নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : এবার টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে ফেব্রুয়ারি মাসে। ২৩ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে তাবলিগ জামাতের বিবাদমান দুই পক্ষের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এই তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
বৈঠকে মাওলানা সাদ আহমাদ কান্ধলভী ও মাওলানা জোবায়ের আহমেদের পক্ষের তাবলিগ জামাত নেতারা উপস্থিত ছিলেন।দুই পক্ষে নেতৃত্ব দেন ওয়াসিকুল ইসলাম ও মাওলানা জোবায়ের। উভয় পক্ষেই ১৬ থেকে ১৭ জন করে সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ, স্বরাষ্ট্র সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, ধর্ম সচিব মো. আনিছুর রহমান, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের প্রধান বেনজির আহমেদ, আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন।
গত সোমবার ইজতেমার আয়োজন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠকে হয়। তবে ওই বৈঠকে সাদপন্থী অনুসারীরা অংশ নিলেও সাদ বিরোধী অংশের মুরব্বিরা যোগ দেননি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজকে দুই পক্ষকে নিয়ে আমরা বৈঠকে বসেছিলাম। একটা হল মাওলানা ওয়াশেখের নেতৃত্বে। আরেকটি হল মাওলানা জুবায়েরের নেতৃত্বে। এছাড়া দুই পক্ষের সবাই এখানে উপস্থিত ছিলেন। এতক্ষণ খোলামেলা আলাপ হল। আলাপের পর সিদ্ধান্ত হল, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের যেকোনো সময় টঙ্গিতে বিশ্ব ইজতেমা হবে। দুই পক্ষই একত্রে এই ইজতেমা করবে।
তবে ইজতেমা কি ভাবে সম্পন্ন হবে সে বিষয়ে আগামীকাল সকাল সাড়ে ১০টায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রীরর নেতৃত্বে আরেকটি সভা হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমমন্ত্রী। তিনি বলেন, সে সভাতে কবে, কখন এবং কিভাবে ইজতেমা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাওলানা সাদ এই ইজতেমায় আসবেন না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইজতেম দুইভারে হবে নাকি একবারেই সম্পন্ন হবে সে বিষয়ে আগামীকাল সিদ্ধান্ত হবে।
এসময় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে একটাই ইজতেমা হবে, দুইটা হবে না। সারাদেশে যে গোলযোগ হচ্ছে সেটি কাম্য নয়।
২০১৮ সালের বিশ্ব ইজতেমার পর তাবলিগ জামাতের দুইপক্ষ আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করে। নিজামুদ্দীন মার্কাজপন্থী মাওলানা সাদের অনূসারীরা ১১, ১২, ও ১৩ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করেন। এর বিরোধিতা করে জানুয়ারির ১৮, ১৯ ও ২০ ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করে হেফাজতপন্থী মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা। এ নিয়ে সারা বছরই উত্তেজনা থাকে। গত ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে টঙ্গীর পাগার গ্রামে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম বিশ্ব ইজতেমা। তাবলিগ জামাতের উদ্যোগে প্রতি বছর এ ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় টঙ্গীর তুরাগতীরে। ১৬০ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ইজতেমা মাঠে বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলিগ জামাতের অনুসারী ধর্মপ্রণ মুসলমানরা অংশ নেন। তাঁরা এখানে তাবলিগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন এবং ইসলামের দাওয়াতি কাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।