জাতিগত বৈষম্যকে জয় করলেন না.গঞ্জের সনু রাণী

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : সমাজের ধর্মীয় ও জাতিগত বৈষম্যের দেয়াল ডিঙিয়ে সফলতা পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সনু রাণী দাস। হরিজন কলোনিতে জন্ম নিয়েও এই নারী জায়গা করে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি, কথা বলছেন নারী সমাজের অধিকার নিয়ে। কিন্তু নিজের দেশেই উচ্চ শিক্ষার মূল্যায়ন না পেয়ে হতাশ সনু।

সমাজের নিম্ন স্তরে বাস করা মানেই যে পিছিয়ে থাকা নয় সেটি প্রমাণ করেছেন সনু রাণী দাস। নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজারে হরিজন কলোনিতে জন্ম তার। সামাজিক নানা প্রতিকূলতার সাথে কঠোর সংগ্রাম করে ধাপে ধাপে এসএসসি, এইচএসসি ও স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। প্রতিটি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে সম্প্রদায়ের মধ্যে তাক লাগিয়ে দেন সনু। বর্তমানে মাস্টার্স প্রিলিমিনারির শিক্ষার্থী। মানবাধিকার নিয়ে কথা বলতে বিভিন্ন এনজিওর সহযোগিতায় নেপাল, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রসহ নানা দেশে সফর করেছেন সনু।

এত সাফল্যের মধ্যেও মনের গভীরে হতাশা সনুর। স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করলেও এখন পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি কোন চাকরির সুযোগ হয়নি তার। সনু রাণী দাস বলেন, যেহেতু আমি পড়াশোনা করেছি, আমার জুনিয়ররা যদি বলে আমি এত পড়াশোনা করে কী করছি, তাহলে আমি কী বলব। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে সহযোগিতা করে তাহলে আমি আরো ভালো করতে পারব।  সনুর এই সাফল্যে গর্ববোধ করেন তার বাবা-মাসহ হরিজন সমাজের সব বয়সী মানুষ।

নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সনুর অর্জিত এই শিক্ষাকে মূল্যায়ন করে চাকরি প্রদানের ব্যাপারে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন হরিজন সমাজ সেবা সংঘের এই নেতা।

শিক্ষা অর্জনের ব্যাপারে গভীর আগ্রহের কারণেই এইচএসসিতে পড়ার সময় ২০০৮ সালে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিদেশি এনজিও সংস্থা গ্লোবাল এক্সচেঞ্জের আওতায় স্কটল্যান্ডে টানা তিন মাস অবস্থান করার সুযোগ হয় সনু রানীর। এরপর ২০১০ সালে জাতিসংঘের হ্যাবিটেট প্রোগ্রামে অংশ নিতে তিনি ব্রাজিল ভ্রমণ করেন। পরবর্তীতে ২০১১, ২০১২ ও ২০১৩ সালে টানা তিনবার দেশের প্রতিনিধি হয়ে জেনেভায় মানবাধিকার সম্মেলনে অংশ নেন তিনি।

add-content

আরও খবর

পঠিত