না.গঞ্জে চকবাজারের ঘটনা পূণরাবৃত্তির আশংকা এমপি সেলিম ওসমানের

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : ভবিষ্যতে নারায়ণগঞ্জে রানাপ্লাজা বা চকবাজারের বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। যাতে নারায়ণগঞ্জবাসীকে এমন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে না হয় সেজন্য ঈদের পর পরই এ ব্যাপারে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পরিবেশ অধিদপ্তর ও কলকারখানা অধিদপ্তরের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। ভবিষ্যত নারায়ণগঞ্জকে নিরাপদ রাখতে তিনি আইন প্রয়োগে কঠোর হওয়ার অনুরোধ রাখেন।

বৃস্পতিবার (৩০ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রাইসিস কমিটি অঞ্চল-১, ২, ৩ এর সভায় এমপি সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন।

শহরের রিভারভিউ কমপ্লেক্স এবং হাবিব কমপ্লেক্সের নাম উল্লেখ করে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, মার্কেট দুটিতে নামে বেনামে অজ¯্র প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যারা গার্মেন্টস ও নীটওয়্যার নাম দিয়ে তারা বিভিন্ন ব্রান্ডের নাম ব্যবহার অবৈধভাবে পন্য বিদেশে পাচার করছে। এরা বিকেএমইএ, বাংলাদেশে হোসিয়ারী অ্যাসোসিয়েশন বা নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের কোন সদস্য পদ নেই। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আমরা যারা বৈধ ভাবে ব্যবসা করছি তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। দেশের রপ্তানি আয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। অথচ খোজঁ নিলে দেখা যাবে এরা কোন প্রকার ইউডি প্রদান করেনা, এদের কোন টিন সার্ফিকেট নাই, কারখানা গুলোতে অগ্নি নির্বাপক কোন ব্যবস্থা নেই। নেই জরুরি অবতরন ব্যবস্থা। এখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার পাইকার সমাগম হয়।

তারা হয়তো জানেনই না মার্কেটের কোথায় কি রয়েছে। এখানে যদি রানা প্লাজা বা চকবাজারের মত ঘটনা ঘটে তাহলে কয়েক হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটবে। মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে রেখে পয়সা উপর্জান করবে এটা কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। তাই ঈদের পর উক্ত দুটি মার্কেট সহ নারায়ণগঞ্জে যেখানে যেখানে নীটওয়্যার বা গার্মেন্টস নাম দিয়ে অবৈধভাবে ব্যবসা করে দেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। আর যদি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় তাহলে যারা বিকেএমইএ, বাংলাদেশ হোসিয়ারী অ্যাসোসিয়েমন এবং নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সদস্য নয় এদের কোন দায়িত্ব এই সংগঠন গুলো নিবেনা। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিকেএমইএ এর পক্ষ থেকে একটি লিখিত আবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জমা দিয়েছেন।

অপরদিকে শহরের নয়ামাটি ও উকিলপাড়া হোসিয়ারী শিল্প এলাকা দুটিকেও ঝুকিপূর্ণ এলাকা উল্লেখ করে তাদেরকে অন্যত্র স্থানান্তরের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা উল্লেখ করেছেন বিকেএমইএ  সভাপতি সেলিম ওসমান। তিনি বলেন, শহরের নয়ামাটি ও উকিলপাড়ায় কয়েক হাজার হোসিয়ারী কারখানা রয়েছে। এই এলাকা দুটির একটি ঐতিহ্য রয়েছে। একটা সময় এখানে টিনের ঘরে ব্যবসা পরিচালিত হতো। সময়ের পরিবর্তে এখানে একের পর এক ভবন গড়ে উঠেছে। যেখানে একই সাথে উপরে ফ্যামেলি বাসা এবং নিচে হোসিয়ারী কারখানা পরিচালিত হচ্ছে। এখানেও যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। উক্ত এলাকা দুটিতে যদি চকবাজারের মত অগ্নি কান্ডের ঘটনা ঘটে তাহলে তার ভয়াবহতা কি হতে পারে তা ধারণা করা অসম্ভব। অথচ এই হোসিয়ারী শিল্পকে স্থানান্তরিত করার জন্য পঞ্চবটিতে বিসিক নির্মাণ করা হয়েছিল। আজকে যেখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ লাখ ডলারের পন্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। তাই নারায়ণগঞ্জ শহরের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং শহরটিকে জঞ্জাট মুক্ত রাখতে বিসিক শিল্পনগরীর ন্যায় নয়মাটি ও উকিলপাড়া হোসিয়ারী শিল্পকে অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে।

এমপি সেলিম ওসমানের উপস্থাপন করা বিষয় গুলো গুরুত্ব দিয়ে ঈদের পর রিভারভিউ মার্কেট, হাবিব কমপ্লেক্স মার্কেটের অভ্যন্তরে অবৈধ কারখানার সহ সকল অবৈধ কারখানার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দুটি দপ্তরকে অনুরোধক্রমে নির্দেশ প্রদান করেন।

জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যা›ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বিকেএমইএর সহ সভাপতি মনসুর আহমেদ, পরিচালক জিএম ফারুক ও র‌্যাব-১১-এর সিপিএসসির সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

add-content

আরও খবর

পঠিত