নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, কয়েক বছর পূর্বে লাঙ্গলবন্দ স্লান উৎসব চলাকালে একটি দুর্ঘটনায় ১০ জন মানুষের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লাঙ্গলবন্দকে তীর্থ স্থানের পাশাপাশি একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেন। ইতোমধ্যে উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে উন্নয়ন কাজ আটকে যাওয়ায় আজকে আমাদের আলোচনায় বসতে হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে লাঙ্গলবন্দ স্লান নিয়ে আমাদের আর আলোচনায় বসার প্রয়োজন পড়বে না। ওই বছর দুর্ঘটনাটি ঘটে ছিল একটি গুজবকে কেন্দ্র করে। তাই আপনাদের সকলকে সর্তক থাকতে হবে। কেউ যেন কোন অবস্থায় কোন গুজব ছড়াতে না পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
৩০শে মার্চ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন, লাঙ্গলবন্দ স্লান উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু নেত্রী বৃন্দ সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে আসন্ন স্লান উৎসব সুষ্ঠু ভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে আলোচনা সভায় উপদেষ্টা হিসেবে বক্তব্যে তিনি এসকল কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, লাঙ্গলবন্দ স্লান দেশের বাইরে থেকেও অনেক পূর্ণ্যার্থী আসে। হয়তো এই বছরটা একটি কষ্ট হবে। কিন্তু আমাদের পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত দক্ষ। সকলে মিলে তাদেরকে সহযোগীতা করলে আশা করি তেমন কোন সমস্যা থাকবে না।
এদিকে, করোনা মহামারীর নিষেধাজ্ঞার কারণে ২ বছর পর এবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী স্লান আগামী ৮ই এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টা থেকে ৯ই এপ্রিল রাত ১১টা পর্যন্ত পূর্ণ্যস্লান অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্লান উৎসবকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া উৎসবে আগত পূর্ণার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সুষ্ঠুভাবে যাতায়াতের জন্য উৎসব স্থলে মেলা সম্পূর্ন ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যাতায়াতের রাস্তার দু পাশে কোন প্রকার দোকানপাট না বসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়াও সেবা ক্যাম্প গুলো একটি নিদিষ্ট নিয়মের ভেতরে থেকে পরিচালনা করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে স্থানীয় অন্যান্য জনপ্রতিনিধি এবং হিন্দু নেত্রীবৃন্দরা পুণরায় আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উৎসব স্থলে নিরাপত্তার স্বার্থে বসানো হবে সিসি টিভি ক্যামেরা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে থাকবে পুলিশ আনসার সহ অন্যান্য সদস্যরাও। এছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং হিন্দু সংগঠন গুলোর পক্ষ থেকে নিজস্ব সেচ্ছাসেবী নিয়োগ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
আলোচনা সভায় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ এর সভাপতিত্বে এসময় ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান এম.এ রশিদ, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কুদরত-এ-খোদা, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা লাঙ্গলবন্দ স্লান উদযাপন পরিষদের সভাপতি সরোজ কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুজিত সাহা, বন্দর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি দীপক কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার, মহানগরের সভাপতি অরুন দাস, সাধারণ সম্পাদক উত্তম সাহা, হিন্দু কল্যাণ স্ট্রাটের ট্রাস্টি পরিতোষ কান্তি সাহা, লাঙ্গলবন্দ স্লান উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি বাসুদেব চক্রবর্তী, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।