী।
এর আগে সকাল ৮ টা থেকেই অবস্থান নেয় পুলিশ, ট্রাফিক ও আনসার সদস্যরা। এসময় মাইকিং করে সবাইকে মাস্ক পড়তে, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়। ওই দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারবৃন্দ, সহকারী কমিশনার (ভূমি), বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার, রোভার, রেডক্রিসেন্টসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী সহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর অবস্থানে দেখা গেছে।
এ ছাড়াও সকাল থেকেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তল্লাশি চৌকি বসিয়ে তল্লাশি করেন। এ ছাড়া প্রতিটি প্রধান প্রধান সড়কেই টহল দিতে দেখা গিয়েছিলো নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের।
চাষাঢ়ায় অবস্থান করা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান জানান, আমরা সকাল থেকেই লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছি। আশা করছি জনসাধারন সরকারি নির্দেশনা মেনে চলবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছেন। আমরা রোস্টার করে দায়িত্ব পেয়েছি, সেই অনুযায়ী সার্বিক্ষনিক আমরা মাঠে থাকবো।
এদিকে সরকারী বিধি নিষেধ প্রতিপালনে ১লা জুলাই বৃহস্পতিবার লকডাউনের প্রথম দিনে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৪৩টি মামলায় প্রায় ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে জেলার সাইনবোর্ড, চাষাড়া, শিমরাইল (চিটাগাংরোড), ইপিজেড, পঞ্চবটী, পাগলা, লঞ্চঘাট, সৈয়দপুর, কাঞ্চন ব্রিজ, বিশনন্দি, মদনপুর, মেঘনা ব্রিজসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমুহে চেকপোস্ট বসিয়ে জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রন আরোপ করা হয়। এছাড়া কাঁচাবাজর সমূহ উম্মুক্তস্থানে সরিয়ে আনা হয়। জাতীয় তথ্যসেবা হেল্পলাইন ৩৩৩’র মাধ্যমে মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। এবং সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য একটি নিয়ন্ত্রন কক্ষ সার্বক্ষনিক খোলা রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা করোনা সংক্রমণ প্রবণ ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় সরকার প্রদত্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে৷ করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনকল্পে উপজেলা নির্বাহী অফিসারবৃন্দ, সহকারী কমিশনার (ভূমি), বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার, রোভার, রেডক্রিসেন্টসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তাছাড়া শহরের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে নারায়ণগঞ্জ জেলায় ২০টি মোবাইল কোর্ট, ৪৫এমএলআরএস ইউনিটের ৩টি পেট্রোলের ৫২ জন সেনাবাহিনীর সদস্যের টহল টিম ছাড়াও ২ প্লাটুন বিজিবি (৪০ জন), পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা কঠোর বিধি নিষেধ বাস্তবায়নে কাজ করছেন।