নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (সদর সংবাদ দাতা) : তেল–গ্যাস–খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ–বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি রফিউর রাব্বি বলেছেন, সরকার সব জনমত ও বিশেষজ্ঞমত উপেক্ষা করে একগুয়েমি করে বাংলাদেশের জন্য মহাবিপদ ডেকে আনছে। নির্বাচিত কোন সরকারই জনমতকে উপেক্ষা করে ইচ্ছেমতো যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার রাখে না। যে সরকার জনগণের আকাঙ্খার প্রতি নূন্যতম শ্রদ্ধাশীল সে সরকার দেশের মৌলিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বে অবশ্যই গণভোটের আয়োজন করবে। তিনি অবিলম্বে এ কার্যক্রম বন্ধ করে সুন্দরবন বিনাশী সকল কর্মকাণ্ড বন্ধ করার এবং সুন্দরবন নিয়ে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের প্রতি গণভোট আয়োজনের দাবি জানান।
সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করার দাবিতে সোমবার (১৯ মার্চ) বিকেলে চাষাঢ়াস্থ নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে তেল–গ্যাস–খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ–বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা এক প্রতিবাদ–সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনের অস্তিত্বের জন্য প্রবল হুমকি হিসেবে বিবেচিত মারাত্মক দূষক ও লাল ক্যাটাগরির শিল্প প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের এ সর্বনাশা সিদ্ধান্তে দেশ ও সারা বিশ্বের পরিবেশবাদীরা হতবাক হয়েছেন, প্রতিবাদ করছেন। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করেছেন যে, এ প্রকল্প সুন্দরবন ধ্বংসের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বিশ্বের অপূরণীয় ক্ষতি করবে।
রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেলা সদস্য সচিব ডা. নজরুও ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদব আবদুর রহমান, সিপিবি জেলা সংগঠক বিমর কান্তি দাস, বাসদেও জেলা সংগঠক আবু নাইম খান বিপÍব, ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা সভাপতি হাফিজুর রহমান, গণসংহতি আন্দোলন শহর সমন্বয়ক অঞ্জন দাস ও নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল।
সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, রামপাল তাপ–বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রমাণ করে যে, সুন্দরবন ধ্বংসের মতো আত্মঘাতী কার্যক্রম ও লুটপাট নির্বিঘ্নে করার ক্ষেত্রে সরকারের সক্রিয়তা আজ উন্মাদনার পর্যায়ে পৌঁছেছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের কথা বলে সরকার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের যে সর্বনাশা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভবিষ্যতে তা এই সরকারের কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবেই চিহ্নিত হবে। জাতিসংঘ ও এর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো সুন্দরবন বিনাশী রামপাল তাপ–বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ করে তা থেকে সরে আসতে আমাদের সরকারকে বারবার আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্বের পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিরা তা বাতিল করতে বলেছে। ভারতের জনগণও রামপাল প্রকল্প থেকে সরে আসার জন্য সে দেশে আন্দোলন করছে, সে দেশের সরকারকে চাপ দিচ্ছে– অথচ আমাদের সরকার এসবে কোনও ভ্রুক্ষেপ না করে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। কারণ ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা সেখানে শত শত একর জায়গা কিনে, দখল করে বিভিন্ন শিল্প–প্রতিষ্ঠান গড়েতোলার প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত হয়েছে। সেখানে বড় ধরণের লুটপাটের ক্ষেত্র তৈরী করেছে।