নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : হকার ইস্যুতে শহরে চলমান অস্থিতিকর পরিস্থিতির সমস্যার সমাধানে হকারদের সাথে আলোচনা করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান। ১৩ই জানুয়ারী শনিবার বিকেল ৪টায় শতাধিক হকার শহরের চাষাঢ়ায় সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয়। এতে করে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এসময় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তৎক্ষনাত চলে আসে পুলিশের কয়েকটি র্ফোস। এরপর পরিবেশ শান্ত করতে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে হকারদের নিয়ে আলোচনায় ডাক দেন এমপি সেলিম ওসমান।
এ সময় তিনি হকারদের ফুটপাতে না বসে চাষাঢ়ায় অবস্থিত জিয়া হল এবং কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে অস্থায়ী ভাবে দোকান বসিয়ে ব্যবসা করার পরামর্শ দিয়েছেন। পরবর্তীতে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার মাধ্যমে হকারদের জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এ সময় উপস্থিত সকল হকার বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফুটপাতে দোকান বসিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে দেওয়ার জন্য জোরালো দাবী জানান। সেই সাথে তারা হাত উচিয়ে ফুটপাতে জনসাধারণের চলাচলে কোন প্রকার দূর্ভোগ সৃষ্টি না করে শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে থাকবে বলে মত প্রকাশ করেন।
তবে এমপি সেলিম ওসমান হকারদের জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তিনি কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন না। যদি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তাদেরকে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফুটপাতে বসার অনুমতি দেন তাহলে তার কোন আপত্তি নেই। তবে সেটা সাময়িক সময়ের জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থাপনায়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী পর থেকে কোন অবস্থাতেই ফুটপাতে দোকানপাট বসানো যাবে না। হকারদের দাবীর কথা গুলো তিনি লিখিত আকারে সিটি করপোরেশনের মেয়রের কাছে পাঠাবেন। সিটি করপোরেশনের মেয়র অনুমতি দিলেই বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফুটপাতে হকার বসতে পারবে।
হকারদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, ফুটপাতে হকারদের দোকানপাটের কারনে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। ফুটপাতের দোকানপাটের কারনে যানজটের সৃষ্টি হয়। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা সময়মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌছাতে পারে না। এটা কোন অবস্থায় কাম্য নয়। তেমনি আবার ফুটপাতের হকারদের কারনে নারায়ণগঞ্জে ভ্যাট ট্যাক্স প্রদানকারী ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ একটি শিল্পনগরী এখানে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ গামেন্টস শ্রমিক রয়েছে। যারা ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করে তাদের চাহিদা মেটায়। সেই সাথে এতো গুলো মানুষ বেকার হয়ে পড়বে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন, সকল জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ সহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু সমাধানের মাধ্যমে আপনাদের পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই পর্যন্ত আপনাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। আমাকে সময় দিতে হবে। রাতারাতি কিছুই করা সম্ভব নয়। আপনারা আমাকে সময় দিলে সিটি করপোরেশনের মেয়র সহ সকলের সহযোগীতা নিয়ে আমি একটা স্থায়ী বন্দোবস্তের চেষ্টা করবো। সেই সময়টুকু আপনারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে জিয়া হলের ভেতরে দোকান বসাতে পারেন। পাশাপাশি আমি ইসলামী ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে জামতলা এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে আপনাদের বসার ব্যবস্থা করে দিবো। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাদের ঈদগাহের পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে।
এ সময় সকল হকার হৈচৈ করে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফুটপাতে বসার অনুমতি চেয়ে ফুটপাতে বসার দাবী রাখেন। পরিপ্রেক্ষিতে এমপি সেলিম ওসমান তাদের বলেন, যদি সিটি করপোরেশনের মেয়র তাদের ফুটপাতে বসার অনুমতি দেন তাহলে তার কোন আপত্তি নেই। হকারদের দাবীর বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে মেয়রের কাছে প্রেরণ করবেন। যদি মেয়র অনুমতি দেন তবেই বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তারা ফুটপাতে বসতে পারবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসনে সাজনু, সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, হকারদের নেতা আসাদ, রহিম মুন্সি সহ হকার নেতৃবৃন্দ।