নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : সচিবকাণ্ডে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ফি বাবদ ৩৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অবশেষে ফেঁসে গেলেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদ। জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাঁর ও বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক দুই সচিবের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মনোয়ারুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সচিব শামিম মিয়া ও মোহাম্মদ ইউসুফ। শামিম মিয়া বর্তমানে রূপগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অভিযুক্ত ৩ জন নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তারা অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ইউপি’র জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ফি বাবদ আদায়কৃত ৩৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও তারা জাল জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার ও সংরক্ষণ, অস্তিত্বহীন ব্যক্তির নামে জন্ম নিবন্ধন আইডি তৈরি করেন যা দণ্ডবিধির ধারা অনুযায়ী দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদ বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হলে সচিবদের বিশ্বাস করতে হয়। সচিবদের জালিয়াতির কারণে আমি ফেঁসে গেছি। আমার ভুল হয়েছে তারা যেসব কাগজপত্র দেখিয়েছে, সেগুলো আমি সরাসরি যাচাই করিনি। অনলাইনে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের পাসওয়ার্ড সচিবদের কাছে সংরক্ষিত থাকে। তারা আমার বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে আমার স্বাক্ষর জাল করে কিংবা স্বাক্ষর ছাড়া জাল জন্ম নিবন্ধন বানিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি মিথ্যা কথা বলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার মানুষ না, আমি কারো হক নষ্ট করে অর্থ উপার্জন করার মত মানুষ না, আমি জীবনে কাউকে এক টাকা ঠকিয়েছি এমন কোন প্রমাণ কেউ দিতে পারবেন না। ৩৩ লক্ষ টাকা আমার পারিবারিক ঐতিহ্য আর সম্মানের প্রেক্ষাপটে খুবই সামান্য, আমার কথা না হয় বাদই দিলাম। বাবার কাছ থেকে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সামান্য জমি বিক্রি করে দিলেই ব্যবস্থা হয়ে যেত। এতে করে প্রকৃত অপরাধী, দুর্নীতিবাজ, প্রতারক, বিশ্বাসঘাতক সচিবরা পার পেয়ে যেত।
তিনি আরও বলেন, ইউপি সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্ব পালনকালেও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য বরখাস্ত হয়েছিলেন এবং সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্বে অবহেলার জন্য তাকে শোকজ করা হয়েছিলো।