নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) খালেদা জিয়ার কারাবাসের দুই বছর পূর্ণ হয়েছে। অসুস্থতার কারণে বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
দলটির বিভিন্ন জ্যেষ্ঠ নেতা, চিকিৎসক ও পরিবার সদস্যদের দাবি, খালেদা জিয়া অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। কারাগারে যাওয়ার পর তার সমস্যাগুলো আরও বেড়েছে। এমন অবস্থায় অবিলম্বে তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তাই দেশে কিংবা বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার জামিন দাবি করে আসছেন তারা।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগে থেকেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। বর্তমানে তার রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস মারাত্মক অবস্থায় রয়েছে। রোগটির যথাযথ চিকিৎসা না হওয়ার কারণে তিনি প্রায় পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাকে পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, তিনি নিজের হাতে খাবারও খেতে পারছেন না। তার সঙ্গে যে থাকে সে চামচ দিয়ে খাইয়ে দেয়। নিজে থেকে কিছুই করতে পারেন না। কোথাও যেতে হলে তাকে হুইলচেয়ারে নিতে হয়। অন্যের সাহায্য ছাড়া তিনি কিছুই করতে পারেন না।
খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না দাবি করে বিশিষ্ট এ চিকিৎসক জানান, বর্তমানে তার ডায়াবেটিস ১১ থেকে ২২ এর মধ্যে ওঠানামা করছে। ইনসুলিন ও ট্যাবলেট দেওয়ার পরও তা কন্ট্রোলে আসছে না। হাইকোর্টের আপিল বিভাগে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে ডায়াবেটিস আশানুরূপভাবে কন্ট্রোলে আসছে না। তাছাড়া উনার দাঁতেরও সমস্যা রয়েছে।
ড. এজেডএম জাহিদ হোসেন দাবি করেন, খালেদা জিয়ার বয়স এখন ৭৭ বছর। যে বয়সে তার পরিবারের সান্নিধ্যে থাকা প্রয়োজন সেই বয়সে তিনি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। তাকে মারাত্মকভাবে একাকীত্ব পেয়ে বসেছে। তাই উনাকে আধুনিক চিকিৎসা দিতে হবে। যদিও হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড থেকেও বলা হয়েছে, তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। কিন্তু সেটিও তিনি ঠিক মতো পাচ্ছেন না।
তিনি আরও বলেন, আধুনিক চিকিৎসা দিতে হলে তো আধুনিক সেন্টারও লাগে। বিএসএমএমইউ বাংলাদেশের আধুনিক হাসপাতাল, কিন্তু এটা তো সব ক্ষেত্রে আধুনিক হাসপাতাল নয়। তাই আধুনিক চিকিৎসার জন্য যত দ্রুত সম্ভব তার জামিন বা মামলা স্থগিত করে পছন্দমতো হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বর্তমানে ৩৬টি মামলার মধ্যে দুর্নীতির মামলাই রয়েছে ৫টি। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় তাকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। মূলত সে দিন থেকেই কারাগারে আছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।