বিদেশি মদ ও অস্ত্রসহ কাউন্সিলর রাজীব গ্রেফতার

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : চলমান ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ঢাকা উত্তরের ৩৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব। এ সময় ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে সাতটি বিদেশি মদের বোতল, একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, তিন রাউন্ড গুলি, নগদ ৩৩ হাজার টাকা ও একটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।

১৯ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বসুন্ধরার ৮ নম্বর সড়কের ৪০৪ নম্বর বাড়িটি ঘিরে রাখে র‍্যাব। পরে সেখান থেকে দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে কাউন্সিলর রাজীবকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম সাংবাদিকদের জানান, আমরা রাত ৯টার দিকে জানতে পারি, রাজীব তার বন্ধুর বাসায় আত্মগোপন করে আছেন। সে তথ্যের ভিত্তিতে ওই বাসাটিতে অভিযান চালিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি এবং দখলদারিত্বের অভিযোগ রয়েছে। অভিযানে ওই বাসা থেকে সাতটি বিদেশি মদের বোতল, একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, তিন রাউন্ড গুলি, নগদ ৩৩ হাজার টাকা ও একটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়। এছাড়া রাজিব অস্ত্রের কোনো কাগজপত্র আমাদের দেখাতে পারেনি। এটি অবৈধ অস্ত্র।

রাজীব ওই বাসায় কত দিন আত্মগোপনে ছিলেন জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আমাদের জানা মতে তিনি গত ১৩ অক্টোবর থেকে এই বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। তবে তার বন্ধুকে আমরা পাইনি। তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন।

তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা মাত্র এখানে অভিযান শেষ করেছি। বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি।

এদিকে এর আগে ২০১৫ সালে কাউন্সিলর নির্বাচনে তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। দলীয় প্রার্থী ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি শেখ বজলুর রহমানকে হারিয়ে নির্বাচিত হন তিনি।

মোহাম্মদপুর এলাকায় যুবলীগের রাজনীতি দিয়েই রাজীবের রাজনৈতিক জীবন শুরু। অল্পদিনেই নেতাদের সান্নিধ্যে মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ বাগিয়ে নেন। এরপর অভিযোগ আছে, কেন্দ্রীয় যুবলীগের এক নেতাকে এক কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন রাজীব।

যুবলীগের সাইনবোর্ড আর কাউন্সিলরের পদটি ব্যবহার করে এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন রাজিব। বিগত চার বছরে আট থেকে ১০টির বেশি নামীদামি ব্র্যান্ডের গাড়ি কিনেছেন। গুলশান ও মোহাম্মদপুরে আটটি ফ্ল্যাট রয়েছে তার। মোহাম্মদীয়া হাউসিং সোসাইটির ১নং রোড এলাকায় পানির পাম্পের জন্য নির্ধারিত জায়গায় বাড়ি বানিয়েছেন। বাড়ির জায়গাটির দামই প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা।

কমিশনার হওয়ার পরপরই তিনি বাহিনী দিয়ে প্রচারণায় বনে যান স্বঘোষিত জনতার কমিশনার। তবে কথিত এই জনতার কমিশনার এর বিরুদ্ধে জনতার কাছ থেকেই মাসে কোটি টাকা চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ, চন্দ্রিমা হাউসিং, সাত মসজিদ হাউসিং, ঢাকা উদ্যানসহ বিভিন্ন এলাকায় দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে টং দোকানদার থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া রাজীবের বিরুদ্ধে।

add-content

আরও খবর

পঠিত