নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর সংবাদদাতা ) : বন্দরের মদনপুরে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়ে এক মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করে পলায়ন করেছে এক ছলনাকারি। উক্ত ছলনাকারির নাম মো. মানিক হোসেন (ছমির) চাঁদপুর জেলা কচুয়া থানার পাকশ্রীরামপুরের নোয়াগাও গ্রামের নিপেন্দ্র চন্দ্র দাস এবং শোভা রানী দাসের ছেলে।
জানা যায়, ছমির একজন ট্রাক ড্রাইভার। সেই সুবাধে সে বন্দর থানাধীন মদনপুরের হরিপুর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকা শুরু করেন। তারই পাশে ভাড়া বাসা নিয়ে থাকতেন মোসা. নাজমা বেগম। যার স্থায়ী ঠিকানা দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানার ওসমানপুরের খদ্দদা দাতপুর কলোনীর বাসিন্দা মৃত মোশারফ হোসেন ও রাজিয়া বেগমের মেয়ে। নাজমা বেগমের সাথে সমিরের দেখাশুনায় একসময় ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠে। তারপর সমির নিজের ইচ্ছায় ইসলাম ধর্মকে ভালোবাসতে শুরু করে। অত:পর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। নাজমা বেগম ও ছমির সিদ্ধান্ত নেয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার।
এই বিষয়ে ভূক্তভোগী নাজমা বেগম বলেন, ২০১০ সালের (২৬ অক্টোবর) দশ লক্ষ টাকা কাবিন নামা মূলে ইসলামি শরা-শরিয়ত মোতাবেক উপস্থিত স্বাক্ষীগণের সম্মুখে মাননীয় নোটারী পাবলিক আদালত, ঢাকার মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই আমরা। আমি ছমিরের বাবা-মা এবং পরিজনদের সাথে সম্পর্ক অব্যাহত রাখার জন্য মানসীক দিক থেকে সব সময় উৎসাহ দিতাম তাকে। সমির তাতে রাজি হতেন না। আমার উৎসাহতে সমির তার বাবা-মার জন্য প্রতি মাসে টাকা পাঠাতেন। বিয়ের পরের কিছুদিন পর হতেই ৮ থেকে ৯ বছরের সাংসারিক জীবনে সে আমার সাথে নানা ভাবে খারাপ আচার-আচরণ শুরু করে এবং ভরন পোষনের দায়িত্বে অবহেলা শুরু করে দেয়। আমার পেট চালাতেও হিমসিম খেতে শুরু করি আমি। এক সময় সে আমার ভরন পোষন বন্ধ করে দেয়। তার এহনো আচরনে আমি বাদ্য হই তার সম্পর্কে ভালো করে খোজ খবর নেওয়া। পরবর্তীতে জানতে পারি ছমির রিনা দাস নামে আরেক হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করেছে। রিনা দাস কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার কঙ্গাই দক্ষিণ হিন্দু পাড়ার কালিপদ দাসের মেয়ে। এই জানাজানির ঘটনাটি ঘটে ২০১৮ সালের (১২ ডিসেম্বর) তারিখে।
এরপর ভুক্তভোগী নাজমা বেগম কান্না কন্ঠে আরও বলেন, আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে আমাকে মারধর করে আমাদের বিয়ের অর্জিনিয়াল ডকুমেন্টস গুলোকে পুড়িয়ে ফেলে এবং আমাকে মারধর করে হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে গলা টিপে ধরে। আশপাশের লোকজন আমাকে তার কাছ থেকে উদ্ধার করে। এরপর ছমির হঠাৎ করে উধাও হয়ে যায়। আমি তার খোঁজে তার গ্রামের বাড়িতে যাই। সে আমাকে দেখে রেগে যায় এবং আমাকে সেখানেও অনেক মারধর করে।
অনেকটা মলিন হয়ে এরপর নাজমা বেগম বলেন, আমার স্বামী আমাকে বলে তুই আর কোন দিন আমার নিকট যোগাযোগ করতে চেষ্টা করলে তোকে মেরে ফেলবো। আমি সেইখান হতে বাদ্য হয়ে চলে আসি অনেক অপমানিত হয়ে। এরপর আমি মুঠোফোনে মাঝে মধ্যে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সে আমাকে কয়েকজন অচেনাকন্ঠের সেনাবাহিনী এবং এসপি পরিচয়ধারীর মানুষকে দিয়ে হুমকি অব্যাহত রাখে বিভিন্ন ফোন নাম্বার দিয়ে। তার দ্বিতীয় স্ত্রী দিয়েও আমাকে একের পর এক হুমকি দেয়। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
উল্লেখ্য, নাজমা বেগম প্রতারক ছমিরের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ (পিপিএম) বার, (বিপিএম) বার এর কাছে একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।