নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সোনারগাঁ প্রতিনিধি ) : সোনারগাঁয়ে অপহরণ করার ঠিক তিন মাসের মাথায় রিপন হোসেন (১৫) নামক এক কিশোরকে রোববার রাত আনুমানিক ১২টা সময় তার নিজ বাসার সামনে ফেলে রেখে যাবার সময় তার পরিবারের লোকজনের ধাওয়া খেয়ে রিক্সাযোগে কোনরকমভাবে জীবন বাঁচিয়ে অপহরণকারীরা পলায়ণ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
রিপন আড়াইহাজার উপজেলার তাতুয়াকান্দা গ্রামের সগীর আহম্মেদের ছেলে। তার বাবা মদনপুর সহ আশপাশ এলাকায় কাজ করে বিধায় তারা সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর ইউপির ললাটি এলাকায় বসবাস করে থাকে।
নিখোঁজের বিষয়টি ১৬/০২/২০১৯ এবং ২৫/০২/২০১৯ তারিখে জেলার কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে সন্ধার পর থেকে রিপন নিখোঁজ হয়। সে রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি কয়েল ফ্যাক্টরীতে কাজ করতো। প্রতিদিনের মত সেখানে কাজ করলেও ঘটনার দিন সে আর বাড়ী ফিরেনি বলে তার স্বজনরা গণমাধ্যমকে জানায়। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে রূপগঞ্জ থানায় রিপনের বাবা সগীর আহম্মেদ একটি সাধারণ ডায়েরী করেন, যার নম্বর-১১১৮।
এদিকে বন্দিদশা থেকে ফিরে রিপন গণমাধ্যমকে জানান, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে কর্মস্থল থেকে বেতন নিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো এলাকায় রাস্তা পার হবার সময় কতিপয় দুর্বৃত্ত তাকে জোরপূর্বক ট্রাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর একটি অন্ধকার কক্ষে বন্দি করে রাখে। দিনে দুইবার খাবার খেতে দিলেও খাবারের সাথে চেতনানাশক ঔষধ মিশানো থাকতো বিধায় খাবারের পরপরই সে অচেতন হয়ে ঘুমিয়ে পড়তো। ঔষধ মিশানো খাবার বুঝা সত্ত্বেও পেটের ক্ষুধা নিবারণের জন্য খাবার গ্রহণ করা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প ছিলনা বলে জানায় রিপন।
আটকে রাখার জায়গাটি কোথায়, কি উদ্দেশ্যে তাকে তিন মাস আটকে রাখলো, কিংবা কয়জন অপহরণকারী ছিল কিছুই বর্ণনা করতে পারেনি অপহৃত রিপন। কিন্তু এসময় তারা তাকে শারীরিকভাবে প্রহার করেনি বলেও জানায় সে। ১২ই মে অপহরণকারীরা তার কাছ থেকে তার ঠিকানা জিজ্ঞেস করে এবং রাত আনুমানিক ১২টায় তার বাড়ীর সামনে তাকে ফেলে রেখে যাবার সময়, তার পরিবার ও আশেপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেলে, তারা তৎপর হয়ে যায় এবং দ্রুত বেগে ললাটি থেকে মদনপুর স্ট্যান্ডের দিকে ব্যাটারীচালিত রিক্সা চালিয়ে তারা পলায়ণ করে।
রিপনের বাবা তাদের পিছনে ছুটলেও তাদের আটকানো সম্ভব হয়নি। ঠিক কি উদ্দেশ্যে রিপন অপহৃত হলো এবং কেনই তারা তাকে ফিরিয়ে দিয়ে গেলো এ পশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের মাঝে।