নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিপ্লব হাসান ) : শহরে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা। আর এদিকে চৌরাস্তার পাশেই রয়েছে যাত্রাবাড়ী থানা। তার পরও ঘটছে দূর্ঘটনা। ট্রাফিক পুলিশের দেখা মিললেও তাদের দেখা যায় মামলা দেয়ার নামে ভিন্ন কাজে ব্যস্ত। এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নেই কোনো ফুটওভার ব্রিজ। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা।
বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামবন্দরসহ দেশের পূর্ব দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলসহ প্রায় ৪০টি জেলা থেকে প্রতিনিয়ত সহস্রাধিক যানবাহনসহ লাখ লাখ যাত্রীরা প্রবেশ করছে রাজধানীর এ সিংহদ্বার দিয়ে। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় রাজধানী যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা যেন পথচারীদের মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা, ঝড়ছে অসংখ্য প্রাণ, আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করছে অনেকেই। সীমাহীন দূর্ভোগে দিনযাপণ করছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার খ্যাত সুনাম থাকলেও এর থেকে সুবিধা বঞ্চিত যাত্রাবাড়ীবাসী। এ বঞ্চনাই শেষ নয়, যাত্রাবাড়ী উড়াল সেতু তৈরির আগে পথচারী সেতু দিয়ে লোকজন অনায়াসে নিরাপদে রাস্তা পারাপার হতে পারতো। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এ উড়াল সেতু নির্মাণের সাথে সাথে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে হারিয়ে যায় পথচারী পারাপারে অন্যতম ব্যস্ততম একটি ফুটওভার ব্রিজ। নেই জেব্রাক্রসিংও। তা না থাকায় প্রতিনিয়ত মৃত্যুঝুঁকি মাথায় নিয়ে মানুষকে রাস্তা পার হতে হচ্ছে নিত্যদিন।
গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও এনটিভির সিনিয়র নিউজরুম এডিটর আবুল কালাম শাকিল যাত্রাবাড়ী গোলচত্বর থেকে ট্রাফিক সিগনালের সময় রাস্তা পার হতে গিয়ে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়। পরে আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবুল কালাম শাকিল বলেন, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি সব সময় ব্যস্ততম রাস্তাগুলো পারা-পারের সময় ফুটওভার ব্রীজ দিয়ে রাস্তা পারাপার হই। তবে যেখানে ফুটওভার ব্রিজ না থাকে সেখানে ট্রাফিক সিগনালের সময় রাস্তা পার হই। এখানে ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ট্রাফিক সিগনালের সময় রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হই। এই চৌরাস্তায় ফুটওভার ব্রীজ বা বিকল্প ব্যবস্থা থাকলে হয়তো আমার এ দূর্ঘটনা নাও ঘটতে পারতো।
এদিকে যে সড়কে ফুটওভার ব্রিজ দরকার নেই সে সড়কে দেয়া হচ্ছে ফুটওভার ব্রিজ। যেমন যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে মাত্র ৫০ গজ পূর্বে ঢাকা ডেমরা সড়কে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে দৃষ্টিনন্দন ফুটওভার ব্রীজ তৈরী করা হয়েছে। কিন্তু দেখা যায় এই ফুটওভার ব্রীজটি দিয়ে শত খানেক লোক চলাচল করে কিনা সন্দেহ। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার গোলচত্বর আগে উন্মুক্ত ছিল। লক্ষ লক্ষ লোকজন গোল চত্বরে দাঁড়িয়ে নিরাপদে রাস্তা পার হতো। কিন্তু এখন এই গোল চত্বরে নার্সারী করা হয়েছে। গোল চত্বরে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা না থাকায় গোল চত্বরের পাশ দিয়ে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হচ্ছে, বিশেষ করে বয়স্ক নারী-পুরুষ ও শিশুদের চলাচলে খুবই অসুবিধা হচ্ছে।
যানবাহন নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বশীল বাহিনীর লোকজন যেন উদাসীন দর্শকের দায়িত্ব পালনে খুবই ব্যস্ত। চৌরাস্তার দক্ষিণপার্শ্বে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ মার্কেট ও দোকানের জন্য সব সময় যানজট লেগেই থাকে, এতে মানুষের রাস্তা পারাপারের অসুবিধা হয়। বর্তমান পরিস্থিতি সাময়িক সমাধান কল্পে এখানে জেব্রাক্রসিং দিয়ে আপাতত ট্রাফিক সিগনালকে বাস্তবমুখী করে পথচারী পারাপারে যুগোপযোগী করবে। সুদূরপ্রসারী চিন্তাকে বাস্তবায়ন করতে হলে এখানে প্রয়োজন আন্ডারপাস। মুক্তি পাবে দূর্ঘটনার কবল থেকে, বাঁচবে হাজার হাজার প্রাণ।