সোনারগাঁয়ে অবরুদ্ধ হলো জেলা আ.লীগের হাই-বাদল

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪  ( সোনারগাঁও প্রতিনিধি ) : সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের ওটমা এলাকায় ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকালে ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু এবং এডভোকেট সামসুল ভূইয়ার সমাবেশে অংশ নিয়ে সমাবেশ করতে না পেরে কায়সার-কালাম সমর্থকদের হাতে অবাঞ্ছিত হয়ে ডা. বিরুর বাড়ীতে অবরুদ্ধ হয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদল।

এদিকে জামপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ, উপজেলা যুবলীগ ও অঙ্গসংগঠনের সমাবেশকে সফল করতে সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাহফুজুর রহমান কালাম ও মোশারফ হোসেনসহ উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জামপুরের বিভিন্ন স্পটে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ সফল করেন।

অন্যদিকে ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু এবং এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়ার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের একাংশের কিছু নেতাকর্মী নিয়ে জামপুরে একই দিনে সমাবেশ করার চেষ্টা করলে পুলিশ ওটমা বিদ্যালয়ে দুই পক্ষের সভা নিষিদ্ধ করে।

পরবর্তিতে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদলসহ ডা. বিরু এবং এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়ার নেতাকর্মীরা সমাবেশ না করতে পেরে ব্যার্থ হয়ে বিরুর বাড়িতে প্রায় ৪ঘন্টা অবরুদ্ধ হয়ে অবশেষে পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। কাচঁপুরে ডা.বিরুর সমর্থক সবুর খানের গাড়ী ভাংচুর এবং জামপুরে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের গাড়ীতে লাগানো ব্যানার ও ডা. বিরুর গাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায় কায়সার কালাম ও মাসুদ দুলাল সমর্থকরা।

অন্যদিকে সাবেক এমপি কায়সার, কালাম ও মোশারফ, দুলাল পন্থীদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জামপুরের সাইদুল মার্কেট, বস্তল, মিরেরটেক, নয়াপুর, ললাটি ও কাঁচপুর এলাকায় অবস্থান নিয়ে সফলভাবে  সমাবেশ করেন। নিজ বাড়ীর সামনে সমাবেশ না করতে না পেরে এক প্রকার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বিরু এবং এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়ার সমর্থকরা।

এ সময় কায়সার, কালাম ও মোশারফ সমর্থকরা সমাবেশে বক্তব্যকালে তারা বলে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের  ঐতিহ্যবাহী একটি জেলা হলো নারায়ণগঞ্জ। আর নারায়ণগঞ্জের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা হলো সোনারগাঁও। ঢাকা চট্টগ্রাম এবং ঢাকা সিলেট মহাসড়ক দুটি আমাদের এই সোনারগাঁও দিয়ে শুরু হয়। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যেকোন কর্মসূচী পালনে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের হাজার নেতাকর্মী সব সময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে।

ওয়ান ইলিভেনের সময় এবং আওয়ামীলীগের ক্লান্তিলগ্নে এই সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রয়াত আবুল হাসনাত, তার সুযোগ্য সন্তান সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন সহ হাজার হাজার নেতাকর্মী রাজপথে নেমে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে প্রতিষ্ঠা করতে সংগ্রাম করে গেছেন। সেদিন কোথায় ছিলো ডা. বিরু, ইঞ্জি: মাসুমের মতো হাইব্রিড কাউয়া নেতারা?

তারা রাজাকারের সন্তান রাজাকারের নাতি হয়ে বর্তমান স্বাধীনতার পক্ষের সরকার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কতিপয় বিপদগামী লোককে অবৈধ টাকার জোরে ক্রয় করে পদ কিনে রাতারাতি খোলস পাল্টে আওয়ামীলীগের নেতা হতে চায়। আমরা উপজেলা আওয়ামীলীগের সকল নেতাকর্মীরা এসব হাইব্রিড নেতাদের রাজাকারের বংশের উত্তরসূরিদের সোনারগাঁও থেকে অবাঞ্ছিত করলাম।

আমরা চাই সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে এবং সোনারগাঁওয়ে আওয়ামীলীগকে উজ্জীবিত রাখতে সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত, বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাহফুজুর রহমান কালাম, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন, সাবেক ছাত্রনেতা এএইচএম মাসুদ দুলালের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ,শ্রমিকলীগ সহ সকল অঙ্গ সংগঠনের প্রতিটি নেতাকর্মী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষে কাজ করবে। সব শেষ খবর অনুযায়ী কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতে এড়াতে এসব এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে বলে জানিয়ে সোনারগাঁও থানা পুলিশ।

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আহবায়ক কমিটিকে প্রত্যাখান করে তাদের প্রতিহতের ঘোষনা দেন সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল ও ড. সেলিনা আক্তার।

অপরদিকে, আহবায়ক কমিটিতে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া, ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু ও ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমসহ ৬ জন। আহবায়ক কমিটি ঘোষনার পর থেকেই কায়সার-কালাম সমর্থকরা ডা. বিরু-ইঞ্জি:মাসুম পক্ষকে প্রতিহতের ঘোষনা দিয়ে আসছে অনেক দিন ধরেই। এমনকি আহবায়ক কমিটির সদস্যদের যেখানে পাবে সেখানে প্রতিহত করবে তারা ঘোষনা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে ডা. বিরু ও ইঞ্জিনিয়ার মাসুম পন্থীদের অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে তাদের সমাবেশ করতে না দিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদলসহ ডা. বিরুর সমর্থকদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে বলে জানান কায়সার-কালাম সমর্থকরা।

add-content

আরও খবর

পঠিত