নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব সংবাদদাতা ) : ফতুল্লার কুতুবপুরের দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও তালিকাভূক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী মীর হোসেন মীরু ও তার সহযোগীদের অত্যাচার থেকে বাঁচানোর দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়। কুতুবপুরের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধন থেকে মীর হোসেন মীরু ও তার বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা করেন ভুক্তভোগিরা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান লিমন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মীর হোসেন মীরুসহ তার বাহিনীর অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তার উপর নির্যাতন চালানো হয়। ইতোমধ্যে তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় জনতা লীগের সভাপতি শেখ স্বাধীন, শাজাহান ও নুরুল হককে হত্যা করেছে। তার বিরুদ্ধে আমরা এখন প্রতিবাদ করাতে আমাদেরকে মারতে চায়। তারা আমাদেরকে বাঁচতে দিবে না। আমরা বাঁচতে চাই।
তিনি আরও বলেন, এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার চালাচ্ছে। তার নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী এসব করে। বহিরাগত অনেক সন্ত্রাসী তার সাথে রয়েছে। রয়েছে কিশোর গ্যাং। আমরা এলাকায় চলাফেরা করতে পারি না তার অত্যাচারে। মা বোন নিয়েও চলাচল করতে পারি না। ছাত্রদের উপরও তারা নির্যাতন চালায়। আমরা চাই, এলাকায় কোনো মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী যাতে না থাকে। আমরা আমাদের নিরাপত্তা চাই।
মীরু হোসেনের বাড়ির পাশের এক ভুক্তভোগি আব্দুল জলিল বলেন, এলাকায় মামুন নামে একজন মার্কেট করেন। সে মার্কেট থেকে বিশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে সে। এ কথা আমি মামুন সাহেবকে জানাইনি বলে আমাকে মামুন সাহেবের সামনে আমাকে বেধড়ক পেটায়। আমাদের বাড়িতে আগুন লাগায়। সেদিন আমরা কোনো রকমে জীবন নিয়ে পালিয়ে আসি। আমি একজন রাজমিস্ত্রী। অথচ আমরাও শান্তি পাই না। আমাদেরকেও চাঁদা দিতে হয়। তার ওখান থেকে জোরপূর্বক রড সিমেন্ট নিতে বাধ্য করে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ভুক্তভোগি চাঁদ শিকদার সেলিম মীর সোহেল আলীকে অনুপ্রবেশকারী উল্লেখ করে বলেন, সম্প্রতি আমার বড় ভাই মুরাদকে পিস্তল ঠেকায় মীরু বাহিনীর কিলার শাকিল, গেন্দু, ভিপি রাজীবসহ আরও কয়েকজন চাঁদা দাবি করে। না পেলে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দেয়। পরে এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করি। এই অভিযোগেগর সূত্র ধরে এসআই মিজান আমাদের থানায় যেতে বলেন। শুক্রবার আমরা থানায় গেলে মীরুর পক্ষ নিয়ে মীর সোহেল আলী আমাকে থানার ভেতরই মারধর করে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন তখন সোহেলদের মতো দলে অনুপ্রবেশকারীরা থানার ভেতরই এই ধরণের কর্মকান্ড ঘটিয়ে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাচ্ছে। তারা আমাদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। আমাদের কর্মীদের নির্যাতন করছে। আমরা এসব অনুপ্রবেশকারীদের বহিস্কার দাবি করছে।
প্রসঙ্গত, মীর হোসেন মীরু কুতুবপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি এবং সাংসদ শামীম ওসমানের অনুসারি। এছাড়া তিনি ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের তালিকাভূক্ত ১০ নম্বর সন্ত্রাসী।