পুলিশ জড়িত থাকলেও পিছপা হবো না : নবাগত পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মো.আনিসুর রহমান বিপিএম, পিপিএম (বার) বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি থাকবে। এক্ষেত্রে যদি কোন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করতে আমি কখনোই পিছপা হবো না। আমি যশোরে দায়িত্ব পালনকালীন সময়েও নিয়মিত মামলা করেছি। এখানেও আমি নিয়মিত মামলা করবো। পুলিশের কাজ মানুষের সম্পদ ও জীবন রক্ষা করা। এক্ষেত্রেও আমি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করবো। মানুষের জীবন বা সম্পদের উপর কেউ যদি কোন অত্যাচার করে এর উপর আমি জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করতে যাই। ক্রাইম এগেইনেস্ট প্রপার্টি অর্থাৎ ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি এ ধরণের কর্মকান্ড সক্রান্ত বিষয়ে আমি কোথাও ছাড় দেইনি। কারণ এগুলোতে ছাড় দিলে এ ধরণের অপরাধ বাড়তে থাকে।

সোমবার (২০ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় নবাগত পুলিশ সুপার এসব কথা বলেন।

পুলিশের সদস্য বলে কেউ অন্যায় করে কখনো ছাড় পাবেন না উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, কেউ যদি মাদক দিয়ে কাউকে ফাঁসাতে চায়, মাদক দিয়ে সাধারণ মানুষকে জড়িয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে চায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এটাকে বাস্তবায়ন করতে হলে যে যে আইনে যা যা প্রয়োগ করতে হবে আমি তাই করবো। কোথাও যদি কোন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকে সেটি আমাকে জানাবেন। আমি তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যাতে পুলিশ সদস্যরাও বুঝতে পারে যে, এই অপরাধ করলে এ শাস্তি হয়। ফলে দ্বিতীয়বারের মতো সেই অপরাধটি করার মতো সাহস কেউ করবে না। অনেক পুলিশ সদস্যের কিন্তু চাকরী গেছে। সকালে ব্রিফিং এ পুলিশের কর্মকর্তাদের বলে দিয়েছি। এরপর পুলিশ লাইন্সেও আমি কথা বলে একই ম্যাসেজ (বার্তা) পৌঁছে দেবো। তল্লাশির নামে, চেকপোস্টের নামে, বিভিন্ন মানুষকে ধরে এনে হয়রানি করা, জিম্মি করা এগুলো চলবে না। যত ধরণের নেগেটিভ কর্মকান্ড আছে সেগুলো করতে দেবো না।

নেগেটিভ কর্মকান্ড মানুষের সম্মানহানি হয় কখনোই বরদাস্ত করবো না বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকদের অনুরোধে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বিপিএম, পিপিএম বলেন, ফুটপাত নিয়ন্ত্রণ পুলিশের একার পক্ষে কাঁধে নেয়াটা ঠিক হবে না। এটি একটি সমন্বিত সিদ্ধান্তের বিষয়। জেলা প্রশাসক, সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসনের সমন্বিত সিদ্ধান্ত। জেলা প্রশাসক জেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি। পুলিশের পক্ষ থেকে যেগুলো বাস্তবায়ন করা উচিৎ আমরা সেগুলো করে দিবো। আমরা কারো সাথেই দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করতে চাই না। সবার সাথে সুসম্পর্ক রেখেই কাজ করতে চাই। জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট, সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি এবং জেলা পুলিশের সম্বন্বিত গৃহিত সিদ্ধান্তে পুলিশ তার দায়িত্ব পালন করবে।

পরিশেষে পুলিশ সুপার বলেন, আমি চাইবো নারায়ণগঞ্জ জেলা যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে আমি সেই চেষ্টা করে যাবো। এখানকার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে আমি সহযোগিতা চাই। কোথাও কোন অভিযোগ থাকলে সেটি আমাকে জানাবেন। যতদিন জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবো ততোদিন সকলের সহযোগিতা চাই। আপনাদের সকলের প্রত্যাশা পূরণের আপ্রাণ চেষ্টা করবো। মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোহাম্মদ নূরে আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. ফারুক হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. আবদুর রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ ও যশোরের পুলিশ সুপারসহ ১১ জন পুলিশ সুপার পদে রদবদল করা হয়। ফলে ১৯ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ থেকে বিদায় নিয়ে পুলিশ সুপার মঈনুল হক যশোরের পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। আর যশোরের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আনিসুর রহমান নারায়ণগঞ্জে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

add-content

আরও খবর

পঠিত