নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস নীলাকে একটি হত্যা মামলায় আদালতে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। আর এতে ফের আলোচনায় উঠে এসেছে নীলার নাম। মূলত নীলা আলোচিত সাত খুন মামলার ফাঁসির আসামি নূর হোসেনের বান্ধবী।
রোববার (২৪ মার্চ) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে মাদক ব্যবসায়ী খায়রুল ইসলাম জুয়েল হত্যা মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য মামলার তদন্তকারী অফিসার জেলা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. ছরোয়ার জাহান সরকার নীলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ মামলায় নীলা জামিনে রয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন আজিবপুর গ্রাম থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে মস্তক বিহীন একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করার পর জানতে পারে মরদেহটি নোয়াখালী জেলার মাসুমপুর গ্রামের ফিরোজ খানের ছেলে খায়রুল ইসলাম জুয়েলের (৩০)।
আদালত সূত্র জানায়, জুয়েল হত্যা মামলায় কিলার লঞ্চো সোহেল, কালা সোহাগ ও মনা ডাকাত নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তারা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। সেখানে তারা বলেছিলেন, মাদক ব্যবসার দেনা পাওনা নিয়ে নীলার সঙ্গে জুয়েলের বিরোধ দেখা দেয়। এতে নীলার নির্দেশে খায়রুল ইসলাম জুয়েলকে গলা কেটে হত্যার পর দেহ এক স্থানে ও মাথা আরেক স্থানে ফেলে দেন তারা।
এ ঘটনায় আদালতে পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রে নীলাসহ ২৫ জনের নাম থাকলেও মামলাটি সিআইডি তদন্ত করতে গিয়ে নীলাসহ ১৭ জনকে অব্যাহতির আবেদন করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন জেলা সিআইডির পরিদর্শক মো. নূরুন নবী। অব্যাহতি চাওয়া ১৭ জন আসামির মধ্যে ১৩ জনের নাম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রয়েছে।
এছাড়া সিআইডির অভিযোগপত্রে ২৫ জনের মধ্যে ৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে অধিকাংশ আসামিকে কেন অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা চার্জশিটে বিস্তারিত উল্লেখ করেননি তদন্তকারী কর্মকর্তা। তাই আদালত মনে করেছেন এ চার্জশিটটি স্পষ্ট নয় এবং দাখিলকৃত চার্জশিট সন্তোষজনক বলে প্রতীয়মান হয় না।
সূত্রে আরও জানান, আসামিদের জবানবন্দি ন্যায় বিচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হওয়ায় ২০১৬ সালের ২১ জুলাই নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য জেলা সিআইডিকে নির্দেশ দেন। আর সেই মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস নীলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি।