নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ সংবাদ দাতা ) : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে এবং পলাশ থানার সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত টাওড়া গ্রামটি। পাঁচদোনা-ডাঙ্গা ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি ফোর লেনে উন্নতিকরণ লক্ষ্যে জমির মালিকদের কাছ থেকে অধিগ্রহন করা হবে। ১১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে এক কিলোমিটার সড়ক টাওড়া গ্রামে পড়েছে। স্থানীয় জমির মালিকরা সম্ভাব্য অধিগ্রহনকৃত জমিতে অধিক পরিমাণ অর্ধলোভের আশায় নিম্নমাণের সামগ্রী দিয়ে বসবাস অযোগ্য বহুতল ভবণ নির্মাণসহ ১৪টি পাঁকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতি মধ্যে দুর্ণীতির বিষয়টি দুর্ণীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসন নারায়ণগঞ্জকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
সড়েজমিনে ঘুরে জানা গেছে, সরকার কোন ভুমি অধিগ্রহন করলে, জমির বর্তমান মুল্যের চেয়ে তিন গুন মুল্যে দিয়ে থাকেন। এছাড়া বহুতল ভবন, কাঁচা-আধা কাঁচা ঘরবাড়ি বা অন্য কোন স্থাপনার ক্ষেত্রেও মুল্যে ধরে তার তিন গুন মুল্যে দেয়া হয়। পাঁচদোনা-ডাঙ্গা ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি ফোর লেনে উন্নতিকরণ লক্ষ্যে জমি অধিগ্রহণ করবে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে টাওড়া এলাকার জমির মালিকরা সম্ভাব্য অধিগ্রহনকৃত জমিতে অধিক পরিমাণ অর্ধলোভের আশায় নিম্নমাণের সামগ্রী দিয়ে বসবাস অযোগ্য বহুতল ভবণ নির্মাণসহ স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে। কয়েক দিনের মধ্যে রাতারাতি সম্ভাব্য অধিগ্রহনকৃত জমিতে গড়ে উঠে নিম্নমাণের সামগ্রী দিয়ে বসবাস অযোগ্য বহুতল ভবণ নির্মাণসহ স্থাপনা। এদের মধ্যে ৬টাওড়া গ্রামের আরএস ৩৯৫ দাগে মাকসুদ আলী ও শরীফ মেম্বারের ২য় তলা কমপ্লিট, ৩য় তলা চলমান। আরএস ৩৯৪ ও ৩৯৩ দাগে আলাউদ্দিন ইঞ্জিনিয়ারের মুরগীর ফার্ম এবং ১তলা বিল্ডিং চলমান, আরএস ৩৬০ দাগে ফিরুজ মিয়ার ৩তলা বিল্ডিং চলমান, আরএস ৩৫৮ দাগে রশিদ মিয়ার ১তলা চলমান, আরএস ৩৫৮ দাগে কাউছারের ১তলা চলমান, আরএস ৩৫৭ দাগে আমিনুলের ২য় তলার কাজ চলমান, মাহিজউদ্দিনের ২য় তলা চলমান, আরএস ৩৫৬ দাগে আরমানের নির্মাণাধীন, আরএস ৩১১ দাগে সিরাজুল ইসলামের মুরগীর ফার্ম, আরএস ৩১৫ দাগে আলমগীরের ১তলা, আরএস ২৭০ দাগে কফিল উদ্দিনের ১তলা বিল্ডিং ও আরএস ২৭৩ দাগে আবু সাইদের ২য় তলা বিল্ডিং রয়েছে। এসব ভবন করা হচ্ছে শুধু মাত্র অধিক পরিমাণে মুল্যে পাওয়ার আশায়। এসব অর্থলোভী জমির মালিকদের কার্যক্রম দেখে অন্যরাও স্থাপনা করার জন্য কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, পাঁচদোনা-ডাঙ্গা ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি ফোর লেনে উন্নতিকরণ লক্ষ্যে জমির মালিকরা সম্ভাব্য অধিগ্রহনকৃত জমিতে অধিক পরিমাণ অর্ধলোভের আশায় নিম্নমাণের সামগ্রী দিয়ে বসবাস অযোগ্য বহুতল ভবণ নির্মাণ করার বিষয়টি দুর্ণীতি দমন কমিশন (দুদক) আমলে নিয়ে সড়েজমিনে পরিদর্শণ করেন। পরে এ বিষয়ে তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসকের বরাবর একটি নির্দেশনা দেয়া হয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পান। এছাড়া কোন প্রকার ভবন বা স্থাপনা না করতে পারে সেজন্য স্থানীয় ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশকে নিয়মিত টহল ব্যবস্থার নির্দেশনা দেয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা দাবি করেন, বাঁধা দেয়ার পর কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। অধিগ্রহনকে কেন্দ্র করে বিষয়টি এ পর্যায়ে যাবে বলে তারা বুঝতে পারেনি। এছাড়া নিয়ম অনুযায়ী অধিগ্রহণের মুল্যে নেবেন জমির মালিকরা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল ফাতে মোঃ সফিকুল ইসলাম বলেন, সম্ভাব্য অধিগ্রহনকৃত জমিতে যারা অধিক পরিমাণ অর্ধলোভের আশায় নিম্নমাণের সামগ্রী দিয়ে বসবাস অযোগ্য বহুতল ভবণ নির্মাণ বা স্থাপনা করেছে, তাদের ব্যাপারে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়। জমির মালিকদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে জমির মালিক, তফসিল, ইমারতের ধরণ ও আলোকচিত্র সংযুক্ত করে একটি প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে ইতি মধ্যে দুর্ণীতি দমণ কমিশন (দুদক) কে পাঠানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, অসৎ উদ্দেশ্যে বা অর্থলোভে যারা এসব অবৈধ কাজ করেছে, তারা যাতে কোন প্রকার ক্ষতিপুরন না পায় সে ব্যপারেও সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া এ ব্যপারে দুদকের পক্ষ থেকে মামলা করা হতে পারে বলেও জানান ইউএনও।