নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে দুর্ঘটনাকবিলত কারণে ইদ্রিস আলী নামক এক ইজিবাইক চালকের হাত পঁচন ধরেছিল। চিকৎসক জানিয়েছিলেন, কেটে ফেলা ছাড়া উপায় নেই। চিকিৎসকের পরামর্শে হাত কেটে ফেলারও উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। তবে, এ কথা জানতে পেরে চিকিৎস্বার্থে ইদ্রিস আলীর দিকে সাহায্যের হাত এগিয়ে দেন জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতা কাউসার আহম্মেদ পলাশ।
জানা গেছে, এক বছর আগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার দাপা এলাকায় ইজিবাইকে করে ৪ থেকে ৫ জনের সঙ্গে ইদ্রিস আলী পাগলাস্থ বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেল ইজিবাইককে ধাক্কা দিলে তা উল্টে যায়। এতে মারাত্মক আহত হন দিনমজুর ইদ্রিস। এ সময় তার ডানহাতটি গুরুতর জখম হয় এবং ভেঙে যায়। আহতাবস্থায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এতেও পুরোপুরি সুস্থ হননি। পরে ইদ্রিস আলী নারায়ণগঞ্জের হাড়ভাঙা চিকিৎসালয়ে বেশ কয়েক মাস হাতের চিকিৎসা করান। যখন সেখানেও তিনি সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখেননি, তখনই তিনি তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে চলে যান। সেখানে গিয়ে গ্রাম্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে তিনি তার হাতের চিকিৎসা করান। কিন্তু না, এতো দিনে তার ডান হাতটিতে পচন শুরু হয়ে গেছে। শুরু হয় পচন ধরা হাতে প্রচণ্ড ব্যথা। অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে তিনি জীবনযাপন করা শুরু করেন। হাতটি কেটে ফেলার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থও ছিল না তার কাছে।
ইদ্রিস আলীর মানবেতর জীবন যাপন ও তার কষ্টের কথা জানতে পেরেছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউছার আহম্মেদ পলাশ। তিনি অসহায় ইদ্রিসের কথা শুনে চিকিৎসার উদ্যোগ নেন। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আহত ইদ্রিসের পঁচন ধরা হাতটি রক্ষার জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করেন।
আহত ইদ্রিস আলী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ফেরেশতা আছে হুনছি, কিন্তু বাস্তবে শ্রমিক নেতা পলাশ ফেরেস্তা রূপেই আমার হাতটি কেটে ফেলা থেকে রক্ষা করেন। আল্লাহ আমারে সুস্থ করবেন কিন্তু ওসিলা হয়েছেন তিনি। আমার ৫ সন্তানের দিকে তাকাইয়া আল্লাহ যেনো হাতটিকে সুস্থ করে দেন।
এ ব্যাপারে কাউছার আহম্মেদ পলাশ বলেন, মানুষ মানুষের জন্য। কাউকে সাহায্য সহযোগিতা করলে সৃষ্টিকর্তা খুশি হন। সেদিক লক্ষ্য করেই তার চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। জানিনা কতটুকু করতে পেরেছি। আমরা নেতারা মঞ্চে বক্তৃতায় অনেক কথাই বলি। কিন্তু সাধারণ মানুষের পাশে কতটুকু দাঁড়াতে পারি? তিনি আরও বলেন, কাউকে সহযোগিতা করার বিষয়টি প্রচারের বিষয় না, এটা পরকালের চিন্তা করেই সবার অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
এ ব্যাপারে চিকিৎসক ডা. সোহেলুর রহমান বলেন, ইদ্রিস আলীর হাতের হাড়গুলোর অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। প্রথমে মনে করেছিলাম তার হাতটি কেটে ফেলতে হবে। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ঢাকাস্থ বাংলামটর এলাকার পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে প্রথমে ভর্তি করানো হয়। এরপর তার হাতে সফল অপারেশন করা হয়। আশা করি আল্লাহর রহমতে তিনি সুস্থ হয়ে হয়ে উঠবেন।