নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ শহরে অভিযান চালিয়ে জেএমবির দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক ওরফে বাপ্পী ওরফে সাকিব ওরফে নাজমুস সাকিবকে গ্রেফতার করেছে র্যাব । শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরের ১নং লঞ্চ ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই, লিফলেট, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল ও ১টি চাপাতি উদ্ধার করা হয়। শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীর র্যাব-১১ এর সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল কাজী শামশের উদ্দিন এ তথ্য জানান।
র্যাব অধিনায়ক আরো জানান, তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক ওরফে বাপ্পী ওরফে সাকিব ওরফে নাজমুস সাকিব ২০১১ সালে আহসান উল্লাহ ইউনির্ভাসিটি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে বিবিএ পাস করেন। ২০১৩ সালে এমবিএতে অধ্যায়নরত সময় জসিম উদ্দিন রাহমানির বছিলা মসজিদে বয়ান শুনতে যেতেন। জসিম উদ্দিন রহমানির বয়ানের মাধ্যমে তার মাঝে উগ্রবাদী চেতনা জাগ্রত হয়। ওই সময় একই মসজিদে জেএমবি নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। আব্দুল্লাহ আল মামুন তৎকালীন জেএমবির দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান ছিলেন। তার মাধ্যমে ২০১৩ সালে সাকিব জেএমবিতে যোগদান করে।
২০১৬ সালে বাগেরহাট জেলা পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে আব্দুল্লাহ আল মামুন নিহত হলে তার স্থলে সাকিব দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। সাকিব দায়িত্ব পাওয়ার পর খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পিরোজপুর, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জেএমবির কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর তৎপরতা অব্যহত রাখেন। এর আগে গ্রেফতার মাহবুবুর রহমান উকিল, কাইয়ুম হাওলাদার, কাউছার বিন হালিম, হামদান বিন ফিরোজ, মামদুদুর রহমান মিশু, কামরুল, ইউনুছসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ৫০ জন সদস্য সাকিবের মাধ্যমে জেএমবিতে যোগ দেয় বলেও উল্লেখ করেন সিও। যাদের অধিকাংশ সদস্যকে বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করে।
তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক ওরফে বাপ্পী ওরফে সাকিব ওরফে নাজমুস সাকিব প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানায়, প্রথম পর্যায়ে তিনি জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য ছিলেন। ২০১৭ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা শুরু হলে সাকিব ঢাকায় এসে আত্মগোপন করেন। তার দায়িত্বপূর্ণ এলাকা দক্ষিণাঞ্চলের পাশাপাশি ঢাকা ও এর আশপাশের জেলাগুলোতে জেএমবির দাওয়াতি কাজে মনোনিবেশ করে সম্পূর্ণ নতুনভাবে সদস্য সংগ্রহ করে সংগঠনকে পূণর্গঠনের চেষ্টা করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে সাকিব আরো জানান, তিনি জেএমবিকে পুনর্গঠিত করার জন্য অস্ত্র সংগ্রহের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন এবং জামালপুর জেলার যমুনা নদীর চরে জেএমবির নতুন ১টি প্রশিক্ষণ শিবির খোলার কথা ছিল।
তার বিরুদ্ধে বাগেরহাটে কচুয়া থানায় ১টি, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় ১টি, নরসিংদী সদর থানায় ১টি ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা রয়েছে।