নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : পুলিশের খাতায় মৃতের তালিকায় নাম লেখা নারী হত্যার দেড়মাস পর জীবিত হয়ে ফিরে আসা স্কুল ছাত্রী জিসা মনি (১৫) আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে । ২৪ আগস্ট সোমবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফতাবুজ্জামানের আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে তিনি। জিসা মনি আদালতের তার নিখোঁজ থাকার বিষয়, প্রেম, বিয়ে এবং ফিরে আসার পুরো ঘটনা বর্ণনা করে। পরে বয়স বিবেচনায় আদালত তাকে পরিবারের জিম্মায় দেয়ার আদেশ দেন। এদিকে তার স্বামী ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে পুলিশ আদালতে পাঠিয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান।
ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, জিসা মনির মেডিকেল টেস্ট করা হয়েছে। বিকালে আদালতে ২২ ধারায় জিসা মনির জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পরে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জিসা মনির স্বামী ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। আগামীকাল ২৫ আগস্ট মঙ্গলবার রিমান্ড শুনানি হবে।
জিসা মনির বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন গনমাধ্যমকে বলেন, জবানবন্দি রেকর্ড করার পর মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসছি। মেয়েকে যেহেতু পেয়ে গেছি তাই মামলা তুলে নেবো।
এদিকে এর আগে শহরের দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকার পঞ্চম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী জিসা মনি (১৫) গত ৪ জুলাই নিখোঁজ হয়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির পর ১৭ জুলাই সদর মডেল থানায় একটি জিডি করেন জিসার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন। এক মাস পর ৬ আগস্ট একই থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বন্দর উপজেলার বুরুন্ডি খলিলনগর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ (২২) ও তার বন্ধু বুরুন্ডি পশ্চিমপাড়া এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে রকিবকে (১৯)। ওইদিনই তাদের গ্রেফতার করা হয়। একই ঘটনায় দুই দিন পর গ্রেফতার করা হয় বন্দরের একরামপুর ইস্পাহানি এলাকার বাসিন্দা নৌকার মাঝি খলিলকে (৩৬)।
গত ৯ আগস্ট পুলিশ জানায়, জিসা মনিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয় আসামিরা। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় এই ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে বলেও জানায় পুলিশ। অথচ গত ২৩ আগস্ট দুপুরে বন্দরের নবীগঞ্জ রেললাইন এলাকায় সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় পাওয়া যায় নিখোঁজ জিসা মনিকে। এ ঘটনায় চারদিকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পুলিশের তদন্ত ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দি প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
তাছাড়া এদিকে আসামিদের স্বজনরা বলছেন, পুলিশি হেফাজতে অমানুষিক নির্যাতনের মুখে তারা ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পুলিশ এই ঘটনা সাজিয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুন আসামির স্বজনদের কাছ থেকে অবৈধ উপায়ে কয়েক হাজার টাকা নিয়েছেন বলেও রয়েছে অভিযোগ।